Advertisement
০২ মে ২০২৪

আবেদনেও মিলছে না লাইসেন্স

হোটেল রয়েছে কিন্তু লাইসেন্স নেই। অভিযোগ, বার বার আবেদন করেও লাইসেন্স মিলছে না। এর ফলে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনই জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যটন সংস্থাগুলির গাঁটছড়া বাঁধতে পারছে না হোটেলগুলি।

শান্তশ্রী মজুমদার
বকখালি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৩:১৬
Share: Save:

হোটেল রয়েছে কিন্তু লাইসেন্স নেই।

অভিযোগ, বার বার আবেদন করেও লাইসেন্স মিলছে না। এর ফলে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনই জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যটন সংস্থাগুলির গাঁটছড়া বাঁধতে পারছে না হোটেলগুলি। সমস্যাটি বকখালির। যদিও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পিবি সালিমের দাবি, পরিবেশ আদালতের নির্দেশের কারণেই লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ করা হয়।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হোটেল চালানোর মূল অনুমোদন হিসেবে জেলাশাসকের দফতর ‘সরাই লাইসেন্স’ দেয়। সেই লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রেই তৈরি হয়েছে সমস্যা। হোটেল মালিকদের অভিযোগ, ১১ বছর আগে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করলেও মেলেনি, এ রকম হোটেলও রয়েছে বকখালিতে।

আবেদনের পরে হোটেলগুলিতে প্রাথমিক পরিদর্শনও হয় না। বছর কয়েক আগে একবার পরিদর্শনের চিঠিও এলেও তারপরে কাজ এগোয়নি। বকখালিতে সব মিলিয়ে প্রায় ৭০টি হোটেল রয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ৮-৯টি হোটেলের প্রয়োজনীয় লাইসেন্স রয়েছে।বকখালি হোটেল মালিকদের সংগঠনের নেতা অপূর্ব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, ‘‘আমাদের পরিবেশের ছাড়পত্র রয়েছে। লাইসেন্সের জন্য বার বার আবেদন করেছি। সেটি মনে করানোর জন্য আবার চিঠি দিয়েছি। তা হলে কেন আমরা এই লাইসেন্স পাব না?’’

বকখালির হোটেল মালিকদের ক্ষোভ, সরকারি লাইসেন্স না থাকায় তাঁরা ব্যবসা করতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়ছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা বকখালিতে ভিন দেশ থেকে কিছু পর্যটক আনতে চাইলেও সরকারি লাইসেন্স না থাকায় ভেস্তে যায় সেই উদ্যোগ।

২০০৪ সাল থেকে বিভিন্ন হোটেলকে ‘ইনসেনটিভ প্রকল্পে’র আওতায় এনেছে সরকার। কিন্তু বকখালির হোটেলগুলি ‘সরাই লাইসেন্স’ না থাকার জন্য সেই সুবিধা পায়নি। এছাড়াও লাইসেন্স না থাকার জন্য হোটেলে থাকাকালীন কোনও পর্যটকের দুর্ঘটনা ঘটলেও তিনি তিনি বিমা অথবা ক্ষতিপূরণের দাবি জানাতে পারবেন না।

লাইসেন্স পেলে হোটেলগুলির যেমন লাভ, তেমনই লাভ প্রশাসনের। কারণ হোটেল মালিকদের হিসেব অনুযায়ী, লাইসেন্স থাকলে প্রতি বছর বকখালির সব ক’টি হোটেল মিলিয়ে কমবেশি ১৪ লক্ষ টাকা রাজস্ব জমা হওয়ার কথা। এখন বকখালির বেশিরভাগ হোটেলগুলিকেই শুধুমাত্র পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির কর দিতে হয়। উপকূল নিয়ন্ত্রণ আইনে অনুসারে, জোয়ারের জল যে সীমা পর্যন্ত ওঠে, তার থেকে ৫০০ মিটার পর্যন্ত এলাকায় কোনও স্থায়ী কংক্রিটের নির্মাণ করা যায় না। বকখালির বেশিরভাগ হোটেলই সেই সীমারেখার বাইরে। পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত জানান, হোটেল চালানোর জন্য পরিবেশ দফতর এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ থেকে সুনির্দিষ্ট ছাড়পত্র নিতেই হবে। তিনি বলেন, ‘‘সমুদ্র তীরবর্তী পুরো এলাকা উপকূল নিয়ন্ত্রণ আইনের মধ্যে পড়ে না। তার একটা সীমারেখা থাকে।’’ বকখালির হোটেল মালিকদের দাবি, বেশিরভাগ হোটেলের ২০১৮ পর্যন্ত চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেট রয়েছে। কিন্তু তারপরেও লাইসেন্স মিলছে না। জেলাশাসক বলেন, ‘‘সব কাগজপত্র ঠিক থাকলে লাইসেন্স পেতে কোনও অসুবিধা নেই। পরিবেশ আদালত সুন্দরবনের বেশিরভাগ এলাকাকেই জীববৈচিত্র্যের জন্য সংবেদনশীল বলে উল্লেখ করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hotel License
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE