Advertisement
E-Paper

ছড়াচ্ছে সংক্রমণ, বাড়ছে উদ্বেগ

৯৮ দিনে সংখ্যাটা ছিল ১০১। পরের ১৭ দিনে সেটাই বেড়ে হল ২০০। 

সুপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২০ ০৫:৪১
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

৯৮ দিনে সংখ্যাটা ছিল ১০১। পরের ১৭ দিনে সেটাই বেড়ে হল ২০০।

উত্তর ২৪ পরগনায় ১৭ দিনে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৯৯ জনের। আক্রান্তের হিসেবটা আরও ভয়াবহ। ২৫ মার্চ লকডাউন শুরু হয়ে। সে দিন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৯৩৩। ১৭ জুলাই সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪৭৮। অর্থাৎ ১৭ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫৪৫ জন!

আক্রান্ত এবং মৃতের এমন সংখ্যা বৃদ্ধিতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। শুধু মাত্র শুক্রবার জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪৩ জন। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কপালের ভাঁজ আরও বাড়ছে। কারণ, আক্রান্তের সংখ্যা গত ১৭ দিনে কোনও দিনই কমেনি। রোজই আগের দিনের সংখ্যাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে আক্রান্তের হিসেব।

করোনাভাইরাসের এমন বাড়বাড়ন্তকে কোনও ভাবে লাগাম পরানো যাচ্ছে না বলেই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সব মহলে। আম জনতার চিন্তা, এরপরে আক্রান্ত হলে কোথায় ভর্তি হবেন? একই চিন্তা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদেরও। এরপরে আক্রান্তদের চিকিৎসা কী ভাবে হবে, তা ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা। কারণ, জেলার মধ্যে বনগাঁ এবং বসিরহাটে ভাল পরিকাঠামো-সহ কোনও কোভিড হাসপাতাল নেই। দু’টি মহকুমাতেই কাগজে-কলমে যে দু’টি হাসপাতাল রয়েছে, সেগুলিতে পরিকাঠামো খারাপ বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। দু’টি নার্সিংহোমকে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এই হাসপাতালগুলিতে শয্যা সংখ্যাও ৫০-এর কম। ফলে রোগীভর্তি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই সমস্যা হচ্ছে। রোগীদের হয় বারাসতে, না হলে কলকাতার হাসপাতালগুলিতে পাঠাতে হচ্ছে। সেখানেও যে শয্যা মিলছে এমন নয়। ব্যারাকপুরে একটি অস্থায়ী কোভিড হাসপাতাল রয়েছে। সেখানে করোনার সন্দেহজনক রোগীদের রাখা হয়। রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে তাঁদেরও বারাসত বা কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়। ফলে করোনা-আক্রান্তদের পুরো চাপ গিয়ে পড়ছে কলকাতায়। সেখানে ঠাঁই না পেয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। বসিরহাট এবং বনগাঁতে কোভিড হাসপাতালের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছে।

স্বাস্থ্য দফতর পরিকল্পনা করেছে, আগামী দিনে কোভিড-আক্রান্তদের সেফ-হোমে রেখে চিকিৎসা করা হবে। এই মুহূর্তে জেলায় নতুন করে আরও একটি ৫০ শয্যার কোভিড হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। তবে মহকুমাগুলিতে এখনই নতুন কোভিড হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা নেই বলেই স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

উত্তর ২৪ পরগনার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপসকুমার রায় বলেন, “সব রোগীর জন্য কোভিড হাসপাতালের প্রয়োজন নেই। ফলে আক্রান্তদের যাদের সুবিধা রয়েছে, তাঁরা চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে হোম আইসোলেসনে থাকবেন। যাঁদের সে সুযোগ নেই, তাঁরা সেফ হোমে আসবেন। সেখানে তাঁদের তেমন উপসর্গ দেখা গেলে তাঁরা কোভিড হাসপাতালে আসবেন। সব পুরসভাকেই সেফ হোম তৈরির কথা বলা হয়েছে।”

কর্তৃপক্ষ যাই বলুন, আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যাবৃদ্ধিতে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সব প্রান্তেই। চিকিৎসকেরা বলছেন, অবস্থা ভয়াবহ বলেই সরকার নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। যেখানে ঘোষণা হয়নি, সেখানে অনেক জায়গায় স্থানীয় প্রশাসন এবং ব্যবসায়ীরা লকডাউন করছেন। এই অবস্থায় চিকিৎসকেরা মানুষকে ঘরে থাকার পরামর্শই দিচ্ছেন। নেহাতই প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরিয়ে বিপদ না ডাকার উপরেই জোর দিচ্ছেন তাঁরা।

Coronavirus lockdown
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy