Advertisement
E-Paper

গলার নলি কেটে ‘প্রতিশোধ’, ধৃত ৩

বাড়িতে চুরি হওয়ার পর দুষ্কৃতীদের নাম স্থানীয় বাসিন্দাদের জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এটাই ছিল মহিলার ‘অপরাধ’। এরপর ওই তিন দুষ্কৃতীকে এলাকাবাসী মেরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। ঘটনার এক বছর পর সোমবার ওই দুষ্কৃতীরাই মহিলার বাড়িতে এসে গভীর রাতে ধারাল অস্ত্র দিয়ে গলার নলি কেটে, পেটে কোপ মেরে তাঁকে খুনের চেষ্টা করল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৫ ০২:৫৭
ধৃত কালু দাস। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

ধৃত কালু দাস। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

চোরেদের নাম সবাইকে বলে দিয়েছিলেন মহিলা। ধরা পড়ে গিয়ে চোরেরা শাসিয়েছিল, ছাড়া পেলে দেখে নেবে। হল-ও ঠিক তাই। জামিনে মুক্ত দুষ্কৃতীরা সোমবার গভীর রাতে ওই মহিলার গলা, পেটে কোপ মেরে খুনের চেষ্টা করল। শরীরে ৫০টিরও বেশি ক্ষত নিয়ে অনুপমা দাস (৪৮) ভর্তি বারাসত হাসপাতালে।

ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার বিষ্ণুপুর এলাকার। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার তল্লাশি চালিয়ে স্বরূপনগর গাইঘাটা এবং হাবরা এলাকা থেকে অভিযুক্ত তিন দুষ্কৃতীকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম, রবীন ওরফে কালু দাস, রামকৃষ্ণ দাস এবং সুকুমার দাস। দলের পাণ্ডা কালু। তার বাড়ি নদিয়ার হরিণঘাটায় হলেও, সে বিষ্ণুপুরে মামার বাড়িতে থাকত। চোর বলে এলাকায় পরিচিতি ছিল তিনজনেরই। ধৃতদের বনগাঁ আদালতে তোলা হলে কালুকে চারদিনের পুলিশি হেফাজত এবং বাকিদের ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ হয়েছে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চুরির ঘটনায় দুষ্কৃতীদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্যই এই ঘটনা।’’ বছরখানেক আগে অনুপমাদেবী ছাগল বিক্রি করে হাজার পাঁচেক টাকা পান। সেই খবর পেয়ে কালু তার দুই সঙ্গী নিয়ে তাঁর বাড়ি থেকে নগদ টাকা এবং একটি মোবাইল চুরি করেছিল। বিষয়টি অনুপমাদেবী জানিয়ে দিলে এলাকার মানুষের চাপে কালু মহিলাকে পাঁচ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল। পুলিশ কালুকে গ্রেফতার করলে সে হুমকি দিয়েছিল, জেল থেকে বেরিয়ে এসে দেখে নেবে। মাস পাঁচেক আগে সে জামিনে ছাড়া পায়, কিন্তু ওই এলাকায় বাসিন্দাদের চাপে ঢুকতে পারছিল না। সে সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। সোমবার সুযোগ বুঝে হামলা করে তারা।

অনুপমাদেবী বাড়িতে একাই থাকেন। সে দিন রাত দেড়টা নাগাদ আওয়াজ পেয়ে অনুপমাদেবী আলো জ্বালিয়ে বাইরে বেরিয়েছিলেন। তখন বৃষ্টি পড়ছিল। অভিযোগ, মহিলা ঘরের বাইরে আসতেই তিন দুষ্কৃতীর এক জন তাঁর মুখ চেপে ধরে। কালু ধারালো অস্ত্র দিয়ে পেটে আঘাত করে। অনুপমাদেবীর মেয়ে অপরূপা বলেন, ‘‘নাড়িভুড়ি বেরিয়ে গিয়েছে। ওরা নলি কাটার চেষ্টা করেছিল। মা হাত দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন, হাতেও আঘাত করেছে।’’

মহিলা মারা গিয়েছেন ভেবে দুষ্কৃতীরা পালায়। তিনি বাইরে বেরিয়ে প্রতিবেশী এক মহিলাকে জানিয়ে জ্ঞান হারান। বাসিন্দারা তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে পুলিশ তাঁকে বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠায়। চার ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার হয়। বুধবার সকালে জ্ঞান ফিরলেও কথা বলার মতো অবস্থায় নেই অনুপমাদেবী। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক।

murder police gaighata thief robber Bangaon
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy