Advertisement
০৬ মে ২০২৪
ঠাকুরনগরে মতুয়া ধর্ম মহামেলা

পুণ্যস্নানের আবেগে ভাসলেন মতুয়া ভক্তেরা

কামনা সাগরের পাড়ে দাঁড়িয়ে শনিবার রাতে ঘন ঘন নিজের মোবাইলে সময় দেখছিলেন ঝাড়খণ্ড থেকে আসা বিমল বিশ্বাস। মাহেন্দ্রক্ষণ, রাত ১টা ৫ মিনিটে গেঞ্জি-ধুতি খুলে নেমে পড়লেন কামনা সাগরের জলে।

স্নান: মতুয়া ভক্তদের স্নান। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

স্নান: মতুয়া ভক্তদের স্নান। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

সীমান্ত মৈত্র
ঠাকুরনগর শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৭ ০২:৪৫
Share: Save:

কামনা সাগরের পাড়ে দাঁড়িয়ে শনিবার রাতে ঘন ঘন নিজের মোবাইলে সময় দেখছিলেন ঝাড়খণ্ড থেকে আসা বিমল বিশ্বাস। মাহেন্দ্রক্ষণ, রাত ১টা ৫ মিনিটে গেঞ্জি-ধুতি খুলে নেমে পড়লেন কামনা সাগরের জলে। ডুব দিয়ে উঠতেই চোখে-মুখে ছড়িয়ে পড়ল তৃপ্তি। বললেন, ‘‘এই স্নান বড় পুণ্যের। তাই প্রতি বছর দল বেঁধে ঠাকুরবাড়িতে ছুটে আসি।’’

পাড়ে ছিলেন শিলিগুড়ি থেকে আসা দীনেশ রায় এবং কোচবিহারের নৃত্যম সরকার। স্নান শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরে তাঁরা জলে নামেন। কেন এত দূর থেকে পুণ্যস্নানের জন্য ছুটে আসেন? নৃত্যমবাবুর কথায়, ‘‘সবটাই বিশ্বাস থেকে। আমরা বিশ্বাস করি, কামনা সাগরে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতে স্নান করে মনোবাসনা পূরণ হয়।’’ এই প্রসঙ্গেই তিনি জানালেন, এক ছেলে জন্মের সময়েই মারা গিয়েছিল। পুণ্যস্নান করে ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন, একটি ছেলের। পরের বছরই পুত্রসন্তান পেয়েছেন। জানালেন, এরপর থেকে প্রতিবছর স্নানের সময়ে চলে আসেন।

মেলা কমিটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এ বার প্রায় ১৫ লক্ষ মতুয়া ভক্ত পুণ্যস্নান করেছেন। মতুয়া না হলেও অনেকে এই দিন স্নান সারেন কামনা সাগরে। এমনই এক যুবক পল্লব বিশ্বাস। বললেন, ‘‘ঘড়ি ধরে স্নান সেরেছি। স্নান সম্পর্কে আগে অনেক কথা শুনেছিলাম। আগ্রহ তৈরি হয়। তাই এ বার সময়-সুযোগ পেয়ে আর হাতছাড়া করিনি।’’

শনিবার রাতে ঠাকুরবাড়ি গিয়ে দেখা গেল, মতুয়া ভক্তেরা ঠাকুরবাড়িতে ভিড় করেছেন। হাতে ডাঙ্কা-কাঁসি-শিঙা। কারও হাতে মতুয়াদের সাদা-লালা নিশান। মুখে হরিবোল। স্নান সেরে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দির দেখতে আসছেন সকলে। সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান উপদেষ্টা বীণাপানি ঠাকুরের সামনে মাতাম (মতুয়াদের নিজস্ব নাচ) চলছে। বীণাপানিদেবী ঘরের বারান্দা বসে ভক্তদের আশীর্বাদ করছেন।

গোটা ঠাকুরনগর জুড়ে এখন মেলা। কেনা-কাটা, খাওয়া-দাওয়া চলছে। সকালে বাড়ি ফিরে যাওয়ার আগে সকলেরই মন খারাপ। সামনের বছর ফের পুণ্যস্নানের প্রত্যাশা নিয়ে বাড়িমুখো হচ্ছেন একে একে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Matua Mela Pilgrims
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE