Advertisement
E-Paper

নতুন লকডাউনে সেই পুরনো চোর-পুলিশ খেলা

লকডাউন শুরুর পরে কেটে গিয়েছে পুরো একটা রাত। কিন্তু বদল ঘটল না চেনা ভিড়ের ছবির। কোথাও বসল গরুর হাট, কোথাও বাজার খুলল।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২০ ০৪:৫৩
জয়নগরে পুলিশের নজরদারি। ছবি: সুমন সাহা

জয়নগরে পুলিশের নজরদারি। ছবি: সুমন সাহা

ফের শুরু হল সেই লুকোচুরি খেলা। পুলিশ থাকলে নিয়ম আছে, না থাকলে নিয়ম নাস্তি।

লকডাউন শুরুর পরে কেটে গিয়েছে পুরো একটা রাত। কিন্তু বদল ঘটল না চেনা ভিড়ের ছবির। কোথাও বসল গরুর হাট, কোথাও বাজার খুলল, কোথাও আবার অবাধে বাজার করে হেলতে-দুলতে লোকজন ফিরলেন কন্টেনমেন্ট এলাকায় নিজের বাড়িতে। কোথাও কোথাও পুলিশকে গিয়ে বাজার বন্ধ করাতে হল। পুরোপুরি স্বাভাবিক এলাকা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় লকডাউনে নজরদারি চালাতে হিমসিম খেতে হল পুলিশকেও। কোথাও গণ্ডিবদ্ধ এলাকা বাঁশ দিয়ে ঘেরা হয়েছে, কোথাও আবার সেই কাজ এখনও বাকি।

শুক্রবার আর পাঁচটা দিনের মতোই স্বাভাবিক ছন্দে ছিল হাবড়া-অশোকনগরের কন্টেনমেন্ট এলাকা। গণ্ডিবদ্ধ এলাকার মধ্যেও যারা রয়েছেন, তাঁরা বিনা বাধায় বাইরে বেরিয়ে বাজারহাট করেছেন। হাবড়াতে কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাসিন্দা জয় সিংহের অভিজ্ঞতা এমনই। আক্রান্তের বাড়ির সামনে বাঁশ দিয়ে ঘেরা হয়েছে। রাস্তার পাশে পুলিশ বসানো হয়েছে। সকালে পুলিশ এলাকায় টহল দেয়।

অশোকনগরের লকডাউনের ছবিটা বিন্দুমাত্র আলাদা ছিল না। পুলিশ সকালে টহল দেওয়ার সময়ে রাস্তাঘাট ছিল প্রায় ফাঁকা। কিন্তু পুলিশ সরতেই ফের লোকজন বাড়ি থেকে বেরিয়ে লকডাউন এলাকার বাইরে বেরিয়ে যথেচ্ছ ঘোরাঘুরি করলেন। পাঁউরুটি-দুধের প্যাকেট হাতে বাড়ি ফিরলেন।

বসিরহাটে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচশো ছুঁইছুঁই। আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লেও মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি চোখে পড়েনি। বসিরহাট শহরের আনাজের বাজার খোলা থাকলেও দোকানপাট বন্ধ ছিল। শহরের তিনটি কন্টেনমেন্ট জ়োনের কোথাও বাঁশ বা গার্ড রেল দিয়ে রাস্তা বন্ধের ছবি চোখে পড়েনি। তবে শহরের বাইরে মাটিয়া, খোলাপোতা, রাজনগর, বড়জিরাকপুর, নারায়ণপুর-সহ কয়েকটি এলাকায় পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা বাঁশ ও গার্ডরেল এলাকার পথ বন্ধ করে দেন।

সকাল থেকে ভাঙড় ২ ব্লকের পোলেরহাটে হাট বসল শুক্রবারে। ফি শুক্রবারের মতোই ভিড় হল স্থানীয় গরুর হাটে। দূরদূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা দূরত্ববিধি শিকেয় তুলে গরু বেচলেন-কিনলেন। অবাধ বেচাকেনায় পুলিশি নজরদারি চোখে পড়েনি। বিডিও কৌশিককুমার মাইতি বলেন, “আগে থেকে অনেক ব্যবসায়ী পৌঁছে গিয়েছিলেন। সামনেই পরব। তাই আচমকা হাট বন্ধ করলে ব্যবসায়ীরা মুশকিলে পড়তেন বলে এক দিনের ছাড় দেওয়া হয়েছিল।” তবে ভাঙড় বিজয়গঞ্জ বাজার, শোনপুর বাজার, পাকাপোল বাজারে কিছু দোকান খুললে পুলিশ গিয়ে তা বন্ধ করে দেয়। জমায়েত হটাতে কাশীপুর থানার হালকা লাঠি চালায় বলে অভিযোগ।

ক্যানিং ১ ব্লকের গোপালপুর পঞ্চায়েতের জমাদারপাড়া, বাঁশড়া পঞ্চায়েতের হালদারপাড়া থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনগর, ঘুটিয়ারিশরিফ পোস্টঅফিস, মাজার ও বাজার এলাকায় প্রশাসনের ঢিলেঢালা নজরদারি নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। অন্য দিনের মতোই দোকানপাট খুলেছে। মানুষও দেদার কেনাকাটা করেছেন। অন্য দিকে, বারুইপুর পুলিশ জেলার তরফ থেকে তালদি বাসস্ট্যান্ড থেকে রাজাপুর মোড়, সাতমুখী বাজার থেকে দক্ষিণ অঙ্গদবেড়িয়াতেও লকডাউন ভেঙে মানুষ রাস্তায় যথেচ্ছ ঘোরাঘুরি করেছেন। পরে পুলিশ গিয়ে দোকান বন্ধ করে দেয়।

ডায়মন্ড হারবার মহকুমায় মাত্র কয়েকটি এলাকায় লকডাউন চলছে। লকডাউন অমান্য করে ডায়মন্ড হারবার শহরের স্টেশন বাজার-সহ বিভিন্ন মোড়ে জমায়েত হলেও পুলিশি সক্রিয়তা চোখে পড়েনি। তবে আগের থেকে মাস্কের ব্যবহার কিছুটা বেড়েছে। নামখানা, পাথরপ্রতিমা ও সাগরের আনাজের বাজার সকালের দিকেই খোলা ছিল। প্রশাসনের নজরদারিও সে ভাবে চোখে পড়েনি। তবে এরই মধ্যে কিছুটা ব্যতিক্রম হাসনাবাদ থানার রাজাপুর, দেবীমোড় বাজার, থুবা বাজার এলাকা। এখানে বাজারহাট বন্ধ ছিল লোকজনও বিশেষ রাস্তায় নামেননি।

Containment Zone Covid 19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy