প্রতীকী ছবি।
করোনা আবহেও ভোজন-বিলাসে রাশ টানা যাচ্ছে না। যে কারণে হু হু করে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। অন্তত বারাসত পুর এলাকার ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের তথ্য সে কথাই বলছে। এ বার তাই তিনটি বাজার আগামী সাত দিনের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল বারাসত পুরসভা। রবিবার থেকেই পুর এলাকার নবপল্লি ছোট বাজার, অশ্বিনী পল্লি বাজার ও কাজিপাড়া বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাজারের ভিতরের অন্যান্য দোকানও বন্ধ থাকবে ওই সময়ে। বাজার তিনটিকে কন্টেনমেন্ট জো়ন ঘোষণা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনে ওই সব বাজার সংলগ্ন এলাকার বহু মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। সংক্রমণের নিরিখে এই মুহূর্তে কলকাতারও আগে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। জেলার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ব্যারাকপুর মহকুমা। তার পরেই স্থান বারাসত মহকুমার। মহকুমার মধ্যে সব থেকে বেশি সংক্রমণ বারাসত পুর এলাকায়। বারাসত পুরসভা সূত্রের খবর, শনিবার পর্যন্ত এই পুর এলাকায় মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ৯৩৯ জন। বর্তমানে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ২৩১ জন।
পুর কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, সাত দিন বাজার বন্ধ থাকলে এই ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে আসবে। যদিও অন্য আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে। ওই এলাকার সংক্রমিতদের পরিবারের লোকেরা যদি অন্য বাজারগুলিতে ভিড় জমান, সে ক্ষেত্রে সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কাও রয়েছে।
পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই মুহূর্তে একটাই স্বস্তির বিষয় যে সিংহভাগ রোগী বাড়িতে থেকেই সুস্থ হচ্ছেন। অ্যাক্টিভ রোগীর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩০ জন। সেফ হোমে মাত্র দু’জন আক্রান্ত রয়েছেন।”
সুস্থতার হার বেশি থাকা সত্ত্বেও আশঙ্কা জাগাচ্ছে ওই তিন এলাকা। সুনীল জানান, করোনা সংক্রমণের তথ্য দেখলেই বোঝা যায় অশ্বিনীপল্লি, কাজিপাড়া এবং নবপল্লি এলাকায় রোজই নতুন নতুন সংক্রমিতের খোঁজ মিলছে। স্বাস্থ্য কর্তা ও চিকিৎসকেরা ওই বাজারগুলি অন্তত সাত দিনের জন্য বন্ধ রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন। শনিবারই সেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই মতো এলাকায় ঘোষণা করা হয়।
চিকিৎসক এবং পুরকর্তারা নিশ্চিত, সংক্রমণের বড় উৎস বাজার। বর্তমানে অফিসে ভিড় হচ্ছে না। শপিং মলগুলিতেও আনাগোনা নামমাত্র। তবে বাজারের ভিড়ে রাশ টানা যাচ্ছে না। সুনীলবাবু জানান, বার বার সচেতন করার পরেও বহু মানুষ অকারণে বাজারে ঘুরছেন। সংক্রমণ ছড়াচ্ছে জেনেও পরিকল্পনা মাফিক বাজার করছেন না বেশির ভাগ মানুষ। তাঁর কথায়, “দূরত্ব-বিধি মানা তো কোন ছাড়, এখনও বহু মানুষ মাস্ক পরছেন না। তাঁদের কী ভাবে সামলানো যাবে বুঝতে পারছি না! সব কি পুলিশ দিয়ে সম্ভব?”
পুর কর্তৃপক্ষের মতে, বর্তমানে এই তিনটি এলাকায় সংক্রমিতের সংখ্যা ৫৫ জন। রোজই ওই সব এলাকায় সংক্রমিতের সংখ্যা দেখা হবে। সপ্তাহান্তে যদি দেখা যায়, সংক্রমণ কমেছে, বোঝা যাবে বাজার বন্ধের সুফল পাওয়া গিয়েছে। তার পরেই পরবর্তী পরিকল্পনা স্থির হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy