বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। নিজস্ব চিত্র।
ত্রাণ নয়, কংক্রিটের নদীবাঁধ চাই। এই দাবিই ক্রমে জোরালো হচ্ছে সুন্দরবন এলাকায়। বুধবার এই দাবি নিয়েই বিক্ষোভ দেখালেন গোসাবা ব্লকের মানুষ। বন্যায় বাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়। তা ছাড়া ভরা কোটালেও একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় গ্রামবাসীদের। তাঁদের অভিযোগ, সুন্দরবন এলাকার অধিকাংশ নদীবাঁধই মাটির তৈরি। স্থায়ী বাঁধ না হওয়ার জন্য ইয়াসের প্রভাবে নদীতে জলোচ্ছ্বাসের কারণে বহু গ্রাম জলমগ্ন হয়েছে। তাই স্থায়ী কংক্রিটের বাঁধ তৈরি করে দেওয়ার দাবিতে শতাধিক পুরুষ এবং মহিলা বিক্ষোভ দেখান। ঘণ্টাখানেক ধরে চলে এই বিক্ষোভ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বারে জলস্ফীতির কারণে সুন্দরবনের শতাধিক নদী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় এলাকা। গোসাবার পাখিরালা, দয়াপুর, সাতজেলিয়া ও লাহিড়িপুর এলাকাতেও ভেঙে যায় বহু নদী বাঁধ। এলাকাগুলি এখনও জলমগ্ন হয়ে থাকায় ঘরছাড়া সেখানকার মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, নদীবাঁধ মাটি দিয়ে তৈরি হওয়ার কারণে জলস্ফীতি হলেই বাঁধ ভাঙার উপক্রম হয়। আর বাঁধ ভাঙলে কোনওমতে জোড়াতালি দিয়ে তা মেরামত করা হয়। কিন্তু কিছু দিন কাটতে না কাটতে আবারও জোয়ারের সময় বাঁধ ভাঙে। প্রশাসনকে এ কথা জানিয়েও কোনও সুরাহা মেলেনি বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ।
ইয়াসে কারণে সুন্দরবনের বহু গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদীবাঁধ ভেঙে গ্রামগুলি প্লাবিত হয়েছে। প্রশাসনের তরফে দুর্গত মানুষদের ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সুন্দরবন এলাকার বাসিন্দাদের কাছে এখন ত্রাণের চেয়ে যে কংক্রিটের নদীবাঁধ বেশি জরুরি তা গ্রামবাসীদের কথাতেই ধরা পড়েছে। তাই ‘ত্রাণ নয়, কংক্রিটের নদীবাঁধ চাই’— এই স্লোগান নিয়েই নেমেছেন গ্রামবাসীরা।
সুন্দরবনের মানুষের চাওয়া-পাওয়া এবং দাবিদাওয়া নিয়ে বহু দিন ধরেই আন্দোলন করছে ‘নদীবাঁধ ও জীবন-জীবিকা রক্ষা কমিটি’। এই সংগঠনের সদস্যদের নেতৃত্বে গোসাবার দুর্গত এলাকার মানুষ বুধবার বিক্ষোভে শামিল হন। স্থায়ী বাঁধ তৈরির দাবি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে একটি স্মারকলিপিও জমা দেন তাঁরা। তবে দ্রুত বাঁধ তৈরির কাজ শুরু না হলে আগামী দিন বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে বলেও সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে।
গোসাবার বিডিও সৌরভ মিত্র বলেন, “কোন বিক্ষোভের খবর এখনও পাইনি। তবে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পরই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলা শাসক নিজে বেহাল বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখেছেন। জেলাশাসক এবং সেচ দফতরকে কংক্রিটের নদীবাঁধ তৈরির আবেদনও জানানো হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy