যুবকের মুন্ডুহীন দেহ উদ্ধারের ঘটনায় এ বার অস্ত্র উদ্ধার করল দত্তপুকুর থানার পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সুফিয়া খাতুন যেখানে ভাড়া থাকতেন সেই বাড়ি থেকেই শুক্রবার অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। বামনগাছি পশ্চিম মুরালির পরিত্যক্ত ওই বাড়ি থেকে খেজুর গাছ কাটার হেসো-সহ বঁটি ও কাস্তে উদ্ধার করেছে তারা। পাশাপাশি, পোড়া গেঞ্জি, মাথার চুলও পাওয়া গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, হেসোটিতে বেশ কিছু দিন আগে ধার দেওয়া হয়। তবে ওই হেসো দিয়েই যুবকের মাথা কাটা হয়েছে কি না সে ব্যাপারে তাঁরা এখনও নিশ্চিত নন। সুফিয়ার স্বামী জলিল এখনও পর্যন্ত পলাতক। তবে পুলিশের ধারণা, হজরত লস্করকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে আসেন জলিল এবং পরে তাঁর ধড় থেকে মুন্ডু আলাদা করেন।
আরও পড়ুন:
সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থানার ছোট জাগুলিয়ার মালিয়াকুর বাজিতপুর এলাকার একটি ফাঁকা জমিতে মুন্ডুহীন দেহ দেখতে পান কৃষকেরা। জমির পাশে পড়ে ছিল দেহটি। গোটা শরীরে ক্ষতচিহ্ন। উপড়ে নেওয়া হয়েছিল যৌনাঙ্গ। মৃতের হাত-পা বাঁধা ছিল। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা মদের গ্লাস, চিপ্সের প্যাকেটও খুঁজে পায় পুলিশ। শুরু হয় কাটা মুন্ডুর খোঁজ। তার জন্য বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি করা হয়। খালে ডুবুরি নামানো হয়। প্রাথমিক ভাবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, অত্যন্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা থেকে মুন্ডু কাটা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, কসাই যে রকমের অস্ত্র ব্যবহার করে থাকে, সেই রকমের অস্ত্র ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা এ-ও জানতে পেরেছেন, এক কোপে দেহ থেকে মুন্ডু আলাদা করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত যুবকের নাম হজরত লস্কর। তিনি আদতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার লক্ষ্মীকান্তপুরের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার হজরতের পরিবারের লোকেরা বারাসাত মেডিকেল কলেজের মর্গে এসে দেহ শনাক্ত করেন। হজরতের দেহ চিহ্নিত হওয়ার পর পুলিশ তাঁর মামাতো ভাই ওবায়দুল গাজিকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করা হয়েছে গাজির স্ত্রী পূজা দাসকেও।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, নিহত হজরতের একাধিক বিয়ে। তিনি বরাহনগরের ঝুপড়ি এলাকায় থাকতেন। চুরি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে হজরতের বিরুদ্ধে। গাইঘাটা থানায় গত ২ ফেব্রুয়ারি ‘মিসিং ডায়েরি’ করেছিল তাঁর পরিবার। শেষ পর্যন্ত বাঁ হাতের হৃদয়চিহ্ন, ‘বি’ ট্যাটু দেখে হজরতের দেহ শনাক্ত করেন স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যেরা।