Advertisement
E-Paper

খড়ের ছাউনিতেই চলছে ক্লাস

খড়ের ছাউনি দেওয়া একটি ঘর। মেঝেতে চাটাই পাতা। কোনওরকমে গাদাগাদি করে বসে সেখানেই চলছে শিশুদের পঠনপাঠন। মথুরাপুর ১ ব্লকের তেওয়ানি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রটির এমনই দশা। এলাকায় শিক্ষা প্রসারের জন্য এই শিশুশিক্ষাকেন্দ্রটি চালু করা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু এই কেন্দ্রের পরিকাঠামো এতটাই খারাপ যে একটু বৃষ্টি হলেই স্কুল ছুটি দিতে হয়।

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৬ ০১:৫৮
চলছে পঠনপাঠন। নিজস্ব চিত্র।

চলছে পঠনপাঠন। নিজস্ব চিত্র।

খড়ের ছাউনি দেওয়া একটি ঘর। মেঝেতে চাটাই পাতা। কোনওরকমে গাদাগাদি করে বসে সেখানেই চলছে শিশুদের পঠনপাঠন।

মথুরাপুর ১ ব্লকের তেওয়ানি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রটির এমনই দশা। এলাকায় শিক্ষা প্রসারের জন্য এই শিশুশিক্ষাকেন্দ্রটি চালু করা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু এই কেন্দ্রের পরিকাঠামো এতটাই খারাপ যে একটু বৃষ্টি হলেই স্কুল ছুটি দিতে হয়। আবার খুব বেশি রোদ উঠলেও স্কুল ছুটি থাকে। এ ভাবে শিশুদের পড়াশোনাও ঠিকমতো হয় না বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান।

মথুরাপুর ১ বিডিও মুজিবর রহমান বলেন, ‘‘ওই কেন্দ্রটির জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে। জমিও মিলেছে। কিন্তু জমির কিছু সমস্যার জন‌্য কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। জমি জট কাটাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’

শিক্ষা দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাম জমানায় গ্রামীণ এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি গড়ে ওঠে। প্রতিবন্ধী ও গ্রামের মহিলাদের কর্মসংস্থানও হয়েছিল এই শিক্ষাকেন্দ্রগুলিতে। গ্রামের একাংশ মতে, গ্রামের চেনাশোনা লোক দেখলে শিশুদেরও স্কুলের প্রতি আগ্রহ বাড়বে। মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হলেই এই স্কুলগুলিতে শিক্ষকতা করা যাবে।

সে সময় ওই ব্লকে ৪৯টি শিশুশিক্ষা কেন্দ্র অনুমোদন পায়। তার মধ্যে তেওয়ানি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রটি ২০০১ সালে তৈরি হয়। এখন ওই কেন্দ্রের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১৮২ জন। শিক্ষিকা রয়েছেন চার জন। এতবছর পরও ওই কেন্দ্রের নিজস্ব ভবন নেই। কোনওরকমে খোলা জায়গায় ক্লাস হয়।

গ্রামের এক ব্যাক্তি ফিরদৌস লস্করের জায়গায় কোনওরকমে একটি ঘর তৈরি করে পড়াশোনা চলে। পড়াচলাকালীন বৃষ্টি হলে একটি পলিথিন ঢাকতে হয়। না হলে বৃষ্টির ছাটে ভিজতে হয় পড়ুয়াদের। ফলে সে সময় বেশির ভাগ স্কুল ছুটি দিয়ে দিতে হয়।

তা ছাড়া সাপ ও বিষাক্ত পোকামাকড় ঘোরাঘোরি করে কেন্দ্রের মধ্যে। সেই কারণেও অভিভাবকেরা বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে চান না। স্কুলে জল নেই। মিড-ডে মিলের রান্নার জন্য পাড়া থেকে জল আনতে হয়। রান্নার জায়গায় কোনও ছাউনি নেই। খোলা নেই কোনও শৌচাগার।

ওই কেন্দ্রের শিক্ষিকা সামসুন নাহার, জুহুরুন নেসারারা জানান, ভবন নির্মাণের জন্য নিজের ৭ শতক জমি লিখে দিয়েছিলেন ফিরদৌস। তা প্রশাসনের লোকজন দেখেও যান। কিন্তু জমি জটের কারণে ভবনটির নির্মাণের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।

ওই কেন্দ্রের পড়ুয়া আক্রম হোসেন মোল্লা, রেজিনা হালদারা বলে, ‘‘সরকার থেকে বুট জুতো দিয়েছে। কিন্তু পরে আসার মত অবস্থা নেই ওই কেন্দ্রে। নতুন ভবন হলে আমরাও বুট জুতো পরে স্কুলে যেতে পারতাম।’’

Classroom Student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy