E-Paper

চুরি হয়ে যাচ্ছে নদী, অভিযোগ

প্রবীন বাসিন্দারা জানালেন, একটা সময় ছিল, এলাকার জল নিকাশির মাধ্যম ছিল এই নদী। বর্ষার জমা জল নদী হয়ে বেরিয়ে যেত।

সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৫ ০৯:২৫
নদী দখল করে এমন নির্মাণ নিয়েই উঠছে অভিযোগ।

নদী দখল করে এমন নির্মাণ নিয়েই উঠছে অভিযোগ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

প্রকাশ্যেই নদী দখল করে একের পর এক গড়ে উঠেছে নির্মাণ। অভিযোগ, বনগাঁ মহকুমায় গড়াইল বা গড়ালি নদীর জমি দখল করে দীর্ঘদিন ধরে এই বেআইনি কাজ চললেও এই বিষয়ে প্রশাসন উদাসীন। যাঁরা বেআইনি নির্মাণ কাজ করেছেন তাঁরা সরকারি অনুমতির ধারও ধারেননি। এর পিছনে রাজনৈতিক মদতের অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।

বনগাঁ ব্লকের আকাইপুর পঞ্চায়েতের মাটিহারা এলাকায় নুড়িতলা বাজারে গড়ালি সেতুর উপরে দাঁড়ালেই দেখা যায় নদীর মধ্যে গড়ে উঠেছে একের পর এক নির্মাণ। সেতুর দু'পাশে কম পক্ষে তিরিশটি এমন নির্মাণ চোখে পড়বে। নদীর মধ্যে গজিয়ে ওঠা চায়ের দোকানদার বলেন, ‘‘নদীর উপরে নির্মাণ কাজে কেউ তো নিষেধ করেনি। তাই দোকান করেছি।’’ স্থানীয় বাসিন্দা নওশাদ মণ্ডল জানান, ছোটবেলায় এই নদীতে তাঁরা স্নান করতেন, মাছ ধরেছেন। এক সময়ে নৌকোও চলত। জলপথেই যাতায়াত করতেন মানুষজন। মিজানুর মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির অভিযোগ, ‘‘নদীর ধারে যাঁদের জমি ছিল, অনেকে সেই জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। যাঁরা জমি কিনেছেন, তাঁরা নির্মাণের সময়ে কিছুটা অংশ নদীর মধ্যে এগিয়ে নিয়েছেন।’’

প্রবীন বাসিন্দারা জানালেন, একটা সময় ছিল, এলাকার জল নিকাশির মাধ্যম ছিল এই নদী। বর্ষার জমা জল নদী হয়ে বেরিয়ে যেত। চাষিরা নদীর জল সেচের কাজে ব্যবহার করতেন। সেই নদী এখন অনেকাংশেই বিলুপ্ত। আকাইপুর এবং গঙ্গানন্দপুর পঞ্চায়েত এলাকায় এর অস্তিত্ব আছে। বাকিটা আর নদী বলে বোঝা দায়। মৃতপ্রায় নদী কচুরিপানা এবং আগাছায় ভরে গিয়েছে। স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি নদী সংস্কারের। তাঁরা বলেন, ‘‘সংস্কার হলে নদীটিকে বাঁচানো সম্ভব, না হলে জবরদখল হতে হতে নদীর যেটুকু অস্তিত্ব আছে সেটাও হারিয়ে যাবে।’’

বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া বলেন, "তৃণমূল নেতাদের মদতেই নদী দখল করে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে। পাশাপাশি বেআইনি ভাবে মাটি কেটে ব্যবসা চলছে।" তৃণমূল নেতা তথা বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি জাফর আলি মণ্ডল বলেন, "নুড়িতলা এলাকায় নদী দখলের কথা শুনেছি। দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।" ব্লক প্রশাসনের কর্তারা বিষয়টি নিয়ে অন্ধকারে। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, খোঁজখবর নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে। বেআইনি নির্মাণ থাকলে সতর্ক করে ভেঙে দেওয়া হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bangaon

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy