Advertisement
০৮ মে ২০২৪

বাড়ি ফিরে ফোন মেঘনাদের, আপ্লুত হাসপাতালের সকলে

ফোন এল দূর রাজ্য থেকে। কথা বলতে বলতে ধরে এল বসিরহাট জেলা হাসপাতালের সুপারের গলা।

বাড়ির-পথে: মেঘনাদ মুন্ডা। নিজস্ব চিত্র

বাড়ির-পথে: মেঘনাদ মুন্ডা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৭ ০২:২১
Share: Save:

ফোন এল দূর রাজ্য থেকে। কথা বলতে বলতে ধরে এল বসিরহাট জেলা হাসপাতালের সুপারের গলা।

সপ্তাহখানেক আগে বসিরহাট হাসপাতাল থেকে অসমের তেজপুর থানার ধিকিয়াঝুলি গ্রামের ধিরাইবাগানের বাড়িতে গিয়েছেন মেঘনাদ মুন্ডা। টানা কয়েক মাস তাঁর ঠাঁই হয়েছিল বসিরহাট হাসপাতালে। হাসপাতালের নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক এমনকী সুপারের সঙ্গেও এ ক’দিনে আত্মীয়তা তৈরি হয়েছিল মেঘনাদের।

সেই মেঘনাদই ফোন করেছিলেন বাড়ি পৌঁছে। সুপার শ্যামল হালদার এ পাশ থেকে বললেন, ‘‘শুনেছি তোমাদের ওখানে খুব জাঁকজমক করে নৌকায় তুলে দুর্গা ভাসান হয়। এ বার পুজোয় সপরিবার যাওয়ার ইচ্ছে রইল তোমাদের ওখানে।’’ ফোন রেখে বললেন, ‘‘বড় ভাল ছেলে। এখানে অনেকেই ওকে খুব পছন্দ করত।’’

গত বছর ৭ জুলাই যখন মিনাখাঁ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল মেঘনাদকে, তখনও তার পরিচয় জানত না কেউ। কাজের খোঁজে মেঘনাদ বেরিয়েছিলেন বাড়ি থেকে। বন্ধুরা খুনের চেষ্টা করে। ভাগ্যের ফেরে বসিরহাট হাসপাতালে ভর্তি হন মেঘনাদ। স্মৃতি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।

কিন্তু সামান্য কিছু শব্দের সূত্র ধরে সোশ্যাল মিডিয়া ঘেঁটে তাঁর নাম-ঠিকানা উদ্ধার করেন এক ব্যক্তি। যোগাযোগ করা হয় বাড়ির সঙ্গে। সে খবর প্রকাশিত হয় আনন্দবাজারে। তত দিনে স্মৃতি ফিরে এসেছে মেঘনাদের। নড়েচড়ে বসে প্রশাসনও। কিন্তু নানা কারণে বাড়ি ফেরাটা আটকে গিয়েছিল। সপ্তাহখানেক আগে মেঘনাদ ফিরেছেন বাড়িতে। যাওয়ার আগে বসিরহাট হাসপাতালের কেউ ট্রেনের টিকিট কেটে দেন। কেউ দেন জামা-প্যান্ট। পথের খাবারের ব্যবস্থা করেন কেউ। কেউ ব্যাগে ওষুধপত্র ভরে দেন, অ্যাম্বুল্যান্স করে তাঁকে বসিরহাট স্টেশনে পৌঁছে দেওয়া হয়।

সিস্টার ইন চার্জ সীমা রায় বলেন, ‘‘ও মারা গিয়েছে মনে করে স্ত্রী পারলৌকিক কাজ সেরে সাদা থান পরতে শুরু করেছিলেন। এমন একটা পরিবারে ফের খুশির খবর দিতে পেরে আমরাও আপ্লুত। চাকরি জীবনে একটা বড় প্রাপ্তি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital super
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE