Advertisement
১৮ মে ২০২৪

খুনি কি আগেই ছিল ঘরে, প্রশ্ন পুলিশের

নৈহাটির মাছ ব্যবসায়ী রাসমোহন ঘোষ খুনে আপাতত সেই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে পুলিশকে। রাসমোহন (বাবুয়া)-এর দেহ উদ্ধারের সময়ে তাঁর কুকুরগুলি ছিল অচেতন। ক্লোরোফর্ম জাতীয় কিছু স্প্রে করেই কুকুরগুলিকে অচেতন করা হয়েছিল।

এ ভাবেই ঘুম পাড়ানো হয়েছিল কুকুরদের। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

এ ভাবেই ঘুম পাড়ানো হয়েছিল কুকুরদের। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৩৮
Share: Save:

গেট ভেঙে আততায়ীকে ঘরে ঢুকতে হবে। তা না হলে সে খুন করবে কেমন করে? আর কোলাপসিবল গেট ভাঙা হলে তো শব্দ হওয়ার কথা। ঘরের কেউ সে শব্দ না পেলেও তিনটি কুকুর কেন সেই শব্দে জাগল না?

নৈহাটির মাছ ব্যবসায়ী রাসমোহন ঘোষ খুনে আপাতত সেই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে পুলিশকে। রাসমোহন (বাবুয়া)-এর দেহ উদ্ধারের সময়ে তাঁর কুকুরগুলি ছিল অচেতন। ক্লোরোফর্ম জাতীয় কিছু স্প্রে করেই কুকুরগুলিকে অচেতন করা হয়েছিল। কিন্তু, সে ক্ষেত্রে গেট ভেঙে খুনিকে আগে ঘরে ঢুকতে হয়েছিল। বাবুয়ার ঘরের দরজা খোলা ছিল। তা হলে কুকুরগুলি গেট ভাঙার শব্দ শুনে সহজেই ঘর থেকে বেরোতে পারত। আপাতত এই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

তদন্তকারী অফিসারেরা আরও একটি বিষয় নিয়ে ভাবছেন। খুনি কি আগে থেকেই বাবুয়ার ঘরে লুকিয়ে ছিল? বাবুয়া ঘুমিয়ে গিয়েছে দেখে আগে ঘরে ক্লোরোফর্ম ছড়িয়ে কুকুরদের ঘুম পাড়িয়ে তারপরে বাবুয়াকে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে খুন করে। পুলিশ বলছে, কুকুরদের ঘ্রাণশক্তি প্রবল হয়। ঘরে অপরিচিত কেউ থাকলে তারা সাধারণত চিৎকার করে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কি ঘরে পরিচিত কেউ ছিল? সে জন্যই কুকুরগুলি চিৎকার করেনি? আবার এমনও হতে পারে খুনিকে কুকুরগুলি আগেই দেখেছিল। কিন্তু সে পরিচিত বলেই কুকুরেরা গোল করেনি।

খুনের রহস্যভেদ করতে গেলে বাড়ির লোকেদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলা খুবই জরুরি। কিন্তু ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও পুলিশ বাবুয়ার পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলতে পারেনি। মঙ্গলবার রাতে বাড়ির লোকেদের থানায় ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তাঁরা পুলিশের সঙ্গে দেখা করেননি। বাবুয়ার পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, দাহ করা এবং বেশ কিছু পারিবারিক নিয়মের জন্য তাঁরা যেতে পারেননি। বুধবার রাতে অবশ্য পুলিশ তাঁদের সঙ্গে কথা বলে।

ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (জোন ১) কে কান্নন বলেন, ‘‘আমরা বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা কী জানিয়েছেন তদন্তের স্বার্থে এখনই তা জানাচ্ছি না। খুব শীঘ্রই তা জানানো হবে।’’

বছর দু’য়েক আগে ভিনরাজ্যে গিয়ে খুন হন বাবুয়ার মেজ দাদা। এই খুনের সঙ্গে ওই ঘটনার কোনও যোগ রয়েছে কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বাবুয়ারা মোট পাঁচ ভাই। তার মধ্যে দুই ভাই খুন হলেন। বাবুয়া বিয়ে করেননি। ফলে তাঁর সম্পত্তির কোনও দাবিদার নেই।অন্য দিকে, নৈহাটির হাজিনগরের তৃণমূল কর্মী রাজু বাল্মিকী খুনের ঘটনায় পুলিশ আর কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এই ঘটনায় মঙ্গলবার এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কে কান্নন জানান, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তারা এলাকা ছাড়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Crime TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE