প্রতীকী চিত্র।
জন্মের জাল শংসাপত্র বের করেও শেষরক্ষা হল না। আটকানো গিয়েছে নাবালিকার বিয়ে। ঘটনার পর থেকে পলাতক পাত্রী ও তার বাবা। বৃহস্পতিবার রাতে ক্যানিংয়ের গ্রামের ঘটনা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ক্যানিংয়ের বছর সতেরোর এক নাবালিকার বিয়ের তোড়জোড় হচ্ছে বলে খবর যায় চাইল্ড লাইনের কাছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রান্নাবান্না তখন শেষ। অতিথিরা আসতে শুরু করেছেন। আলোয় সেজে উঠেছে বাড়ি। বাজছে সানাই। হঠাৎ বাড়িতে হাজির পুলিশ, ও চাইল্ড লাইনের কর্মীরা। মেয়ের জন্মের শংসাপত্র দেখতে চান তাঁরা। একটি শংসাপত্র দেখানো হয়। সেখানে ২০০১ সালের নভেম্বর মাসে পাত্রীর জন্ম হয়েছে বলে লেখা। কিন্তু শংসাপত্র দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। যাঁরা শংসাপত্র দিয়েছেন, সেই মাতলা ২ পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, শংসাপত্র ভুয়ো। বিয়ে বন্ধ করতে নির্দেশ দেন পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকেরা। সে সময়ে বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে পাত্রী ও তার বাবা সরে পড়ে। বাড়িতে উপস্থিত নিমন্ত্রিত ও পরিবারের বাকি সদস্যদের নাবালিকা বিয়ের কুফল সম্পর্কে বোঝান পুলিশ ও চাইল্ড লাইনের কর্মীরা।
শেষ পর্যন্ত বিয়ে বন্ধ করার কথা মেনে নেন সকলে। চাইল্ড লাইনের কর্মী বান্টি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের যে জন্মের নথি দেখানো হয়, তা দেখে সন্দেহ হওয়ায় খোঁজ-খবর শুরু করি। দেখা যায় নথি নকল করে বিয়ের আয়োজন করেছিল পরিবার।’’ ক্যানিং ১ বিডিও নীলাদ্রিশেখর দে বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাবালিকা বিয়ের খবর পেয়ে পুলিশকে জানাই। পুলিশ ও চাইল্ড লাইনের কর্মীরা গিয়ে বিয়ে বন্ধ করেছেন। নকল জন্মের শংসাপত্র নিয়ে তদন্ত চলছে।”
শুক্রবার হাসনাবাদের গ্রামেও এক নাবালিকার বিয়ে রুখেছে পুলিশ-প্রশাসন। হাসনাবাদ ব্লকের কন্যাশ্রী প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে চাইল্ড লাইনের মারফত খবর আসে, এক নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে। প্রণবকে হাসনাবাদের বিডিও ঘটনাস্থলে যেতে বলেন। প্রণব আড়াইটে নাগাদ গ্রামে পৌঁছে দেখেন, বাড়িতে সাজো সাজো রব। প্রণবকে বাড়ির লোকজন বোঝানোর চেষ্টা করেন, বিয়ে হচ্ছে না এখানে। প্রণব কৌশলে ঘরে ঢুকে দেখেন, এক নাবালিকা কনের সাজে বসে। পাশের ঘরে পাত্র ও তার পরিবার। মেয়েটি স্থানীয় বিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। বয়স সবে ষোলো পেরিয়েছে। হাসনাবাদের বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা খুশি, মেয়েটির পরিবার রাজ্য সরকারের রূপশ্রী ও কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধার কথা জেনে বিয়ে বন্ধ রাখতে রাজি হল। মেয়েটির দিকে আমাদের নজর থাকবে। ওর পড়াশোনার জন্য আমরা সব রকম সাহায্য করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy