Advertisement
০৬ মে ২০২৪

স্ত্রীকে খুন, গণপিটুনিতে মৃত্যু স্বামীর

স্ত্রীকে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে স্বামী, এই অভিযোগে স্বামীকেও পিটিয়ে মারল জনতা। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার মাগুরখালি এলাকায়।

ভিড়: নিহতের বাড়ির সামনে। নিজস্ব চিত্র

ভিড়: নিহতের বাড়ির সামনে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
অশোকনগর শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৭ ০১:০২
Share: Save:

স্ত্রীকে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে স্বামী, এই অভিযোগে স্বামীকেও পিটিয়ে মারল জনতা। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার মাগুরখালি এলাকায়।

পুলিশ জানায়, নিহত বধূর নাম অর্চনা মণ্ডল (৩৪)। নদিয়ার বাসিন্দা নিমাই মণ্ডলের (৩৮) সঙ্গে বেশ কিছু বছর আগে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। দুই ছেলেমেয়ে ওই দম্পতির। নিমাই বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই ঘরজামাই থাকত। কাজ করত অশোকনগর স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের অস্থায়ী কর্মী হিসাবে। শ্বশুরের আড়াই কাঠা জমির উপরে তার নজর ছিল। ওই জমি নিজের নামে লিখিয়ে দিতে হবে, এই দাবিতে স্ত্রীর উপরে সে অত্যাচার করত বলেও অভিযোগ।

জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শ্বশুরের সম্পত্তির লোভেই নিমাই স্ত্রীকে পুড়িয়ে মেরেছে করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। দু’টি আলাদা খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ শনিবার দুপুরে অর্চনাদের বাড়িতে যান বিধায়ক ধীমান রায় এবং অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার পুরপ্রধান প্রবোধ সরকার। ধীমানবাবু বলেন, ‘‘নিমাই স্ত্রীকে মারধর করত বলে শুনেছিলাম। বার দু’য়েক বারণও করি। কিন্তু নিজেকে শোধরায়নি।’’

অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধ্যায় মদ্যপ অবস্থায় শ্বশুর গদাইবাবুকে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য হুজ্জুত শুরু করে নিমাই। ঘরে ঢুকে স্ত্রীকেও মারধর করে। অর্চনা নিরুপায় হয়ে বাবাকে অনুরোধ করেন, জমি নিমাইয়ের নামে লিখে দিয়ে ঝামেলা মেটাতে। গদাইবাবু জানান, জমি রেজিস্ট্রি করার টাকা নেই। ওই টাকা নিমাই জোগাড় করলে তিনি সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি।

তখনকার মতো ঝামেলা মেটে। রাত ৯টা নাগাদ গদাইবাবুর এক আত্মীয়া দেখতে পান, অচর্নার ঘর থেকে আগুনের হল্কা বেরোচ্ছে। তিনি চিৎকার করে লোকজনকে ডাকেন। গদাইবাবু বলেন, ‘‘গিয়ে দেখি, মেয়েটা দাউ দাউ করে পুড়ছে। নিমাই পাশ কাটিয়ে পালানোর চেষ্টা করে।’’

গ্রামের লোকজন নিমাইকে ধরে ফেলে মারধর শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। অর্চনাকেও নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে। চিকিৎসকেরা ওই বধূকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওই রাতেই বারাসত জেলা হাসপাতালে মারা যায় নিমাই।

গদাইবাবু বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে থানায় জামাইয়ের নামে অভিযোগ করতে গিয়েছিলাম। মেয়েই ফিরিয়ে আনল।’’ কন্যাহারা বাবার আক্ষেপ, ‘‘সে দিন পুলিশকে সব খুলে বললে হয় তো এমন দিন দেখতে হতো না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Husband wife murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE