Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রক্ষী নেই বেশির ভাগ এটিএমে

এটিএম থেকে টাকা তুলে প্রতারণার অভিযোগ উঠছে প্রায়ই। বনগাঁয় এটিএমের ক্যানসেল বোতামে আঠা লাগিয়ে রেখে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এর আগে। এই পরিস্থিতিতে এটিএম কাউন্টারগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখল হাবড়া থানার পুলিশ।

ফাঁকা: নেই নিরাপত্তারক্ষী। ছবি: সুজিত দুয়ারি

ফাঁকা: নেই নিরাপত্তারক্ষী। ছবি: সুজিত দুয়ারি

সীমান্ত মৈত্র
বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৮ ০২:২৫
Share: Save:

এটিএম থেকে টাকা তুলে প্রতারণার অভিযোগ উঠছে প্রায়ই। বনগাঁয় এটিএমের ক্যানসেল বোতামে আঠা লাগিয়ে রেখে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এর আগে। এই পরিস্থিতিতে এটিএম কাউন্টারগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখল হাবড়া থানার পুলিশ।

মঙ্গলবার সকালে পুলিশ শহরের বিভিন্ন এটিএম কাউন্টারে তদন্তে যায়। পুলিশ জানায়, এটিএমগুলির সামনে থানার ফোন নম্বর দেওয়া হবে। মানুষ কোনও সন্দেহজনক কিছু দেখলে দ্রুত পুলিশকে খবর দিতে পারে, সে জন্যই এমন করা হচ্ছে। রক্ষিহীন কাউন্টারগুলির উপরে পুলিশি নজরদারিও বাড়ানো হচ্ছে।

বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় কয়েক মাস আগে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে নিয়ে এ বিষয়ে একটি বৈঠকও করেন। সেখানে পুলিশের তরফে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়, তাঁরা যেন নিরাপত্তার স্বার্থে এটিএমে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করেন।

ওই বৈঠকের পরে এখনও মহকুমার বেশির ভাগ এটিএম কাউন্টারে নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করা হয়নি বলে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ। অনিলবাবু জানান, বৈঠকে কয়েকটি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের নিরাপত্তারক্ষী রাখার মতো পরিকাঠামো নেই। উপর মহলে সমস্যার কথা জানানো হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাঁরা।

ব্যাঙ্কের এক ম্যানেজার বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা জানে, এটিএম কাউন্টারে সিসি ক্যামেরা থাকে। তাই তারা প্রথমেই ক্যামেরা নষ্ট করে দেয়।’’ পুলিশ জানিয়েছে, মহকুমার রক্ষিহীন এটিএমগুলির উপরে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।

দিন কয়েক আগে বনগাঁর ধর্মপুকুর এলাকা থেকে এটিএম প্রতারণা চক্রের ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বাড়ি হরিয়ানায়। পুলিশ জানিয়েছে, ভিন রাজ্য থেকে এসে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা তুলে চম্পট দিচ্ছিল ওই দুষ্কৃতীরা। বনগাঁয় তিনটি ঘটনা ঘটিয়েছিল তারা। এটিএমের ক্যানসেল বোতামে আঠা জাতীয় কিছু লাগিয়ে রেখে টাকা তুলে নিচ্ছে প্রতারকেরা। টাকা তোলার পরে অনেকেই ক্যানসেল বোতাম টিপে কাউন্টার থেকে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু বোতামে আঠা জাতীয় কিছু লাগিয়ে রাখলে তা ক্যানসেল হয় না। দুষ্কৃতীরা সেই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছিল।

তদন্তকারীরা জানান, কখনও আবার গোপনে কি-প্যাড, স্কিমার বসিয়ে গ্রাহকদের পিন কোড জেনে নিয়ে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে। এত কিছুর পরেও অবশ্য এটিএম কাউন্টারগুলোর নিরাপত্তার কোনও পরিবর্তন হয়নি বনগাঁ মহকুমা ও হাবড়ায়।

বনগাঁ, বাগদা, গোপালনগর, গাইঘাটার বাজার এলাকায় দেখা গেল, বেশির ভাগ এটিএম কাউন্টারই রক্ষিহীন। তবে বাটারমোড়, মতিগঞ্জ ও কালীবাড়ি এলাকার কয়েকটি এটিএমে রক্ষী রয়েছেন।

গ্রাহকদের অভিযোগ, এমনও এটিএম রয়েছে, যার নিরাপত্তা কর্মীরা আদৌ প্রশিক্ষিতই নন। সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্রও থাকে না। দিনের বেলা এটিএম কাউন্টারে ভিড় থাকে প্রচুর। এমনও দেখা যায়, মহিলা বা বৃদ্ধেরা এটিএমের টাকা তুলতে আসা অন্য ব্যক্তিদের বলছেন টাকা তুলে দিতে। তাঁরা তাঁদের পিন নম্বরও বলে দিচ্ছেন। এক প্রৌঢ়ার কথায়, ‘‘এটিএম কাউন্টারে কোনও রক্ষী না থাকায় বাধ্য হয়ে অন্যের উপরে ভরসা করি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ATM Security Guard
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE