Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Kapilmuni Temple

কপিলমুনি মন্দিরকে বাঁচান, দাবি সাংসদের

প্রতি বছর গঙ্গাসাগর মেলা এলেই কেবলমাত্র কপিলমুনির আশ্রম ঘিরে তৎপরতা দেখা যায় রাজ্য সরকারের।

জলোচ্ছ্বাসে কপিলমুনি মন্দিরের সামনে সমুদ্রতটের অবস্থা।

জলোচ্ছ্বাসে কপিলমুনি মন্দিরের সামনে সমুদ্রতটের অবস্থা। নিজস্ব চিত্র।

সমরেশ মণ্ডল
সাগর শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৪ ০৯:৪৩
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে ফের সংসদে কপিলমুনির আশ্রম বাঁচানোর দাবি তুললেন মথুরাপুরের সাংসদ বাপি হালদার। বুধবার তিনি সংসদ অধিবেশনে দাবি করেন, কপিলমুনি মন্দির ধীরে ধীরে ভাঙনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। স্পিকারের মাধ্যমে সেচ ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীকে তিনি অনুরোধ করেন, এই মন্দিরের পাশাপাশি গঙ্গাসাগরকে বাঁচাতে কেন্দ্রীয় সরকার পদক্ষেপ করুক। গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলা ঘোষণার দাবিও জানান তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার এই দাবি তুলে সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি। এ বার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য অনুরোধ জানান বাপি।

প্রতি বছর গঙ্গাসাগর মেলা এলেই কেবলমাত্র কপিলমুনির আশ্রম ঘিরে তৎপরতা দেখা যায় রাজ্য সরকারের। মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেজ়িং হয়, কিন্তু তারপরে সারা বছর স্থানীয় পঞ্চায়েতের ভরসায় গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণ দেখাশোনা চলে। অথচ, কুম্ভমেলার পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম মেলা হিসেবে গঙ্গাসাগর মেলা ছাড়া দেশে পরিচিত।

সম্প্রতি সঙ্কটে পড়েছে কপিলমুনির মন্দির। কটালের দাপটে জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে সমুদ্রতট সংলগ্ন রাস্তা। গঙ্গাসাগর সমুদ্র পাড়েও দেখা দিয়েছে বড়সড় ধস। পরিস্থিতি এমনই, এভাবে চলতে থাকলে জলে তলিয়ে যেতে পারে কপিলমুনির আশ্রম, এমনটাই আশঙ্কা স্থানীয় মানুষের। ভাঙন ঠেকানোর জন্য সমুদ্রপাড়ে কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর।

গত কয়েক দিন ধরে সাগরমেলার ১ থেকে ৫ নম্বর স্নানঘাট পর্যন্ত সমুদ্রতটে ভয়াবহ ভাঙন হয়। পূর্ত দফতরের একটি কংক্রিটের রাস্তা, বিদ্যুতের খুঁটি, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলের লাইন, অস্থায়ী দোকান, গাছ সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে ভাঙন ঠেকাতে না পারলে কপিমুনির আশ্রম তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। গঙ্গাসাগরে ভাঙন এলাকা থেকে মাটি ও বালি সংগ্রহ করা হয়েছে। জোয়ার ও ভাটার সময়ে কতটা জলস্ফীতি হচ্ছে, তা-ও পরিমাপ চলছে। ইতিমধ্যে সেচ দফতরের পক্ষ থেকে উপগ্রহ-চিত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্ট জমা পড়েছে সেচ দফতরের উচ্চ মহলে।

বাপি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী একাধিক বার কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছেন, গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা ঘোষণা করা হোক, ভাঙন রোধ করা হোক। কেন্দ্র কোনও পদক্ষেপ করেনি। আমি প্রথম বার সাংসদ হয়ে সংসদীয় এলাকায় বিভিন্ন সমস্যা লোকসভা অধিবেশনে তুলে ধরেছি। বিশেষ করে গঙ্গাসাগরকে নিয়ে। এখন দেখার, এ বিষয়ে কেন্দ্র কত তাড়াতাড়ি পদক্ষেপ করে।’’

সাগরের বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘কেন্দ্র বার বার বঞ্চনা করছে বাংলাকে। বাজেটে সুন্দরবনে ভাঙন ঠেকানোর জন্য কোনও বরাদ্দ দেয়নি। কপিলমুনি মন্দির রক্ষার কথাও তাঁরা ভাবেনি। রাজ্য সরকার নিজের উদ্যোগে বাংলা তথা ভারতের ঐতিহ্য গঙ্গাসাগরকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।’’

স্থানীয় বিজেপি নেতা অরুণাভ দাসের কথায়, ‘‘কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা রাজ্যে পাঠানো হলেও বলা হচ্ছে বঞ্চনা করা হচ্ছে। দুর্নীতির কারণে রাজ্য বিভিন্ন খাতে খরচের হিসেব এখনও দিতে পারেনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গঙ্গাসাগর বা কপিলমুনি আশ্রম নিয়ে কেন্দ্র যে কাজ করবে, তার মাস্টারপ্ল্যান কেন্দ্রে জমা করতে হবে। সংসদে শুধু বললেই হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ganga sagar Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE