চোখ দেখাতে এসেছিলেন পাথরপ্রতিমা থেকে নিত্যানন্দ জানা। দু’দিন অফিস ছুটি নিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ঠিকই। কিন্তু চিকিৎসক পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি।
কাকদ্বীপ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে সকাল থেকে লাইন দিয়েও চোখ দেখানোর সুযোগ পাচ্ছেন না অনেকেই। নিত্যানন্দবাবু জানান, তাঁর বাবার ছানি অপারেশনের জন্য তিনি হাসপাতালে এসেছিলেন। এত ভিড়ে আউটডোরের জানালা পর্যন্তও পৌঁছতে পারেননি। কারণ চক্ষু বিভাগে মাত্র একজন চিকিৎসক। ফলে ছানি থেকে শুরু করে চোখের নানা অস্ত্রোপচার হচ্ছে হাতে গোনা কয়েকটি। গ্লকোমা টেস্ট, পাওয়ার টেস্ট কিছুই ঠিকমতো হচ্ছে না। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পরিকাঠামো ছাড়াই চালু করে দেওয়া হয়েছিল কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চক্ষু বিভাগ। তাই এই অবস্থা। রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা কাকদ্বীপের বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা বলেন, ‘‘হাসপাতালে চিকিৎসক পাঠানোর বদলে তুলে নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি, চক্ষু বিভাগের পরিকাঠামো বাড়ানোর জন্য চেষ্টা চলছে।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে ওই বিভাগে তিন জন চিকিৎসক ছিলেন। একজন চিকিৎসক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। আরও একজনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ছিল বলে তাঁকে শোকজ করা হয়েছে। এখন ওই বিভাগ চলছে কার্যত একজন চিকিৎসকের ভরসায়। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই রোগী বা তাঁর পরিবারের সদস্যদের ফিরে যেতে হচ্ছে হাসপাতাল থেকে। হাসপাতালের সুপার রাজর্ষি দাস বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে এ সব নিয়ে কথাবার্তা চলছে, সমাধান হয়ে যাবে।’’
গত বছর হাসপাতাল চালু হওয়ার সময় থেকেই একটি গ্লকোমা ক্লিনিক চালু করা হয়েছে। সেখানে টেস্ট হওয়ার কথা ছিল। কলকাতা থেকে মাসে দু’দিন সরকারি চিকিৎসকও আসেন। কিন্তু এখনও এসে পৌঁছয়নি গ্লকোমা টেস্টের যন্ত্রপাতি। চোখের পাওয়ার টেস্টের জন্য দু’জন অপ্টোমেট্রিস্টের বদলি হয়ে হাসপাতালে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। তা এখনও হয়ে ওঠেনি। কবে এই পরিকাঠামোগুলি হাসপাতাল পাবে, তারও কোনও উত্তর কর্তৃপক্ষের কাছেও নেই।
ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার চক্ষু সংক্রান্ত নোডাল অফিসার স্বাগতেন্দ্রনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘চিকিৎসক প্রয়োজন। গ্লকোমার যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। এই দু’টি বিষয় স্বাস্থ্য ভবনে বলা হয়েছে। এখন স্বাস্থ্যভবন কবে দিতে পারছে, সেই অপেক্ষায় রয়েছি।’’ অপটোমেট্রিস্ট প্রসঙ্গে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, আর কিছুদিনের মধ্যেই অপ্টোমেট্রিস্টরা কাজে যোগ দেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy