জাতীয় সড়কের পাশেই দাঁড় করানো আছে মাল বোঝাই মোটর ভ্যান, কুলপির ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের নিশ্চিন্তপুর মোড়ে। —নিজস্ব চিত্র।
বেআইনি দখল-সহ বিভিন্ন কারণে সঙ্কীর্ণ হয়ে যাচ্ছে ডায়মন্ড হারবারের ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক। উস্তির শিরাকোল থেকে কুলপির নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ওই সড়কের প্রায় ৫০ কিলোমিটার অংশে দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে মাঝেমধ্যে। পুলিশেরই একটি পরিসংখ্যান বলছে, গত ৬ মাসে এই রাস্তায় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। জখম প্রায় ১০ জন।
এলাকার মানুষজন জানান, ডায়মন্ড হারবার থেকে কুলপি পর্যন্ত রাস্তার ধারে বহু বেআইনি নির্মাণ গড়ে উঠেছে। পাশাপাশি রাস্তার পাশে ফাঁকা জায়গায় ফেলে রাখা হচ্ছে কাঠের গুঁড়ি, ইমারতি সরঞ্জাম, সরকারি জলপ্রকল্পের পাইপ। রাস্তা দখল করে তৈরি হয়েছে বাইক-গাড়ির গ্যারাজও। জাতীয় সড়কে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের তোরণ লাগানো হচ্ছে। অনুষ্ঠান হয়ে গেলেও তোরণ থেকে যাচ্ছে দিনের পর দিন। রাস্তার পাশেই হটুগঞ্জ, বাগাড়িয়া, কুলপি,
নিশ্চিন্তপুর-সহ বিভিন্ন মোড়ে সকালে বাজার বসে। সেই সময় রাস্তা কার্যত দোকানদারদের দখলে চলে যায় বলে অভিযোগ।
জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে বেপরোয়া গতিতে ট্রাক, ম্যাটাডর চলে বলেও অভিযোগ। বাসিন্দারা জানান, জাতীয় সড়কের রত্নেশ্বরপুর মোড় থেকে সরিষা হাট পর্যন্ত গাড়ির গতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকে। বাকি সড়কে গাড়ি একেবারে বেপরোয়া গতিতে চলে। নিয়ম ভেঙে অতিরিক্ত মাল নিয়েও চলছে বড় গাড়ি। তার জেরেও দুর্ঘটনা ঘটছে। মঙ্গলবার জাতীয় সড়কে গিয়ে দেখা গেল, অতিরিক্ত খড় বোঝাই করে চলছে ম্যাটাডর। এত উঁচু করে খড় সাজানো হয়েছে, সামনে কোনও গাড়ি এলে দেখার উপায় প্রায় নেই। যে কোনও মুহূর্তেই বিপদ ঘটতে পারে।
ডায়মন্ড হারবার থেকে কলকাতা ও কাকদ্বীপগামী বহু সরকারি-বেসরকারি বাস এই সড়ক ধরে চলাচল করে। অভিযোগ, ডায়মন্ড হারবার শহর ছেড়ে বেরোলেই নিজেদের মধ্যে রেষারেষি শুরু করে দেয় বাসগুলি। কিছুদিন আগে সরিষা আশ্রম মোড়ের কাছে দু’টি বেসরকারি বাস রেষারেষি করতে গিয়েই এক বাইক আরোহীকে চাপা দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বাইক আরোহী।
সেই সঙ্গে জাতীয় সড়কের বিভিন্ন অংশে রয়েছে অটো, মোটর ভ্যানের দাপট। তার জেরেও দুর্ঘটনা ঘটছে বলে এলাকাবাসীর দাবি। হেলমেটহীন বাইক আরোহীদের দৌরাত্ম্যও দেখা যায় সর্বত্র।
পুলিশের দাবি, জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে নানা চেষ্টা চলছে। রাস্তার নির্দিষ্ট অংশ সর্বোচ্চ গতি নির্দিষ্ট করে লিখে দেওয়া হয়েছে। গতির নিয়ম ভাঙলে জরিমানা
করা হচ্ছে। রাস্তায় ‘হাম্প’ তৈরি
করা হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলিতে গার্ডরেল বসানো হয়েছে। নিয়মিত পুলিশি নজরদারিও চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy