মোটর বাইক চালক নাবালক দাদা ও তার সঙ্গে সওয়ারি দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী জখম হল পথ দুর্ঘটনায়। মঙ্গলবার সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে হাবড়ার ফুলতলা বিশ্বাসপাড়া এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, বাউগাছি কাশীবালা বিদ্যাপীঠের ছাত্রী মৌমিতা দাস ও পলি দাস এ দিন পলির দাদা সুরজিতের বাইকে চেপে দক্ষিণ নাংলা কে ইউ ইনস্টিটিউশনে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাচ্ছিল। নাংলা বিল এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারালে তিন জনই রাস্তায় ছিটকে পড়ে। কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। স্থানীয় বাসিন্দারাই তাদের উদ্ধার করে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে সুরজিৎকে ছেড়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, মৌমিতার কপালে তিনটি সেলাই হয়েছে, পলির মাথা ও মুখের কাছে ১২টি সেলাই হয়েছে।
স্থানীয় বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে প্রতিনিধি দল পাঠান। হাবড়ার পুরপ্রতিনিধি দীপক দে বলেন, ‘‘বিধায়কের নির্দেশে ছাত্রীদের ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করেছি।’’ হাসপাতালের শয্যায় বসেই তারা এ দিন ভূগোল পরীক্ষা দেয়।
অন্য দিকে, মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময়ে এবং পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দু’টি পৃথক দুর্ঘটনায় জখম হল ছ’জন পরীক্ষার্থী, দুই টোটো চালক। তিন জনের জখম গুরুতর হওয়ায় কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। মঙ্গলবার দু’টি দুর্ঘটনাই উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁয় ঘটেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ কলকাতা বাসন্তী হাইওয়ে সংলগ্ন মিনাখাঁ ধুতুরদহ রোডে কাদিহাটি এলাকায় টোটো এবং অটোর মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। টোটোয় চেপে ধুতুরদহ কল্যাণ পরিষদ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার সময়ে রাস্তার উপরে ছিটকে পড়ে আহত হয় স্থানীয় বামুনপুকুরের বাসিন্দা দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মৌমিতা বাসি ও সোনালি ঢালি। জখম হন টোটো চালকও। পুলিশ ও স্থানীয়েরা তিন জনকেই মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে দুই পরীক্ষার্থী ও টোটো চালককে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়।
একই ভাবে এ দিন বিকেলেও টোটো ও অটোর মুখোমুখি ধাক্কায় জখম হয়েছে চার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিনাখাঁর যতীন্দ্রনাথ বালিকা বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে কলকাতা বাসন্তী হাইওয়ের মিনাখাঁ পঞ্চায়েত অফিসের কাছে দ্রুত গতিতে যাওয়া অটো ও টোটোটির মুখোমুখি ধাক্কা লেগে টোটো উল্টে যায়। অটোয় থাকা কল্যাণী নস্কর, কৃষ্ণা মণ্ডল, সুমিতা মণ্ডল, বৈশাখী পণ্ডা নামে চার পরীক্ষার্থী আহত হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের উদ্ধার করে মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। টোটো চালকও সামান্য আহত হয়েছেন।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই এলাকায় টোটো ও অটো বিপজ্জনক ভাবে চলাচল করে। অধিকাংশ চালকেরই ঠিক মতো প্রশিক্ষণ নেই। গতি নিয়ন্ত্রণের বালাই যেমন নেই, তেমনই প্রশাসনেরও নজরদারি নেই কারও কাছে বৈধ কাগজপত্র আছে কিনা, তা দেখার।
বসিরহাট পুলিশ জেলার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অটো ও টোটো চালকদের পুলিশের পক্ষ থেকে নানা সচেতনতা শিবির ও কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সচেতন ও সতর্ক করা হলেও অনেকেই বেপরোয়া ভাবে চালায়। নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)