Advertisement
E-Paper

চলবে যাত্রিবাহী ট্রেন, শৈশবে ডুব প্রবীণদের

পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সব ঠিক থাকলে খুব শীঘ্রই পেট্রাপোল পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চালানো হবে।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:১৩
চলছে রেলপথের পরিদর্শন। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

চলছে রেলপথের পরিদর্শন। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

পেট্রাপোল স্টেশন পর্যন্ত যাত্রিবাহী ট্রেন চলবে। খবরের কাগজে এ তথ্য পেয়েছেন বছর বাহাত্তরের অখিল হালদার। চোখের পলকে সত্তর হয়েছে সাত।

শুক্রবার দুপুরে উঠোনে বসে ভাত খেতে খেতে অখিল বললেন, ‘‘তখন ট্রেন চলত স্টিম ইঞ্জিনে। স্টেশনে জল ভরা হত। আমরা ট্রেনে করে বনগাঁয় গিয়েছি। পৌষমাসে সাতভাই কালীতলা এলাকায় মেলায় গিয়েছি। ওখানে ট্রেন দাঁড়াত। এখনও মনে আছে, রেলকর্মীরা আমাদের বিনা টিকিটে ট্রেনে তুলে নিতেন।’’ সময়টা ১৯৬৫ সাল। হঠাৎই বন্ধ হয়ে যায় যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল। অখিল বললেন, ‘‘মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আবার ট্রেন চালু হলে ট্রেনে চড়ার ইচ্ছে রয়েছে। ’’

পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সব ঠিক থাকলে খুব শীঘ্রই পেট্রাপোল পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চালানো হবে। এখন বনগাঁ - শিয়ালদহ শাখায় বৈদ্যুতিক ট্রেন চলাচল করে। বনগাঁ রেল স্টেশন থেকে পেট্রাপোল স্টেশন পর্যন্ত বিদ্যুতায়নের কাজ শেষ হয়েছে সম্প্রতি। ২৮ ডিসেম্বর ওই রুটে বৈদ্যুতিক ইঞ্জিন ছুটিয়ে পরীক্ষার কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। রেলপুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ থেকে পেট্রাপোল রেলস্টেশনের দূরত্ব চার কিলোমিটার। এই পথে কয়েকটি রক্ষীহীন রেলগেট আছে। লোকাল ট্রেন চালু হলে রেলগেটগুলিতে কর্মী মোতায়েন থাকবে। মানুষও নির্ভয়ে যাতায়াত করতে পারবেন।

দীর্ঘদিন ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় ওই রুটে বাংলাদেশের সঙ্গে মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ২০১৭ সালে কলকাতা থেকে খুলনা পর্যন্ত যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ট্রেনের নাম দেওয়া হয় ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’। ওই সময় নতুন করে পেট্রাপোল রেলস্টেশনের পরিকাঠামো তৈরি করা হয়। বন্ধন এক্সপ্রেসে অবশ্য যাত্রীদের কলকাতা থেকে সরাসরি খুলনা পর্যন্ত যেতে হয়। মাঝে কোথাও নামা ওঠার ব্যবস্থা নেই। ফলে স্থানীয় মানুষের তা প্রয়োজন মেটাতে পারেনি।

পেট্রাপোল পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চালানোর দাবি এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের। এবার লোকাল ট্রেন চলার খবরে বাসিন্দারা খুশি। তাঁদের বক্তব্য এর ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। অনেকেই কাজের ব্যবসা এবং পড়াশোনার প্রয়োজনে বনগাঁয় এসে ট্রেন ধরে শিয়ালদহে যেতে হয়। সময় ও অর্থ দুই লাগে বেশি। পেট্রাপোল রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় বাড়ি অপর্ণা দাসের। তিনি বলেন, ‘‘এখন কলকাতা যেতে হলে প্রথমে ভ্যান অটো করে বনগাঁ স্টেশনে যেতে হয়। যাতায়াতে খরচ হয় দৈনিক ৭০ টাকা। বাড়ি থেকে ১ ঘন্টা আগে বের হতে হয়।’’ যাঁরা বারাসত মধ্যমগ্রাম হাবড়া বিরাটি এলাকার কলেজে পড়েন, তাঁরাও সমস্যায় থাকেন। এলাকাটি কৃষি প্রধান। চাষিদের কথায়, ‘‘লোকাল ট্রেন চালু হলে খেতের আনাজ ট্রেনে করে বাইরে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে পারব। আয় বেশি হবে। ’’ বাংলাদেশি যাত্রিরা পেট্রাপোল বন্দরে এসে যানবাহনে করে বনগাঁ স্টেশনে এসে ট্রেন ধরেন। তাঁরাও সরাসরি পেট্রাপোল থেকে ট্রেনে করে শিয়ালদহ যেতে পারবেন।

২০২০ কেড়ে নিয়ে অনেক কিছু। কিন্তু যা ফিরিয়ে দিল তা-ই বা কম কী!

Nostalgia Indian Railways Patrapole
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy