Advertisement
E-Paper

মেলায় মিলল পাঁচশোরও বেশি চাকরি

নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে নাম নথিভুক্ত করে মেলায় হাজির হয়েছিলেন সুন্দরবন-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তের এক হাজারের বেশি আবেদনকারী।

প্রসেনজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:৩০
বাসন্তীতে সুন্দরবন কৃষ্টিমেলা ও লোকসংস্কৃতি উৎসবে চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতে নাম নথিভুক্ত করছেন বেকাররা।

বাসন্তীতে সুন্দরবন কৃষ্টিমেলা ও লোকসংস্কৃতি উৎসবে চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতে নাম নথিভুক্ত করছেন বেকাররা।

মাছ-কাঁকড়া ধরা বা জঙ্গলে ঝুঁকি নিয়ে মধু সংগ্রহ করতে যাওয়া ছাড়া সুন্দরবন এলাকার অধিকাংশ মানুষ চাষাবাদ বা দিনমজুরি করেন। অনেকে আবার ভিন্‌ রাজ্যে কাজে যান। ভাল ভাবে বাঁচার স্বপ্ন অধরাই থেকে যায় অনেকের। এ বার সেই সুন্দরবনে কর্মসংস্থানের দিশা দেখাল বাসন্তীর কুলতলিতে আয়োজিত ‘সুন্দরবন কৃষ্টিমেলা ও লোকসংস্কৃতি উৎসব’। মেলায় মিলল পাঁচশোরও বেশি চাকরি।

মেলার মঞ্চ থেকে সুন্দরবনের মানুষের দাবি-দাওয়া বছরের পর বছর ধরে তুলে ধরছে স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত ওই মেলা। এ বার ২৭তম বর্ষের মেলা শুরুই হয়েছিল কর্মসংস্থানের দাবিকে সামনে রেখে। কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘বোর্ড অব প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং’-এর ব্যবস্থাপনায় মেলা প্রাঙ্গণে ‘চাকরি মেলা’ হয় বুধবার। সেখানে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার কয়েকশো বেকার যুবক-যুবতীর হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়।

নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে নাম নথিভুক্ত করে মেলায় হাজির হয়েছিলেন সুন্দরবন-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তের এক হাজারের বেশি আবেদনকারী। সাক্ষাৎকার নিতে এসেছিল ২০টি নামী সংস্থা। সাক্ষাৎকার শেষে সরাসরি নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয় যোগ্য প্রার্থীদের হাতে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ আশপাশের রাজ্যে ওই সব সংস্থার অফিসে তাঁরা নিযুক্ত হবেন বলে জানিয়েছে মেলা কমিটি। বেতন ১৮-২৬ হাজার টাকা।

মেলা কমিটির চেয়ারম্যান লোকমান মোল্লা জানান, সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় চাষবাস ছাড়া বিকল্প কর্মসংস্থানের তেমন সুযোগও নেই। স্নাতক হয়েও চাকরির সুযোগ না পেয়ে হতাশায় ভুগছেন অনেকেই। এই শিক্ষিত বেকারদের কথা মাথায় রেখেই ‘চাকরি মেলা’র আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, সারা রাজ্যের ছেলেমেয়েরাই এখানে আবেদন করেছেন। তবে, সুন্দরবনের ছেলেমেয়েদের অগ্রাধিকার দিতে এই এলাকাকেই ‘মেলার ক্ষেত্র’ হিসেবে বেছেনেওয়া হয়েছে। লোকমান বলেন, “সুন্দরবন এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের কাছে আশার আলো নিয়ে এল এই চাকরির মেলা। ভবিষ্যতে এ ভাবেই এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য চেষ্টা জারি থাকবে।” এ বিষয়ে বোর্ড অব প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিংয়ের তরফে আকাশ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সুন্দরবনের মতো প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় এত বড় পরিসরে এ ধরনের চাকরির মেলা এই প্রথম। এলাকার ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে বিপুল সাড়া মিলেছে।”

চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে সাহিন সর্দার, সুখেন্দু দাসেরা বলেন, “সরকারি চাকরির জন্য ঘুরে ঘুরে হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। মেলায় চাকরি পেয়ে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছি।”

এই মেলা বরাবরই সুন্দরবনের মানুষের দাবি আদায়ের মঞ্চ হিসেবে বড় ভূমিকা পালন করেছে। এ বার মেলার অন্য দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে— ক্যানিং থেকে ঝড়খালি পর্যন্ত থমকে যাওয়া রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ শুরু করা, ক্যানিংয়ে মাতলা নদীর চরেউপকূলীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা এবং ক্যানিং মহকুমায় ফৌজদারি আদালত চালু করা। ১০ দিনের মেলা শেষ হল শুক্রবার।

basanti
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy