গত বছর কাঁপিয়েছিল গ্রাম। এ বার টেক্কা দিল শহর।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে এ বছর গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরে আক্রান্ত হয়েছেন কয়েক গুণ বেশি।
সরকারি হিসেবে, জেলায় ডেঙ্গিতে মৃত্যুর সংখ্যা ১৯। তার মধ্যে শহরাঞ্চলে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। ২২টি ব্লকে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের।
গত বছর দেগঙ্গা-বসিরহাট-বাদুরিয়া-হাবড়া এলাকায় ডেঙ্গি কার্যত মহামারীর চেহারা নিয়েছিল। বারাসাত জেলা হাসপাতালে একটা সময়ে বেড পাওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। প্রশাসনের লাগাতার চেষ্টায় এ বার ডেঙ্গি রুখতে অনেকটাই সফল দেগঙ্গা-হাবড়া। তবে পুরোপুরি রোখা যায়নি।
এ বার ভুগেছে বেশি শহর। তালিকায় সকলের উপরে নাম, ভাটপাড়া পুরসভার। তারপরেই রয়েছে বিধাননগর পুর এলাকা। তবে মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কারণ, অনেক ক্ষেত্রে মৃত্যু শংসাপত্রে ডেঙ্গি হয়নি বলে অভিযোগ ছিল মৃতের পরিবারের।
বেসরকারি হাসপাতাল যে সব মৃতের শংসাপত্রে ডেঙ্গির উল্লেখ করেছিল, তা সরকারি তালিকায় ঠাঁয় পেয়েছে কিনা, জানা যায়নি। উত্তর ২৪ পরগনার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রাঘবেশ মজুমদার বলেন, ‘‘ডেঙ্গিতে মৃত্যুর পরিসংখ্যান স্বাস্থ্যভবন দেবে। এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ১২৮ জন। তার মধ্যে গ্রামাঞ্চলে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৪৩ জন। শহরাঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৪৮৫ জন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ভাটপাড়ায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৪৫৪। তার পরেই রয়েছে বিধাননগর পুরসভা। এই পুর এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১১২০।
তারপরেই তালিকায় পর পর নাম ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের পুরসভাগুলির। ভাটপাড়ার পাশের পুরসভা গারুলিয়ায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২৮ জন। হালিশহরে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬৪। তারপরেই রয়েছে কামারহাটি। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬১। কামারহাটির পরে টিটাগড় পুরসভা। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেখানে গত এক বছরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪৬ জন।
গ্রামাঞ্চলের মধ্যে তালিকায় সব থেকে উপরে রয়েছে বারাসত ১ ব্লক। এই ব্লকে গত এক বছরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮১ জন। তার পরেই রয়েছে বাদুরিয়া ব্লক। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪২। গাইঘাটা ব্লকের নাম এর পরেই। এখানে গত এক বছরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিল ১২৯ জন। বসিরহাট ১ ও ২ ব্লকে যথাক্রমে আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ ও ৬৬ জন।
চিকিৎসকেরা বলছেন, গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলে ডেঙ্গির সংখ্যা বেশি হবে, সেটাই স্বাভাবিক। গত বছর দেগঙ্গায় ডেঙ্গি যে ভাবে ছড়িয়েছিল, তা ব্যতিক্রম। বছরভর বিভিন্ন পদক্ষেপ করায় এ বছর দেগঙ্গা এবং আশেপাশের ব্লকগুলিতে এ বছর ডেঙ্গি ঠেকানো গিয়েছে।
শীতে তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গির প্রকোপ কিছুটা কমেছে। এখন থেকে পুরসভাগুলি পদক্ষেপ করলে আগামী বছর ডেঙ্গি অনেকটাই ঠেকানো যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy