Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘সুন্দরী’দের সঙ্গে ‘বন্ধুত্ব’-এর টোপ, প্রতারণার অভিযোগে ধৃত তিন তরুণী

‘বন্ধুত্বের’ টোপ দিয়ে  সুন্দরী তরুণীদের সঙ্গে ‘বন্ধুত্ব’ করিয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়া হত। শুক্রবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ওই চক্রের তিন তরুণীকে গ্রেফতার করল। 

ধৃত: গোবরডাঙায় তিন তরুণী। —নিজস্ব চিত্র

ধৃত: গোবরডাঙায় তিন তরুণী। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
গোবরডাঙা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৯ ০১:৩২
Share: Save:

‘বন্ধুত্বের’ টোপ দিয়ে সুন্দরী তরুণীদের সঙ্গে ‘বন্ধুত্ব’ করিয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়া হত। শুক্রবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ওই চক্রের তিন তরুণীকে গ্রেফতার করল।

গোবরডাঙা থানার মছলন্দপুর এলাকার ঘটনা। ধৃতদের শনিবার বারাসত জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম রিঙ্কু দাস, প্রিয়া বসাক ও সুস্মিতা সিংহ। বছর চৌত্রিশের রিঙ্কুর বাড়ি স্বরূপনগর থানার চারঘাটে। প্রিয়ার বাড়ি বারাসতে। বছর চব্বিশের সুস্মিতা থাকেন হাবড়ায়। তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ আর্থিক প্রতারণার মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। ওই তিন তরুণী বহু মানুষকে ফাঁদে ফেলে টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মছলন্দুপুরের সাদপুর এলাকায় অনিমা মিত্র নামে এক মহিলার বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন ধৃতেরা। প্রতি মাসে ৪ হাজার টাকা ভাড়াও গুনতেন ছিল। অনিমার ছেলে স্বাধীন গোবরডাঙা থানায় সকলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্বাধীন বলেন, ‘‘পাঁচ মাস আগে দু’টি ঘর ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। চুক্তিপত্রে লিখিত ভাবে বলা আছে, দু’টি বেসরকারি সংস্থার ইলেকট্রিক রিপিয়ারিং সেন্টারের জন্য বাড়ি ভাড়া দেওয়া হচ্ছে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, রিপিয়ারিং সেন্টারে কিছু মালপত্র প্রথমে আনা হয়। কিন্তু মাসখানেক আগে বাড়িতে অপরিচিত মেয়েদের আনাগোনা দেখে সন্দেহ হয় বাড়ির মালিকের। মেয়েদের গতিবিধি নজর রাখতে শুরু করেন তাঁরা। স্বাধীন পুলিুশকে জানিয়েছেন, মেয়েরা ফোনে সন্দেহজনক কথাবার্তা বলতে শোনেন। বিষয়টি তিনি পুলিশকে জানান। তদন্তে নেমে পুলিশ শনিবার বিকেলে ওই বাড়িতে অভিযান চালায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিয়ালদহ ও হাওড়ার মতো স্টেশন, বিভিন্ন লোকাল ট্রেনে বান্ধবী পাইয়ে দেওয়ার নাম করে পোস্টার দেওয়া হত। সংবাদপত্রেও বিজ্ঞাপন দেওয়া হত। বিভিন্ন এলাকায় বিজ্ঞাপনের জন্য এজেন্ট নিয়োগ করা হয়েছিল। তারাও মেয়েদের নম্বর ছড়িয়ে দিত বিভিন্ন জায়গায়। কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন সোশ্যাল সাইট থেকেও ফোন নম্বর সংগ্রহ করে ফোন করত তরুণীরা। ‘বন্ধুত্বের’ টোপ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ নেওয়া হত ১২০০ টাকা। তারপরে টাকার অঙ্ক ক্রমশ বাড়তে থাকত বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। শুধু তাই নয়, অনেককে ব্ল্যাকমেলও করা হত বলেও অভিযোগ।

সাদপুরের ওই বাড়ি থেকে প্রতারিত বহু মানুষের নাম-ঠিকানা পেয়েছে পুলিশ। তা থেকেই বোঝা গিয়েছে এই প্রতারণা চক্রের শিকার হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। সাতটি ফোন ও সাতটি সিম কার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। চক্রের মাথায় আরও অনেকে থাকতে পারে বলে অনুমান তদন্তকারীদের। তাদের খোঁজ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Police Women Trafficking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE