Advertisement
E-Paper

ছাদই নেই, শৌচালয়ে যান না কেউ

শিশু কোলে এক মহিলা নামলেন ভ্যাবলা স্টেশনে। জানতে চাইলেন, শৌচালয় কোন দিকে। প্রশ্ন শুনে এক গাল হাসলেন এক হকার। বললেন, ‘‘দিদিভাই, এখানে মেয়েদের জন্য এমন ব্যবস্থা নেই।’’

নির্মল বসু

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩১
পুরুষ শৌচালয়ের পাশেই ছাদহীন মহিলা শৌচালয়। নিজস্ব চিত্র

পুরুষ শৌচালয়ের পাশেই ছাদহীন মহিলা শৌচালয়। নিজস্ব চিত্র

শিশু কোলে এক মহিলা নামলেন ভ্যাবলা স্টেশনে। জানতে চাইলেন, শৌচালয় কোন দিকে। প্রশ্ন শুনে এক গাল হাসলেন এক হকার। বললেন, ‘‘দিদিভাই, এখানে মেয়েদের জন্য এমন ব্যবস্থা নেই।’’

পরিস্থিতি বুঝে মহিলা দ্রুত পা চালালেন গন্তব্যের দিকে। হঠাৎ চোখে পড়ল, একটা ঘুপচি ধরের গায়ে ‘মহিলা’ লেখা। শৌচালয় খুঁজে পেয়েছেন মনে করে মনে বল পেলেন মহিলা। কিন্তু কাছে গিয়ে দেখলেন, দরজা ভাঙা। বুঝলেন, কেন হকারের কাছ থেকে এমন উত্তর পেয়েছিলেন। পাশেই এক সহযাত্রী পরামর্শ দিলেন, লাইনের ধারে কারও বাড়িতে চলে যান। ভ্যাবলা স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের শেষ দিকে পুরুষ-মহিলাদের পাশাপাশি ভাঙাচোরা এবং নোংরা দুর্গন্ধে ভরা বাথরুম আছে বটে, কিন্তু মাথায় ছাদ নেই। ভিতরে মল ও আবর্জনায় ভরা। মাঝে কেবল বুক সমান একটা পাঁচিল। ছেলেদের থেকে মেয়েদের দিকের পাঁচিল একটু উচুঁ। তার এক পাশে দাঁড়ালে অন্য পাশে থাকা মানুষ স্পষ্ট দেখা যায়। সেখানেই বাধ্য হয়ে বাথরুম করছেন কয়েক জন পুরুষ যাত্রী। খোলা আকাশের নীচে দরজা-বিহীন বাথরুমে ঢোকেন না মহিলারা।

পাশে এক দোকানি কাদের মোল্লা ভাঙা দরজার অংশ দেখিয়ে বললেন, ‘‘অনেক দিন থেকে চলছে এই পরিস্থিতি। আমাদেরও খারাপ লাগে।’’ জানা গেল, স্টেশনের ব্যবসায়ীরাই মহিলাদের বাথরুমে প্রথমে চট, পরে কাঠের দরজা লাগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ছাদ-বিহীন বাথরুমে মহিলারা ঢুকতে ইতস্তত বোধ করেন। ক্ষুব্ধ মানুষজন বাথরুমের দরজাই ভেঙে দিয়েছিলেন এক সময়ে।

শিয়ালদহ থেকে বসিরহাটে অফিসে আসেন করুণা সরকার। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মতো বহু মহিলাকেই কলকাতা থেকে এখানে আসতে হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা ট্রেনে বসে থেকে অনেকেরই শৌচালয়ে যাওয়ার দরকার পড়ে। অথচ প্ল্যাটফর্মে সেই ব্যবস্থা নেই। ক’দিন আর আশেপাশের বাড়িতে ছোটা যায় বলুন!’’ কাঞ্চনা ভৌমিক আসেন বারাসত থেকে বসিরহাটে। তাঁকে নামতে হয় ভ্যাবলা স্টেশনে। ওই মহিলা বলেন, ‘‘কেউ কখনও শুনেছেন, ছাদ-বিহীন একই জায়গায় পাশাপাশি পুরুষ-মহিলাদের বাথরুমের কথা? যাঁরা স্টেশনের বাথরুমের দরজা ভেঙে দিয়েছিলেন, আমার মনে হয় ঠিকই করেছেন।’’ যাত্রীদের অনেকেরই প্রশ্ন, টিকিট না কাটলে যখন জরিমানা দিতে হয়, তা হলে যাত্রীদের সামান্য সুবিধার দিকে নজর দেবে না কেন রেল? মহিলা শৌচালয়ের এমন বিচিত্র নকসা কার মাথা থেকে বেরোলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিস্মিত যাত্রীরা।

Ladies toilet Bhyabla station Basirhat বসিরহাট
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy