E-Paper

জেলার এ বার কচ্ছপের ‘হোম ডেলিভারি’ শুরু

ভিন্ রাজ্য থেকে মাছের গাড়িতে লুকিয়ে কচ্ছপ পাচার হচ্ছে। পাইকারি বাজারে বিক্রিও হচ্ছে লুকিয়ে চুরিয়ে।

ঋষি চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:২৭
দত্তপুকুরের বাজারে চোরাগোপ্তা বিক্রি হচ্ছে কচ্ছপ।

দত্তপুকুরের বাজারে চোরাগোপ্তা বিক্রি হচ্ছে কচ্ছপ। নিজস্ব চিত্র।

শীতের শুরুতেই বাজারে মিলছে কচ্ছপের মাংস। বেআইনি জানা সত্ত্বেও অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ‘হোম ডেলিভারি’ নিচ্ছেন ক্রেতারা। বারাসত পুলিশ জেলার আমডাঙা, দত্তপুকুর, দেগঙ্গা ও বারাসত থানা এলাকায় কচ্ছপের এই বেআইনি কারবার শুরু হয়েছে।

জানা গিয়েছে, ভিন্ রাজ্য থেকে মাছের গাড়িতে লুকিয়ে কচ্ছপ পাচার হচ্ছে। পাইকারি বাজারে বিক্রিও হচ্ছে লুকিয়ে চুরিয়ে। তবে ক্রেতারা পছন্দ করছেন বাড়িতে এসে কচ্ছপের মাংস কেটে দিয়ে যাওয়াতেই। সেই মতো এই বেআইনি মাংসের কারবারিরা ব্যাগের মধ্যে চাহিদা মতো কচ্ছপ ও ছুরি নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন ক্রেতার বাড়িতে। সেখানেই ওজন করে কেটেকুটে টাকা বুঝে নিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই পুলিশ ও বন দফতরের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন সচেতন নাগরিকদের একাংশ।

বন দফতর সূত্রে জানানো হয়, ভারতে বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন ১৯৭২ অনুযায়ী কচ্ছপ কেনাবেচা করা দণ্ডনীয় অপরাধ। এই ধরনের কার্যকলাপ আটকাতে শীতের মরসুম ছাড়াও সারা বছর বন বিভাগের কর্মীরা সজাগ থাকেন। প্রতি বছর অসংখ্য কচ্ছপ বিভিন্ন বাজারে ও পাচার হওয়ার সময়ে ধরা পড়ে। পাইকারি বাজারগুলিতে মাছ বিক্রেতাদের অনেকে জানান, ওড়িশা থেকে মাছের গাড়িতে লুকিয়ে আনা হয় কচ্ছপ। উত্তর ২৪ পরগনার খড়িবাড়ি, হাড়োয়া খাল, আমিনপুর ও নীলগঞ্জ হাটে প্রথমে সেগুলি পেটি বোঝাই হয়ে পৌঁছয়। সেখান থেকে আশপাশের বিভিন্ন এলাকার বাজারে। বহু ক্রেতা মাছের দোকানে গিয়ে কচ্ছপের খোঁজ করেন। তখনই ফোন নম্বর নিয়ে রাখা হয় ক্রেতার। বেআইনি কচ্ছপ কারবারিরা পরে ফোন করে কচ্ছপের ওজন এবং দাম জানিয়ে দেন। ক্রেতা রাজি হলেই খুচরো বিক্রেতারা চাহিদা মতো কচ্ছপ নিয়ে বাড়িতে পৌঁছে যায়।

এক বিক্রেতা বলেন, ‘‘মাছ বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে ফিসফাস আর ফোন নম্বর দেওয়া নেওয়া চলে কচ্ছপের মাংস কেনার জন্য। এলাকা এবং ওজনের ভিত্তিতে ৮০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে কচ্ছপ। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে চাহিদা বেশি বাড়ে। চলে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। গত বারের তুলনায় কেজিতে একশো টাকা দাম বেড়েছে এ বার। দেশি অর্থাৎ স্থানীয় খাল জলাশয়ের কচ্ছপের দাম বেশি। ওড়িশা থেকে আসা সামুদ্রিক কচ্ছপের দাম তুলনায় কম।"

বন বিভাগের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার আধিকারিক কমল সরকার বলেন, "আমাদের নেটওয়ার্ক সজাগ আছে। কচ্ছপ কারবারিদের উপরে নজর রাখা হয় সব সময়ে। শুধু ধরপাকড়েই এই সমস্যা মিটবে না। মানুষকেও একটু সচেতন হতে হবে। কচ্ছপ বাঁচাতে হলে তার মাংস খাওয়া বন্ধ করতে হবে। বিক্রেতাদের যদি ধরিয়ে দেন সচেতন নাগরিকেরা, তবেই কচ্ছপের এই বেআইনি ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ হবে। প্রকাশ্যে কেউ বিক্রি করছে কি না, সে বিষয়ে ইতিমধ্যে নজরদারি শুরু হয়েছে।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Barasat

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy