ভিড় বনগাঁর জয়পুরে। নিজস্ব চিত্র।
প্রথম দিনেই দীর্ঘ লাইন পড়ল ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের শিবিরে। দুই ২৪ পরগনার শিবিরগুলিতে আসা উপভোক্তারা জানিয়েছেন, এমন ব্যবস্থায় খুশি তাঁরা। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে বিভিন্ন অফিসে ঘুরে, জনপ্রতিনিধির শংসাপত্র নিয়ে জমা দিতে হয়রান হতে হত। এখন প্রশাসনের কর্মীরা ঘরের দরজায় এসে হাজির হওয়ায় তাঁদের সেই হয়রানি কমেছে।
বহু মানুষ এ দিন এই কর্মসূচির নির্দিষ্ট প্রকল্পের বাইরেও অনেক সমস্যা নিয়ে হাজির হন শিবিরে শিবিরে। সরকারি কর্মীরা তাঁদের সাধ্যমতো সাহায্য করেছেন।
উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বারাসত ২ ব্লকের কীর্তিপুর ১ পঞ্চায়েতের চৌমুহার একটি স্কুলে প্রকল্পের সূচনা করেন। এরপরে বারাসত ১ ব্লকের ইছাপুর এবং বারাসত পুরসভার একটি শিবিরে গিয়ে কাজের বিষয়ে সরকারি কর্মীদের কাছ থেকে বিস্তারিত খবর নেন জেলাশাসক।
বনগাঁ পুরসভার জয়পুর তালতলা জিএসএফ স্কুলে শিবিরের সূচনা করেন বনগাঁর মহকুমাশাসক প্রেম বিভাস কাঁসারি। প্রথম দিনই সমস্ত শিবিরে প্রচুর ভিড় ছিল। অনেক জায়গাতেই দূরত্ববিধি শিকেয় ওঠে। মাস্ক ছিল না অনেকের। পার্বতী বিশ্বাস নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড করতে এসেছিলাম। ফর্ম দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে পুরসভায় জমা দিতে।’’ মহকুমার প্রায় সব ব্লকেই এ দিন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। অশোকনগর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের দেবীনগর বালিকা বিদ্যালয়ের শিবিরে আসা উপভোক্তারা জানান, বাড়ির কাছে সরকারি পরিষেবা পেয়ে তাঁরা উপকৃত হয়েছেন।
হাড়োয়া, মিনাখাঁ, হাসনাবাদ এবং সন্দেশখালি-সহ বসিরহাট মহকুমার অধিকাংশ জায়গায় পঞ্চায়েত সংলগ্ন স্কুলে কর্মসূচি শুরু হয়। এ মিনাখাঁর বামুনপুকুর পঞ্চায়েত সংলগ্ন বামুনপুকুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিবিরে আসা পূজা ঘোষ, বাপি নস্কর বলেন, “আমাদের স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নেই। আজ আবেদনপত্র পেলাম। আশা করি এ বার পরিষেবা পাব।” বার্ধক্য ভাতার জন্যও অনেককে লাইনে দাঁড়াতে দেখা যায়।”
বিজেপি নেতা জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, “প্রথম দিনের ভিড় দেখেই বোঝাই যাচ্ছে, কত মানুষ সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধার বাইরে রয়েছেন। সকলে প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন বলে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছিল।”
পাল্টা তৃণমূলের কটাক্ষ, “এত মানুষকে আসতে দেখে বিজেপি ভয় পেয়ে প্রলাপ বকছে।”
এ দিন বিষ্ণুপুর ১ ব্লকের আমগাছিয়ায় এলোকেশি ঐক্যতান বালিকা বিদ্যালয়ে শিবিরের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন। জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও পুর এলাকায় প্রায় চল্লিশটি শিবির হয়। ক্যানিং ২ ব্লকে সমস্ত পরিষেবা মিলিয়ে এ দিন প্রায় ৩ হাজার ২০০ আবেদন জমা পড়ে। শিবির থেকেই আবেদনের ভিত্তিতে জব কার্ড, আদিবাসী পেনশন সহ বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রূপশ্রী প্রকল্পে এ দিন ২৫ হাজার টাকা পান আজিদা খাতুন, আলপিসা লস্কররা। এ মাসেই তাঁদের বিয়ে। কয়েক দফায় শিবির হবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
ভাঙড় ২ ব্লকের ভোগালি ২ পঞ্চায়েতের কাঁঠালিয়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে শিবির করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ভাঙড়-রঘুনাথপুর যাওয়ার প্রধান রাস্তা আটকে শিবির করা হয়েছে। বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় বলেন, “ওই রাস্তা বন্ধ হলেও পাশের রাস্তাটি খোলা ছিল। এটা নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy