আড়িয়াদহের ‘ত্রাস’ জেলবন্দি জয়ন্ত সিংহের বেআইনি প্রাসাদোপম বাড়ি ভাঙতে ইতিমধ্যে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। এমনকি সেই কাজের জন্য কোনও বাড়তি সময়ও দেওয়া যাবে না বলে কামারহাটি পুরসভাকে জানিয়েছে আদালত। অবশেষে বাড়ি ভাঙতে একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কামারহাটি পুর কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সেই সংস্থা জয়ন্তের তেতলা বাড়িটি পরিদর্শন করেছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, জয়ন্তের বাড়ি যে জায়গায়, সেখানে গলিতে বড় যন্ত্র ঢুকিয়ে নির্মাণ ভাঙার পরিকাঠামো তাদের নেই। তাই বেসরকারি সংস্থাকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে স্থির হয়েছে। কামারহাটির পুরপ্রধান গোপাল সাহা বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মতো আমরা পদক্ষেপ করছি। একটি সংস্থা দেখে গিয়েছে। অন্য সংস্থাকেও আহ্বান জানাতে বিজ্ঞাপন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।’’ গত জুলাইয়ে মা-ছেলেকে রাস্তায় ফেলে মারধরে গ্রেফতার হয়েছিল জয়ন্ত ওরফে জায়ান্ট এবং তার দলবল। সেই সময়েই জয়ন্তের তালতলা ক্লাবে চোর সন্দেহে এক নাবালককে যৌন নির্যাতন, প্রণয় সংক্রান্ত বচসায় এক যুবককে ঝুলিয়ে মারধর করা এবং স্থানীয় বাজারে গুলি চালানোর প্রশিক্ষণ-সহ একাধিক বেআইনি কাজের অভিযোগ ওঠে।
তখনই প্রকাশ্যে আসে আড়িয়াদহের ১ নম্বর প্রতাপ রুদ্র লেনে প্রায় ১ কাঠা ৮ ছটাক জমির উপরে জয়ন্তের তেতলা প্রাসাদটি। অভিযোগ ওঠে, ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে ডোবা বুজিয়ে ওই বাড়ি তৈরি করেছিল জয়ন্ত। পুরসভার কোনও অনুমোদন নেয়নি। ওই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়। গত সোমবার বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্ত চার সপ্তাহের মধ্যে ওই বাড়ি ভাঙার নির্দেশ দেন।
গত বৃহস্পতিবার কামারহাটি পুরসভার কৌঁসুলি আদালতে জানান, বাড়িটি ভাঙতে চার সপ্তাহের বেশি সময় লাগবে। কিন্তু আদালত বাড়তি সময় দিতে রাজি নয়।
এর পরেই কামারহাটি পুরসভা সক্রিয় হয়। শুক্রবারই বড় নির্মাণ ভাঙায় দক্ষ একটি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, কত খরচ হতে পারে, ওই সংস্থার থেকে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। তার পরে দরপত্র ডাকা হবে। তাতে যে সংস্থা বরাত পাবে, তারাই কাজ শুরু করবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)