পঞ্চায়েত ভোটের স্মৃতি এখনও টাটকা। কোথাও ছাপ্পা, কোথাও রিগিং, কোথাও হুমকি-মারধরের সাক্ষী ছিলেন ভোটকর্মীদের অনেকেই। লোকসভা ভোটে যাতে তার পুনরাবৃত্তি হয়, তা নিয়ে আতঙ্কে অনেকেই। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এর আগে বনগাঁয় বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনের পক্ষে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। এ বার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভোট কর্মীদের একাংশ সরাসরি জানিয়ে দিলেন, ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর যথেষ্ট নিরাপত্তা না থাকলে তাঁরা কাজেই যাবেন না।
শনিবার ক্যানিংয়ের দ্বারিকানাথ বালিকা বিদ্যালয়ে ভোটকর্মীদের ইভিএম, ভিভি প্যাট মেশিনের ব্যবহার সম্পর্কে এবং ভোটগ্রহণের বিষয়ে প্রশিক্ষণ ছিল। ক্যানিং মহকুমার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ১৪ হাজার সরকারি কর্মী প্রশিক্ষণ নিতে এসেছিলেন। ছিলেন জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও, ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক অদিতি চৌধুরী-সহ অন্যান্য সরকারি আধিকারিকেরা।
এ দিন প্রশিক্ষণের পরে ভোটকর্মীদের একাংশ বুকে প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে দাবি করতে থাকেন, প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। না হলে তাঁরা ভোট গ্রহণের দিন বুথমুখো হবেন না। বিষয়টি তাঁরা মহকুমাশাসককেও জানান। এক ভোটকর্মীর কথায়, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। ভোট গ্রহণ করতে গিয়ে যদি আমাদের প্রাণটাই চলে যায়, তা হলে আমাদের পরিবারের কী হবে? আগে প্রশাসনকে আমাদের নিরাপত্তার সুনিশ্চিত করতে হবে, তবেই আমরা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে যাব।’’ জোর করে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পাঠানোর চেষ্টা করা হলে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। এমনকী, অনশনের হুমকিও দিয়েছেন।
এ বিষয়ে মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘ভোটকর্মীরা তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টি সুনিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছেন। এ বার নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার কথা বলা হয়েছে। পুরো বিষয়টি নির্বাচন কমিশন দেখছে। ভোট কর্মীদের সেই কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
পঞ্চায়েত ভোটে মারধরে রক্তাক্ত হন দেগঙ্গার শিক্ষক। উত্তর দিনাজপুরে ভোটকর্মীর দেহ মেলে পঞ্চায়েত ভোটের পর দিন। এই সব উদাহরণ টেনে ক্যানিংয়ের এক সরকারি কর্মী বলেন, ‘‘ভোটের দিন আমরা নিরাপদ বোধ না করলে ভোটের কাজও কি সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব? আমাদের নিশ্চিন্তে কাজ করতে দিতেই হবে।’’