Advertisement
১৭ জুন ২০২৪

আড়াই বছরের শিশু খুনের ঘটনায় ধৃত মূল অভিযুক্ত

শিশুকে খুনের ঘটনায় এ বার মূল অভিযুক্ত বসিরহাটের ব্যবসায়ী তোফাজ্জেল হোসেন মোল্লাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার তাকে বসিরহাটে কোড়াপাড়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। এই নিয়ে ওই খুনের ঘটনায় ধরা পড়ল তিন জন। এর আগে তোফাজ্জেলকে ধরেও প্রমাণাভাবে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৫ ০০:০৬
Share: Save:

শিশুকে খুনের ঘটনায় এ বার মূল অভিযুক্ত বসিরহাটের ব্যবসায়ী তোফাজ্জেল হোসেন মোল্লাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার তাকে বসিরহাটে কোড়াপাড়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। এই নিয়ে ওই খুনের ঘটনায় ধরা পড়ল তিন জন। এর আগে তোফাজ্জেলকে ধরেও প্রমাণাভাবে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল পুলিশ।

অভিযোগ, টাকার লোভে মনিবের একমাত্র ছেলেকে অপহরণের পরে গলা টিপে খুন করে বস্তাবন্দি দেহ পুকুরের জলে ফেলে দিয়েছিল কাদের মোল্লা। যে খুনের মূল ষড়যন্ত্রী হিসাবে তোফাজ্জেলের নাম উঠে আসে।

৩১ মে ঘটনাটি ঘটেছিল বসিরহাটের শিকড়া-কুলিনগ্রাম পঞ্চায়েতের কোড়াপাড়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ায়। পাড়ারই বাসিন্দা মাজেদ মোল্লা পোশাক ব্যবসায়ী। একই গ্রামে একই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত তোফাজ্জেল। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় তোফাজ্জেলের রাগ গিয়ে পড়ে মাজেদের উপরে। হাড়োয়ার আমতাখাটরা গ্রামের কাদেরকে তোফাজ্জেল মাজেদের কাছে কাজের জন্য পাঠায়। সেটা ছিল খবর জানার ছক। মাজেদের দু’বছর আট মাসের ছেলে তৌফিক আলমকে অপহরণের ছক কষে কাদের।

ঘটনার সন্ধ্যায় মায়ের কাছে পড়ছিল ছোট্ট তৌফিক। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ছেলেকে রেখে মা পাশের রান্না ঘরে গিয়েছিলেন। শিশুটিকে খাবারের লোভ দেখিয়ে কোলে তুলে নেয় কাদেরের সঙ্গী আফতাবউদ্দিন মোল্লা। তৌফিককে অপহরণ করতে পারলে আফতাবকে মোটর বাইক কিনে দেওয়া কথা বলেছিল কাদের। শিশুটিকে নিয়ে পূবর্ব পরিকল্পনামাফিক তারা চলে যায় তোফাজ্জেলের কারখানায়। কিন্তু বাচ্চাটি কান্না জুড়ে দেওয়ায় সমস্যা হয়।

জেরায় কাদের পুলিশকে জানায়, তার কাছ থেকে তোফাজ্জেল তৌফিককে কোলে তুলে নিতেই সে কান্না শুরু করে। কিছুতেই থামাতে না পেরে বিপদ বুঝে তাকে কারখানার পিছনে একটি বাথরুমের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই গলা টিপে মারা হয় দুধের শিশুটিকে। মাজেদের বাড়ি থেকেই আনা একটি বস্তায় তৌফিকের দেহ রেখে মাজেদের বাড়ির পিছনে একটি পুকুরের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়। বস্তার সঙ্গে ইটও বেঁধে দেয় আততায়ীরা। এরপরে মাজেদের কাছে ফোন করে ছেলেকে ফেরত পেতে ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণও দাবি করে তারা।

তদন্তে নেমে পুলিশ কাদের, আফতাবউদ্দিন এবং তোফাজ্জেলকে ধরলেও প্রমাণের অভাবে তোফাজ্জেলকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। বসিরহাট থানার আইসি গৌতম মিত্র বলেন, ‘‘মৃতের পরিবার থেকে তোফাজ্জেলের নামে অভিয়োগ করা হলেও প্রথমে এমন কোনও প্রমাণ মিলছিল না, যে ওই ব্যবসায়ীকে আটক রাখা যায়। সে কারণেই তাকে ছেড়ে রেখে গতিবিধির উপরে নজর রাখা হচ্ছিল।’’ মোবাইলে সে কার সঙ্গে কী কথা বলে, তা-ও খেয়াল রেখেছিল পুলিশ। যা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি তোফাজ্জ্বেল। শেষমেশ কিছু প্রমাণ হাতে আসার পরেই তোফাজ্জেলকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police child murder case Basirhat bath room
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE