Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মাটি খুঁড়ে উদ্ধার নিখোঁজ মহিলার দেহ

বোন নিখোঁজ ছিলেন দু’দিন ধরে। পুলিশকে জানিয়েও খোঁজ মেলেনি তাঁর। শেষ পর্যন্ত বাড়ি থেকে কিছু দূরে একটি খেত থেকে নিজেই বোনের মৃতদেহ খুঁজে বের করলেন দিদি। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বছর চল্লিশের ওই মহিলাকে।

এখান থেকেই উদ্ধার হয়েছে দেহ। নিজস্ব চিত্র।

এখান থেকেই উদ্ধার হয়েছে দেহ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৬ ০৭:৪৮
Share: Save:

বোন নিখোঁজ ছিলেন দু’দিন ধরে। পুলিশকে জানিয়েও খোঁজ মেলেনি তাঁর। শেষ পর্যন্ত বাড়ি থেকে কিছু দূরে একটি খেত থেকে নিজেই বোনের মৃতদেহ খুঁজে বের করলেন দিদি। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বছর চল্লিশের ওই মহিলাকে।

শনিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁর নকফুলে। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে থানায় ওই মহিলার পরিবারের তরফে নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। দেহ উদ্ধারের পরে মহিলার পরিবারের সন্দেহ তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় জানান, একটি খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে মহিলাকে খুনের আগে ধর্ষণ করা হয়েছিল কিনা তা ময়না-তদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা যাবে। দেহটি পচতে শুরু করেছিল। কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় খেতমজুর বছর চল্লিশের ওই মহিলা বৃহস্পতিবার সকালে ফকিরবাগানে কাজে গিয়েছিলেন। দুপুর ১টা নাগাদ বাড়ি ফিরে তিনি জানান মাঠ থেকে জ্বালানির কাঠ আনতে যাচ্ছেন। ফিরে এসে খাবেন। তারপর থেকেই ওই মহিলা নিখোঁজ ছিলেন। বছর ষোলো আগে তাঁর স্বামী বাংলাদেশে চলে যান। তিন মেয়েকে নিয়ে মহিলা একাই থাকতেন। এক প্রতিবেশী জানান, ওই দিন সন্ধ্যায় মহিলার বড় মেয়ে মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে তাঁদের জানান। খবর দেওয়া হয় তাঁর আত্মীয়-স্বজনকে। কিন্তু কোথাও তাঁর খোঁজ মেলেনি।

এরপরেই গ্রামের লোকজনও নিয়ে ওই মহিলার দিদি বোনের খোঁজ শুরু করেন। বোনের বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে যেতেই একটি খেত থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে থাকে। সন্দেহ হয় তাঁদের। সামনে গিয়ে দেখেন শুকনো কলাপাতা দিয়ে ঢাকা একটি জায়গা। পাতা সরাতেই দেখা যায় মাটি খুঁড়ে ফের চাপা দেওয়া হয়েছে। এরপরেই খবর পেয়ে পুলিশ এসে মাটির তলা থেকে ওই মহিলার অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার করে। দেহটি তাঁরই বোনের বলে শনাক্ত করেন দিদি।

রবিবার সকালে গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, টালির ঘরে বসে তিন বোন কাঁদছেন। গ্রামবাসীরা জানান, মহিলা খুবই ভাল, মিশুকে ছিলেন। অনেক কষ্ট করে মেয়েদের পড়াশোনা শিখিয়ে বড় করছিলেন। তাঁর এমন পরিণতি মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। ওই মহিলার বড় মেয়ে বলেন, ‘‘কলেজে আমার পরীক্ষা চলছে। বোনরাও ছোট, স্কুলে পড়ে। এখন কী ভাবে চলবে বুঝতে পারছি না।’’

ঘটনাস্থলের পাশের পাটখেত থেকে পুলিশ একটি গামছা উদ্ধার করেছে। কিছু জায়গায় পাটগাছগুলি নুইয়ে পড়েছিল। বাসিন্দাদের অনুমান, ওই পাটখেতেই মহিলাকে মুখে গলায় গামছা পেঁচিয়ে খুন করে পরে মাটি খুঁড়ে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Body Recovered Missing Woman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE