Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

দীনেশের মনোনয়নে ঐক্যের ছবি তৃণমূলে

অর্জুন অনুগত হিসেবে যাঁর নাম আগাগোড়া শোনা যায়, তিনি অর্জুনের নিকটাত্মীয় সুনীল সিংহ।

খোশমেজাজে: মণীশ-শুভ্রাংশু। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র

খোশমেজাজে: মণীশ-শুভ্রাংশু। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র

সুপ্রকাশ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৯ ০৫:৫৮
Share: Save:

মনোনয়ন জমা দিলেন ব্যারাকপুরে তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদী। শুক্রবার বারাসতে জেলাশাসকের অফিসে নেতা-কর্মীদের নিয়ে আসেন তিনি। সেখানে শিল্পাঞ্চলে তৃণমূল শিবিরের ঐক্যের ছবিটাই তুলে ধরার চেষ্টা করলেন নেতারা। পাশাপাশি দেখা গেল, নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিংহ, টিটাগড়ের কাউন্সিলর মণীশ শুক্ল, বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের ছেলে তথা বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়দের।

ভোটের দিনক্ষম ঘোষণার আগে এ রাজ্যের যে কেন্দ্রগুলিকে বিজেপি থেকেই পাখির চোখ করেছিল, তার মধ্যে ব্যারাকপুরের নাম ছিল না। কিন্তু ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহ বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় সমীকরণ দ্রুত বদলাতে থাকে। ব্যারাকপুর আসনে কড়া টক্কর দেওয়ার কথা বলতে থাকে বিজেপি নেতারা।

বদলে যাওয়া পরিস্থিতি অনুযায়ী, এত দিনকার বিভেদ ভোলার দরকার বোঝেন তৃণমূল নেতারাও। এ দিন দীনেশের মনোনয়ন ঘিরে সেই ছবিই দেখা গেল।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

অর্জুন অনুগত হিসেবে যাঁর নাম আগাগোড়া শোনা যায়, তিনি অর্জুনের নিকটাত্মীয় সুনীল সিংহ। অর্জুনের হাত ধরেই যাঁর রাজনীতিতে উত্থান। অর্জুন দল ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়েও গুজব ছড়িয়েছিল। কিন্তু সুনীল জানিয়ে দেন, তিনি তৃণমূল ছাড়ছেন না। তবে তাঁর চালচলন নিয়ে প্রশ্ন আছে দলের নেতৃত্বের একাংশের মধ্যেও। সেই সুনীলকে অবশ্য এ দিন দীনেশের পাশেই দেখা গিয়েছে। দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে খোশমেজাজে গল্পও করেছেন।

একদা ‘অর্জুন অনুগত’ বলে পরিচিত মণীশ শুক্লর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা শোনা যায়। এক সময়ে ব্যারাকপুর এলাকায় কার্যত মণীশই ছিলেন অর্জুনের ডান হাত। তাঁর দাপটে বিভিন্ন সময়ে তৃণমূলের বহু নেতাকে কোণঠাসা হতে হয়েছে বলেও দলের অন্দরের খবর। মণীশও জানিয়েছেন, তিনি তৃণমূল ছাড়ছেন না। অর্জুন দল ছাড়ার পরে মণীশকে বাড়ির বাইরে বিশেষ দেখা যাচ্ছিল না। প্রচারে বেরোলেও টিটাগড়েই আটকে আছেন। এ দিন অবশ্য এসেছিলেন বারাসতে।

মণীশের সঙ্গে শুভ্রাংশুর ঘনিষ্ঠতা এ দিন দলের নেতাদের চোখ এড়ায়নি। মুকুল তৃণমূল ছাড়ার পরে শুভ্রাংশুর সঙ্গে সব থেকে বেশি ঠোকাঠুকি বেধেছিল অর্জুনেরই। মণীশ- শুভ্রাংশুর ‘মধুর’ সম্পর্কের ইতিকথা অজানা ছিল না দলের কাছেও। এ দিন জেলাশাসকের অফিস চত্বরে অবশ্য দুই নেতাকে হাতে হাত মিলিয়ে হাঁটতে দেখা গেল। কাঁধে হাত রেখে গল্পও করলেন দু’জন। এমন দৃশ্যে হাসি ফুটেছে দলের কর্মী-সমর্থকদের মুখে। দীনেশের প্রার্থিপদের প্রস্তাবকের তালিকায় নাম আছে আমডাঙার বিধায়ক রফিকুর রহমানের। বাকি তিনজন ভাটপাড়ার উপ পুরপ্রধান সোমনাথ তালুকদার, শুভ্রাংশু রায় ও সুনীল সিংহ। সব দেখেশুনে উৎসাহিত তৃণমূল শিবির। ব্যারাকপুর থেকে আসা দলের বেশ কিছু কর্মীকে শুভ্রাংশু-মণীশের নামে জয়ধ্বনিও করতে শোনা গেল। তাঁদের কথায়, ‘‘দলের সব নেতা এ বার একজোট। অর্জুনদা দলের বাইরে যাওয়াতেই এটা সম্ভব হল। আমাদের প্রার্থীর জয়ের ব্যবধান আরও বাড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE