Advertisement
০২ মে ২০২৪
উদ্ধার পেলেন ১৮ জন মৎস্যজীবীই
kakdwip

Kakdwip: ‘ঠিক করেছিলাম, কেউ কাউকে ছেড়ে যাব না’

একটি জায়গা থেকে এক সঙ্গে ভাসতে থাকা ছ’জন মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করা হয়। রাতেই তাঁদের কাকদ্বীপে আনা হয়।

শুশ্রূষা: হাসপাতালে আনা হয়েছে মৎস্যজীবীদের। ছবি: সমরেশ মণ্ডল

শুশ্রূষা: হাসপাতালে আনা হয়েছে মৎস্যজীবীদের। ছবি: সমরেশ মণ্ডল

নিজস্ব প্রতিবেদন
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২২ ০৯:১৬
Share: Save:

লাইফ জ্যাকেটই বাঁচাল জীবন, বলছেন ওঁরা।

বঙ্গোপসাগরে দু্র্ঘটনাগ্রস্ত ট্রলার এফবি সত্যনারায়ণের ১৮ মৎস্যজীবীকেই উদ্ধার করা গিয়েছে। শুক্রবার বঙ্গোপসাগরের কেঁদো দ্বীপ থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে ট্রলারটি ডুবে যায়। সকলে লাইফ জ্যাকেট পরে জলে ভেসে পড়েন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নানা দফায় উদ্ধার করা হয় সকলকে।

কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী সংগঠন সূত্রের খবর, শুক্রবার একটি ট্রলার উদ্ধার করেছিল সাতজনকে। কিছুক্ষণ পরে অন্য একটি জায়গা থেকে এক সঙ্গে ভাসতে থাকা ছ’জন মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করা হয়। রাতেই তাঁদের কাকদ্বীপে আনা হয়।

দুর্যোগের জেরে ওই দিন আর উদ্ধারের কাজ চালানো যায়নি। শনিবার সকালে কেঁদো দ্বীপের কাছে একটি চরায় বাকি পাঁচজনকে দেখতে পায় উদ্ধারকারী দল। সকলেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের আনা হয় পাথরপ্রতিমার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। পরে নিয়ে যাওয়া হয় কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে।

ডুবে যাওয়া ট্রলারের মাঝি শ্যামল দাস বলেন, “দুর্যোগের খবর পেয়ে আমরা উপকূলের দিকে ফিরছিলাম। ছাইমারি দ্বীপের কাছে একটি চরায় ট্রলার আটকে গেল। পরিস্থিতি খারাপ বুঝে অন্যান্য ট্রলারে খবর পাঠানো হয়। ততক্ষণে পাটাতন ফেটে জল ঢুকছে। উল্টে যায় ট্রলার। লাইফ জ্যাকেট পরে নদীতে ঝাঁপ দিই সকলে। লাইফ জ্যাকেট ছিল বলেই প্রাণে বেঁচেছি।” শনিবার উদ্ধার হওয়া পাঁচজনের মধ্যে ছিলেন অক্ষয়নগরের বাসিন্দা কালী দাস। তিনি বলেন, “ট্রলার ডুবে যাওয়ার আগে আমরা চারটি দলে ভাগ হয়ে গিয়েছিলাম। প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, যে দলে যতজন আছি, কেউ কাউকে ছেড়ে যাব না। আমরা পাঁচজন কেঁদো দ্বীপ থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছিলাম। সারা রাত ভেসেছি। কিন্তু কেউ কাউকে ছেড়ে যাইনি। শনিবার ভোরে একটি চরায় এসে উঠি।”

কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু রায় বলেন, “প্রাথমিক চিকিৎসার পরে পাঁচজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি ১৩ জনকে হাসপাতালে রাখা হলেও তেমন কোনও বিপদের আশঙ্কা নেই।”

অন্য দিকে, শুক্রবার মাঝসমুদ্রে উল্টে যায় একটি বাংলাদেশি ট্রলার। সেখানে থাকা ১১ জন মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করে রায়দিঘিতে আনা হয়েছে। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশের মৈপুর মৎস্যবন্দর থেকে বেরিয়েছিল ‘স্বাধীন’ নামে ট্রলারটি। মাঝপথে উত্তাল সমুদ্রে উল্টে যায়। ১১ জন মৎস্যজীবী ভাসতে থাকেন। মালবিকা নামে দিঘার একটি ট্রলার তাঁদের উদ্ধার করে পাথরপ্রতিমার কুয়েমুড়িতে আনে। সেখান থেকে শনিবার সকালে তাঁদের আনা হয় রায়দিঘির সাউথ সুন্দরবন ফিশারম্যান ও ফিশ ওয়ার্কার ইউনিয়নের অফিসে।

ট্রলারের মাঝি রহিম মোল্লা বলেন, “মাঝ সমুদ্রে ট্রলার বিকল হয়ে যায়। সে সময়ে সমুদ্র উত্তাল ছিল। হঠাৎ উল্টে গিয়ে ডুবে যায় ট্রলার। ঘণ্টা দেড়েক সমুদ্রে ভেসে থাকার পরে ভারতীয় ট্রলার আমাদের উদ্ধার করে।”

ইউনিয়নের সম্পাদক হারাধন ময়রা বলেন, “পুলিশের নির্দেশে মৎস্যজীবীদের আপাতত আমাদের অফিসে রাখা হয়েছে। খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। নতুন পোশাক দেওয়া হয়েছে।” মথুরাপুর ২ বিডিও তাপসকুমার দাস জানান, বাংলাদেশি মৎস্যজীবীদের দেশে ফেরানোর বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kakdwip Fishermen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE