Advertisement
E-Paper

আদিবাসী গ্রামে প্রথম মাধ্যমিক উত্তীর্ণ মিতা 

মদ্যপ অবস্থায় যত বার বাবা এসে হুজ্জুত করত, মারধর করত মা-মরা মেয়েকে, বলত, পড়াশোনা করে কিছু হবে না— ততই যেন জেদ চেপে বসত মিতার। সেই জেদের জোরেই এ বার মাধ্যমিক পাস করল মেয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২০ ০৫:৩৩
মিতা সর্দারের ছবি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক 

মিতা সর্দারের ছবি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক 

মদ্যপ অবস্থায় যত বার বাবা এসে হুজ্জুত করত, মারধর করত মা-মরা মেয়েকে, বলত, পড়াশোনা করে কিছু হবে না— ততই যেন জেদ চেপে বসত মিতার। সেই জেদের জোরেই এ বার মাধ্যমিক পাস করল মেয়ে। আদিবাসী পরিবারের মেয়ে মিতা সর্দার আর তার তিন ভাইবোনের জন্য অবশ্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বৃদ্ধা দিদিমা লবঙ্গও। বিধবা ভাতার টাকা পান। অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। কখনও ভিক্ষের ঝুলি নিয়েও বেরোতে হয়। আর আকন্দ ফুলের মালা তৈরির কাজ করে গাইঘাটার পূর্ব বারাসত এলাকার বেলতলার বাসিন্দা মিতা। দু'জন গৃহশিক্ষক থাকলেও টাকার অভাবে তাঁদের কাছে আর পড়তে পারেননি মিতা। মাধ্যমিকে ১৯৪ পেয়ে একটা রেকর্ড করে ফেলেছে সে। নিজের গ্রামের প্রথম আদিবাসী মেয়ে হিসাবে মাধ্যমিক পাশ করেছে। গ্রামে প্রায় আড়াইশো আদিবাসী পরিবারের বাস। মিতার সাফল্যে খুশি তাঁরা। স্থানীয় পাঁচপোতা এলাকায় সুকান্ত পাঠাগারের পক্ষ থেকে মিতা এবং তাঁর দিদিমাকে বৃহস্পতিবার মিষ্টি ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। পাঠাগারের সম্পাদক অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘পরবর্তীতে মিতার পড়াশোনার সমস্ত দায়িত্ব আমরা পাঠাগারের তরফে বহন করব। আদিবাসী মেয়ে হিসেবে নিজের গ্রাম থেকে ও প্রথম মাধ্যমিক পাশ করল। আমরা ওর জন্য গর্বিত।’’ পাঁচপোতা ভারাডাঙা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী মিতা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তুষার বিশ্বাস, ‘‘ওর সাফল্য আমরা খুশি। আগামী দিনে ওর যাতে পড়াশোনায় কোনও অসুবিধা না হয়, আমরা তা দেখব।’’

চার ভাইবোনের মধ্যে মিতা বড়। বাকিরাও পড়াশোনা করে। নিজের পড়ার পাশাপাশি ভাইবোনদেরও পড়াতে চায় মিতা। আমপানে গাছের ডাল পড়ে ঘরের টালি ভেঙে গিয়েছে। অরূপ ত্রিপলের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তা দিয়েই ছাউনি দিয়েছে মিতা।

এখানেই থামতে রাজি নয় সে। লক্ষ্য স্থির করে ফেলেছে। মিতার কথায়, ‘‘পুলিশ অফিসার হতে চাই। সমাজের কাজ করব।’’ অশক্ত শরীরে বৃদ্ধা লবঙ্গ বলেন, ‘‘আমার যত কষ্টই হোক, নাতনির স্বপ্ন আমি সফল করবই।’’

madhyamik exam 2020 tribal village education
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy