Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

হারিয়ে যাওয়া পল্টুকে ফিরে পেলেন পাঁচুবাবু

রবিবার সকালে থানা থেকে একটি ফোন পেয়েছিলেন পাঁচুগোপালবাবু। তাঁকে বলা হয় হারিয়ে যাওয়া পোষ্য পল্টুকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।

আদর: পল্টু ফেরার পর। নিজস্ব চিত্র

আদর: পল্টু ফেরার পর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৫৫
Share: Save:

এক ভ্যান চালক যুবকের সহযোগিতায় খুঁজে পাওয়া গেল বনগাঁ শহরের ঠাকুরপল্লি এলাকা বাসিন্দার পাঁচুগোপাল প্রামাণিকের হারিয়ে যাওয়া পোষ্য পল্টুকে।

রবিবার সকালে থানা থেকে একটি ফোন পেয়েছিলেন পাঁচুগোপালবাবু। তাঁকে বলা হয় হারিয়ে যাওয়া পোষ্য পল্টুকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। দ্রুত থানায় ছুটে আসেন ওই প্রৌঢ়। থানা চত্ত্বরে ঢুকেই দেখতে পেলেন পল্টুকে। মালিককে দেখে লেজ নাড়তে নাড়তে কাছে চলে এল সে। পল্টুকে বুকে জড়িয়ে আনন্দে কেঁদে ফেললেন পাঁচুবাবু। বলছিলেন, ‘‘ক’দিনেই কেমন রোগা হয়ে গিয়েছিস তুই! বাড়ি চল। আর কখনও তোকে চোখের আড়াল হতে দেব না।’’

১৩ নভেম্বর, সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল পল্টু। রোজ সন্ধ্যায় একটু ঘুরতে যাওয়া অভ্যাস ছিল তার। কিন্তু রাত সাড়ে আটটার মধ্যেই সে বাড়ি ফিরে আসত। কিন্তু ওই দিন সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে সে আর ফিরে আসেনি। সেই থেকে নাওয়া-খাওয়া ভুলে পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক পাঁচুবাবু পল্টুর খোজে চারিদিকে ছুটে বেরিয়েছেন। কোথাও পল্টুর হদিস না পেয়ে অবশেষে শুক্রবার তিনি বনগাঁয় থানার দ্বারস্থ হন। নিখোঁজ ডায়েরিও করেন। এতে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। তাঁরাও চারিদিকে খোঁজ শুরু করেন।

শনিবার কুকুর হারিয়ে যাওয়ার খবর পৌঁছয় হরিদাসপুরের বাসিন্দা পেশায় ভ্যান চালক যুবক গোপাল মণ্ডলের কাছে। সব শুনে তাঁরও মন কেঁদে ওঠে। কারণ গোপালবাবুর বাড়িতেই এক আগন্তুক অতিথি রয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে। তিনি তাঁর এক পরিচিত যুবকের মাধ্যমে থানায় যোগাযোগ করেন। পুলিশ তাঁকে থানায় চলে আসতে বলেন। রবিবার সকালে তিনি বাড়িতে থাকা অতিথিকে নিয়ে থানায় চলে আসেন। থানায় দাড়িয়ে গোপালবাবু বলছিলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর দুপুর একটি অনুষ্ঠান বাড়ি থেকে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলাম। পথে একটি কুকুর আমার পিছু নেয়। আমার বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে যায়। ওকে দেখে মায়া পড়ে যায়।’’

তবে মাঝের কয়েকটা দিন পল্টু কোথায় ছিল সে বিষয় অবশ্য কিছুই জানা যায়নি। এ দিন সকালে প্রিয় পোষ্যকে ফিরে পেয়ে গোপালবাবুকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি যান পাঁচুবাবু। গোপালকে তিনি ৫০০ টাকা বকশিসও দিয়েছেন। কয়েক দিন পর বাড়ি ফিরেছে পল্টু। ফলে এ দিন পাঁচুগোপালবাবুর স্ত্রী কল্পনাদেবী পল্টুর প্রিয় খাবার রুটি-মাংস রান্না করেছেন। পেট ভোরে ওই খাবার খেয়ে একটা ঘুম দিল সে। চিন্তা মুক্ত হয়ে পাঁচুবাবু বললেন, ‘‘আর কখনও ওকে চোখের আড়াল করবো না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dog Returns
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE