Advertisement
E-Paper

শব্দ অনেকটাই জব্দ কালীপুজোর রাতে

গত কয়েক বছর পরে লক্ষ্মীপুজোর রাতে হাবড়ায় ফিরে এসেছিল শব্দবাজির দাপট। পুলিশি ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ক্ষুব্ধ শহরবাসীর একাংশ প্রশ্ন তোলেন, পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে কী ভাবে শহরে এত শব্দবাজি মজুত হল।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৪০
গগন-পানে: ফানুস উড়ল হাবড়ায়। ছবি: সুজিত দুয়রি

গগন-পানে: ফানুস উড়ল হাবড়ায়। ছবি: সুজিত দুয়রি

লক্ষ্মীপুজোর রাতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে লাগাতার পুলিশি পদক্ষেপ ও প্রচারে হাবড়ায় কালীপুজোর রাতে কমল শব্দবাজির দাপট।

খুশি সাধারণ মানুষ। শহরের চিকিৎসক দীপক কুণ্ডুর কথায়, ‘‘মঙ্গলবার রাতে শব্দবাজি ফেটেছে সামান্যই। অন্য বছরে কালীপুজোর রাতে বারুদ-ধোঁয়া-কুশায়া মিশে এক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হত। এ বার তেমন কিছু হয়নি।’’

গত কয়েক বছর পরে লক্ষ্মীপুজোর রাতে হাবড়ায় ফিরে এসেছিল শব্দবাজির দাপট। পুলিশি ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ক্ষুব্ধ শহরবাসীর একাংশ প্রশ্ন তোলেন, পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে কী ভাবে শহরে এত শব্দবাজি মজুত হল। সে দিন গভীর রাত পর্যন্ত মুড়ি-মুড়কির মতো শব্দবাজি ফেটেছিল। পথে বেরিয়ে অনেকে দ্রুত বা়ড়ির পথ ধরেন।

তবে লক্ষ্মীপুজোর পর দিন থেকে হাবড়া থানার পুলিশ গোটা এলাকায় বেআইনি ভাবে মজুত শব্দবাজির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। গ্রেফতার করা হয় দুই শব্দবাজির কারবারিকে। আটক করা হয় ২৪ কেজি শব্দবাজি।

পুলিশি অভিযানের পাশাপাশি, পুলিশের তরফে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার চালানো হয়। ব্যানার-পোস্টার সাঁটানো হয়। কালীপুজোর রাতে পুলিশি টহলও ছিল সর্বত্র। প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকাতেও ছিল পুলিশের নজরদারি দল। শহর এলাকায় বাজি কম ফাটলেও গ্রামীণ এলাকায় অবশ্য গভীর রাত পর্যন্ত বাজি ফাটার আওয়াজ কানে এসেছে বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দারা। তবে সব মিলিয়ে তাণ্ডব কম ছিল বলেই সকলের অভিজ্ঞতা।

লক্ষ্মী পুজোর রাতে প্রফুল্লনগর বিদ্যামন্দির স্কুলের প্রধান সত্যজিৎ বিশ্বাসের পোষা বিড়াল ভয়ে খাটের তলায় লুকিয়েছিল। সত্যজিৎ বলেন, ‘‘কালীপুজোর রাতে হাবড়া শহরে শব্দবাজি ফেটেছে খুবই কম। তবে হাবড়া শহর-সংলগ্ন অশোকনগর থানার নালন্দা মোড় ও রাধা কেমিক্যালস মোড়ে শব্দবাজির তাণ্ডব ছিল।’’ স্থানীয় কামারথুবার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ সমাদ্দারও জানিয়েছেন, কালী পুজোর রাতে তাঁরা নির্ভয়ে চলাফেরা করতে পেরেছেন।

হাবড়ার সদ্য প্রাক্তন পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘পুলিশের ভূমিকা ও মানুষের সচেতনতার জন্যই কালীপুজোর রাতে শব্দবাজির তাণ্ডব বন্ধ হয়েছে। আশা করবো আগামী বছরগুলিতে শব্দবাজি ফাটানো সম্পূর্ণ বন্ধ হবে।’’

বনগাঁ মহকুমায় এ বার শব্দবাজি তাণ্ডব তুলনায় অনেক কম। পুলিশ এখানেও সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল বলে জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে বাড়ি পো়ড়ানোর নির্ধারিত সময়সীমা জানতেন না বলে দাবি দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের অনেকের। এখানে কালীপুজোর রাতে শব্দবাজির শব্দ ঘন ঘন কানে এসেছে। জয়নগর, কুলতলির বিভিন্ন জায়গায় সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় বাজি পোড়ানো। চলে মাঝরাত পেরিয়ে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, কোর্টের সময়সীমা (রাত ৮টা থেকে ১০টা) বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে অনেকে জানেনই না। অনেকের নানা রকম ধন্দও রয়েছে বিষয়টি নিয়ে। কারও কারও ধারণা, আদালতের এই বিধি শুধু শব্দবাজির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

তবে এলাকায় শব্দবাজির প্রকোপ অন্যান্য বারের তুলনায় এ বার কিছুটা কম বলেই জানাচ্ছেন স্থানীয় মানুষজন। পুলিশি সক্রিয়তার জন্যই শব্দবাজির দাপট কমেছে বলেই মনে করছেন তাঁরা।

ক্যানিং, বসিরহাট, ডায়মন্ড হারবারে শব্দবাজি শোনা গেলেও তুলনায় তা কম ছিল বলে মনে করছেন অনেকেই। বাদুড়িয়া, স্বরূপনগর, মিনাখঁা, হাসনাবাদে বেশ কিছু শব্দবাজি আটক হয়েেছ কালীপুজোয়।

কেউ অবশ্য বলছেন, শব্দবাজির নিয়ে পুলিশি কড়াকড়ি থাকলেও বাজির যা দাম, সেটাও শব্দবাজি কম ফাটার একটা কারণ হতে পারে।

Pollution Festival Environment Fire Crackers Sound Crackers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy