E-Paper

গ্রামের ফুটবল মাঠেও কদর বিদেশি খেলোয়াড়দের

মৌসুনি দ্বীপের বাঘডাঙা খাসমহল মাঠে ২২ নভেম্বর শুরু হয়েছে নাইন সাইড নকআউট ফুটবল টুর্নামেন্ট।

সমরেশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:৫২
মৌসুনী দ্বীপে ফুটবল খেলছেন বিদেশি খেলোয়াড়েরা।

মৌসুনী দ্বীপে ফুটবল খেলছেন বিদেশি খেলোয়াড়েরা। — নিজস্ব চিত্র।

দর্শক টানতে গ্রামের টুর্নামেন্টেও এখন দেখা যাচ্ছে বিদেশি ফুটবলারদের। গ্রামের মাঠেও এখন ফুটবল মানে আলোর ঝলকানি, চিৎকার, ডিজে’র তালে নাচ। বিদেশি স্ট্রাইকারের পায়ে গোল হলে তো আর কথাই নেই। ম্যাচ পিছু পাঁচ হাজার থেকে বারো হাজার টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিকে আইভরি কোস্ট, সেনেগাল, ঘানা, নাইজ়েরিয়া, লাইবেরিয়া থেকে আফ্রিকান ফুটবলার এনে দল সাজাচ্ছেন স্থানীয় ক্লাব কর্তারা। আর তাঁদের দেখতে মাঠে ভিড় উপচে পড়ছে।

মৌসুনি দ্বীপের বাঘডাঙা খাসমহল মাঠে ২২ নভেম্বর শুরু হয়েছে নাইন সাইড নকআউট ফুটবল টুর্নামেন্ট। মহিলাদের প্রীতি ম্যাচ দিয়ে সূচনা হয়। উদ্বোধন করেছেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা, উপস্থিত ছিলেন মথুরাপুরের সাংসদ বাপি হালদার-সহ অনেকে। মোট ১৬টি ক্লাব অংশ নিয়েছে এই প্রতিযোগিতায়। আয়োজক মৌসুনি বন্ধুমহল ক্লাব। খেলা শেষ হবে সোমবার মধ্যরাতে।

কলকাতা ময়দানে বড় ক্লাবগুলিতে বিদেশি খেলোয়াড়দের আশির দশক থেকে রমরমা ছিল। ছোট দলগুলিতেও দু-তিন জন বিদেশি খেলোয়াড় নজরে পড়বে। সেই রীতি এখম পাড়া ফুটবলেও। গ্রামের মাঠেও দেখা যাচ্ছে তাঁদের। দর্শকদের দাবি, ফুটবল পায়ে মাঠে স্থানীয় খেলোয়াড়দের দমিয়ে রাখতে তুখোড় দীর্ঘ চেহারার এই বিদেশি খেলোয়াড়েরা।

মৌসুনি বন্ধুমহল ক্লাবের সভাপতি চয়ন ভট্টাচার্য বলেন,‘‘বিদেশি খেলোয়াড় আসায় মাঠে দর্শক সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে, আগের থেকে প্রায় দ্বিগুণ।’’ ফুটবল ম্যাচের আয়োজকদের বক্তব্য, বিদেশিদের আনার মূল দায়িত্বে থাকেন কলকাতা লিগে খেলা কয়েক জন প্রাক্তন ফুটবলার ও এজেন্ট। বেশিরভাগ বিদেশি খেলোয়াড়েরই নির্দিষ্ট কোনও দল নেই, ম্যাচ পিছু পারিশ্রমিকেই খেলেন তাঁরা। নিয়মকানুনের কড়াকড়িতে কলকাতা লিগে নাম থাকা অনেকেই আবার নাম পরিবর্তন করে খেলতে আসেন পাড়া ফুটবলে এমনটাই দাবি আয়োজকদের একজনের। পাতিবুনিয়া রয়্যাল কিং’স -এর সভাপতি মাধবচন্দ্র লায়ার কথায়, ‘‘আমরা এবার তিন জন বিদেশি খেলোয়াড় নিয়ে এসেছি। ক্লাব সদস্যদের উৎসাহেই সিদ্ধান্ত। খরচও হয়, সবাই মিলে চাঁদা তুলেই ব্যবস্থা করতে হয়।’’

স্থানীয় কয়েকটি ক্লাব জানিয়েছে, বিদেশিদের আনতে ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। তবে সব বিদেশির খেলার মান সমান নয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আয়োজক বলেন, অনেক সময় দেখা যায় স্থানীয় খেলোয়াড়দের থেকেও খারাপ মানের বিদেশি খেলোয়াড় মাঠে নেমেছেন। কিন্তু দর্শকের চাহিদা মেটাতে ভাড়া করতেই হচ্ছে। গ্রামবাংলার ফুটবলে বিদেশিদের ঢুকিয়ে খেলা জমছে ঠিকই। তবে প্রশ্ন উঠছে এতে কি স্থানীয় প্রতিভার সুযোগ কমছে, এই প্রবণতা শেষ পর্যন্ত বদলে দেবে না তো গ্রামের ফুটবল মাঠের চরিত্রকে?

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mousuni Island

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy