Advertisement
E-Paper

মোবাইলে টোপ, পাচার হয়ে যাচ্ছে মেয়েরা, সতর্ক করছে পুলিশ

কিছু দিন আগে রাতভর তল্লাশি চালিয়ে বাগদা থানার পুলিশ নদিয়া ও গাইঘাটা এলাকা থেকে তিন অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধার করেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়া ওই কিশোরীরা তাদের প্রেমিকদের সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়েছিল।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৪০
মোবাইলে মন ডেকে না আনে বিপদ। ছবি সৌজন্যে: আইস্টক

মোবাইলে মন ডেকে না আনে বিপদ। ছবি সৌজন্যে: আইস্টক

কিছু দিন আগে রাতভর তল্লাশি চালিয়ে বাগদা থানার পুলিশ নদিয়া ও গাইঘাটা এলাকা থেকে তিন অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধার করেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়া ওই কিশোরীরা তাদের প্রেমিকদের সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়েছিল।

এ অবশ্য ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়। সাম্প্রতিক সময়ে বনগাঁ মহকুমা এলাকায় একের পর এক কিশোরী অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কোনও নাবালিকা নিখোঁজ হলে আমরা অপহরণের মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করি। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, প্রেমের ফাঁদে পড়ে নাবালিকারা স্বেচ্ছায় তাদের প্রেমিকদের সঙ্গে পালায়।’’ অনেক সময়ে এই মেয়েরা পাচার হয়ে যায় বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।

কেন এমন ঘটনা বাড়ছে?

পুলিশ কর্তাদের দাবি, অল্পবয়সী মেয়েরা মূলত আবেগের বশে প্রলোভনে পা দিয়ে ফেলে। স্কুলে যাওয়ার পথে অচেনা ছেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটে তাদের। ফোনে আসা মিসড্ কল থেকেও অনেক সময়ে সম্পর্ক তৈরি হয়। ফেসবুকের মাধ্যমে অচেনা যুবকদের সঙ্গে তো পরিচয় হচ্ছেই।

কয়েক মাস আগে মিসড্ কলের সূত্র ধরে বনগাঁর এক কলেজ ছাত্রীর সঙ্গে এক যুবকের পরিচয় হয়েছিল। পরিচয় ক্রমশ গাঢ় হয় এবং একদিন জানা যায়, মেয়েটি সেই সম্পর্কের জেরে নারীপাচার চক্রের খপ্পরে পড়েছে। তাকে গুজরাত নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বিমানে করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠিয়ে দেহব্যবসা করাত পাচারকারীরা। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে।

এক পুলিশকর্তা জানান, এমন উদাহরণও রয়েছে, নাবালিকা অবস্থায় পালানোর পরে পুলিশ যখন তাকে উদ্ধার করছে, তখন বয়স আঠারো পেরিয়েছে। তখন সেই তরুণী জানান, স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে বিয়ে করেছেন তিনি। আইনত কিছু করার থাকে না তখন।

কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে এ জন্য?

পড়ুয়াদের সচেতন করতে পুলিশের তরফে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। স্কুলের সামনে ব্যানার-পোস্টার লাগানো হচ্ছে। সেখানে বলা হয়েছে, স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে ছাত্রীরা যেন কোনও অচেনা যুবকের সঙ্গে পরিচয় না করে। কেউ ফোন নম্বর চাইলে তারা যেন তা না দেয়। ফেসবুকে অচেনা কারও সঙ্গে যেন যোগাযোগ তৈরি না করে।

পুলিশের অবশ্য দাবি, শুধু পুলিশি সচেতনতা দিয়ে এই সমস্যার মোকাবিলা করা যাবে না। পরিবারগুলিকেও এগিয়ে আসতে হবে। তাঁরা যেন অল্পবয়সী মেয়েদের হাতে দামি মোবাইল না দেন। বাড়িতে তারা বেশিক্ষণ মোবাইল ঘাঁটছে কি না, সে দিকে সতর্ক নজর রাখেন। স্কুলে আসা-যাওয়ার পথেও তাদের উপরেও নজর রাখা জরুরি।

বনগাঁর একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘আমরা স্কুলে ছাত্রীদের সচেতন করি। স্কুলে মোবাইল নিয়ে আসা নিষিদ্ধ করেছি। কিন্তু স্কুলে বাইরে তাদের উপরে নজর রাখা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। বাবা-মায়েদের আরও বেশি করে সচেতন হতে হবে।’’

Police Women Trafficking Administration
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy