Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

মেডেল পেলেন হেলমেটহীন যুবক

যুবক পরে বললেন, ‘‘সত্যি বড় ভুল হয়ে গিয়েছে। তাড়াহুড়োয় বেরিয়ে এসেছিলাম। বাকিদের হেলমেট না পরানোটা উচিত হয়নি। আর বাইকে এক সঙ্গে এত জনের ওঠাও তো ঠিক নয়।’’ আজকের অভিজ্ঞতাটা ভুলবেন না, জানিয়ে গেলেন।

পরাব-যতনে: বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

পরাব-যতনে: বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:১৯
Share: Save:

দুপুর সাড়ে ১২টা। গোপালনগরের শ্রীপল্লি এলাকা থেকে এক যুবক স্ত্রী ও দুই শিশুপুত্রকে বসিয়ে বাইক চালিয়ে আসছিলেন বনগাঁ-চাকদহ সড়ক ধরে। চালকের মাথায় হেলমেট থাকলেও দুই শিশু এবং স্ত্রীর মাথা ছিল খালি।

বনগাঁ শহরের ত্রিকোণ পার্ক এলাকা দিয়ে ওই যুবককে দেখে আঁতকে ওঠে পুলিশ। সে সময়ে ডিউটি করছিলেন বনগাঁ ট্রাফিক গার্ডের ওসি গৌতম দাস। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও বেশ কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁরা যুবককে দাঁড় করান।

অপরাধ বুঝতে পেরে যুবকের মুখে তখন কথা নেই। ধরে নেন, বড়সড় জরিমানা করতে যাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু ওই যুবককে অবাক করে গৌতমবাবুর পুরো পরিবারের গলায় ঝুলিয়ে দেন মেডেল। থতমত খেয়ে যুবক কী বলবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। স্ত্রীর মুখ লজ্জায় লাল।

যুবক পরে বললেন, ‘‘সত্যি বড় ভুল হয়ে গিয়েছে। তাড়াহুড়োয় বেরিয়ে এসেছিলাম। বাকিদের হেলমেট না পরানোটা উচিত হয়নি। আর বাইকে এক সঙ্গে এত জনের ওঠাও তো ঠিক নয়।’’ আজকের অভিজ্ঞতাটা ভুলবেন না, জানিয়ে গেলেন।

মঙ্গলবার সকালে বনগাঁ শহরে বনগাঁ ট্রাফিক গার্ড ও বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে বাইক চালকদের হেলমেট পরা নিয়ে সচেতন করতে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। হেলমেটহীন বাইক চালকদের ধরে এ দিন কোনও কেস দেওয়া হয়নি। শুধু গলায় মেডেল পরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

গৌতমবাবু বলেন, ‘‘মোটর বাইক চালক ও আরোহীদের মধ্যে হেলমেট পরে বাইক চালানো সম্পর্কে সচেতন করতে এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’ পুলিশ কর্তাদের মতে, এ ভাবে একটা লজ্জাবোধ জাগানো যেতে পারে হেলমেটহীন আরোহীদের মধ্যে। যাতে তাঁরা আর কখনও হেলমেট না পরে বেরনোর ভুল করেন।

বেসরকারি হাসপাতালের এক কর্তা বিপ্লব দে বলেন, ‘‘পথ দুর্ঘটনায় জখম রোগীর সংখ্যা কমাতে আমরা প্রচার অভিযানে সামিল হয়েছি। এর ফলে দুর্ঘটনা কমবে।’’

এ দিনের কর্মসূচির সূচনা করেন বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ। তিনি হেলমেটহীন বাইক চালকদের বোঝানোর কাজ করেছেন দীর্ঘক্ষণ ধরে। হেলমেটহীন অনেককেই বলতে শোনা গিয়েছে, তাড়াহুড়োয় হেলমেট পরা হয়নি। হেলমেট পরলে মাথা ব্যথা করে। ভিজে চুলে হেলমেট পরলে অসুবিধা— এমন নানা অদ্ভূত যুক্তি।

হেলমেটহীন বাইক আরোহীদের ধরে হেলমেট বিলি করেছে মন্দিরবাজার থানার পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন হেলমেটহীন বাইক আরোহীর মাথায় হেলমেট পরানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। ওসি বাপি রায় বলেন, ‘‘প্রতিটি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পিছনে হেলমেট না পরা একটা মূল কারণ। এত প্রচার করেও সকল বাইক আরোহীর মাথায় হেলমেট পরানো যাচ্ছে না। তাই যাদের গাড়ির সমস্ত নথি ঠিক আছে তাদের মাথায় হেলমেট পরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Safe Drive Save Life Helmet Police Medal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE