পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি এক তৃণমূল নেতাকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা করল দুষ্কৃতীরা। তাঁকে লক্ষ্য করে গুলিও চালানো হয় বলে অভিযোগ।
সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট থানার সোলাদানার কাছে বেলতলায়। পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় বসিরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি প্রশান্ত ঘোষ এবং হাসানুর মোল্লা নামের এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। প্রশান্তের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বসিরহাট থানার আইসি সুরিন্দার সিংহ বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে।’’ এ দিকে এই ঘটনায় বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছে তৃণমূল। তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনায় জড়িত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রাত ৯টা নাগাদ দণ্ডিরহাট বাজার থেকে কাজ মিটিয়ে বাইকে করে সোলাদানায় বাড়িতে ফিরছিলেন প্রশান্ত। দুষ্কৃতীরা আগে থেকেই সোলাদানার কাছে বেলতলায় অপেক্ষা করছিল বলে অভিযোগ। প্রশান্ত হাম্পে বাইকের গতি কম করতেই কয়েকজন তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। টাল সামলাতে না পেরে রাস্তার মধ্যে ছিটকে পড়েন প্রশান্ত। সেই সুযোগে দুষ্কৃতীরা বাঁশ, লাঠি, রড দিয়ে তাঁকে মারতে শুরু করে। ওই সময়ে সেখান দিয়ে একটি বাইকে চারজন যাচ্ছিলেন। অন্ধকার রাস্তার মধ্যে একটি বাইক ও একজনকে পড়ে থাকতে দেখে তাঁরা মনে করেন, হয়তো দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাঁরা বাইক দাঁড় করাতেই দুষ্কৃতীরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায়। ওই সময়ে দুষ্কৃতীদের ছোড়া একটা গুলি লাগে হাসানুর মোল্লার পায়ে। ততক্ষণে অবশ্য চিৎকার চেঁচামেচিতে আশপাশের লোক জড়ো হয়ে যান। তাঁরাই আহত দু’ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
প্রশান্ত বলেন, ‘‘ঘটনার সময় একটা বাইক না আসলে দুষ্কৃতীরা আমাকে মেরে ফেলত। আমার কোনও শত্রু নেই। তা সত্ত্বেও কেন যে দুষ্কৃতীরা হামলা চালাল, তা বুঝতে পারছি না।’’ দলীয় নেতার উপর হামলার ঘটনায় বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রশান্তের সঙ্গে টাকা পয়সা নিয়ে কয়েকজনের একটা সমস্যা হচ্ছিল। সেই সুযোগ নিয়ে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁর উপর হামলা চালিয়ে খুনের চেষ্টা করে। আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদ করছি।’’
এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করে বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তারক ঘোষ বলেন, ‘‘প্রশান্তের উপর আক্রমণ আসলে দলীয় কোন্দলের জেরে ঘটেছে। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। এখন নিজেদের দোষ ঢাকতে তৃণমূল মিথ্যা কথা বলছে।’’