Advertisement
E-Paper

গ্রামীণ হাসপাতালের বেহাল পরিকাঠামো, সমস্যায় বাসিন্দারা

নামেই ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল! কিন্তু মেলে না কোনও পরিষেবা। বাগদার ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালের উপর নির্ভর করে প্রায় ২ লক্ষ ৬৫ হাজার মানুষ। বাম আমলে পরিকাঠামোর উন্নতি হয়নি।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৪৯
অপারেশন থিয়েটারের আলো খারাপ। ডান দিকে, হাসপাতালের বারান্দাতেই ঠাঁই রোগীর। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

অপারেশন থিয়েটারের আলো খারাপ। ডান দিকে, হাসপাতালের বারান্দাতেই ঠাঁই রোগীর। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

নামেই ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল! কিন্তু মেলে না কোনও পরিষেবা।

বাগদার ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালের উপর নির্ভর করে প্রায় ২ লক্ষ ৬৫ হাজার মানুষ। বাম আমলে পরিকাঠামোর উন্নতি হয়নি। তৃণমূলের সময়ে মানুষ আশা করেছিলেন এ বার হয়তো হাসপাতালের খোল নলচে বদলাবে। বাস্তবে তা না হওয়ায় এলাকার মানুষ হতাশ।

ওটি (অপারেশন থিয়েটার) আছে। কিন্তু তাতে প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র নেই। ফলে সেখানে লাইগেশন ছাড়া আর কিছুই হয় না। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু ওটির ওই অবস্থা যে তা নয়, এখানে আলট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন নেই। এক্সরে মেশিন আছে। কিন্তু তা অকেজো। চিকিৎসকের সংখ্যা ৬ জন। তার মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মাত্র একজন। প্রসূতি ছাড়া আরও কোনও কিছুর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক তথা বাগদার বিএমওএইচ প্রণব মল্লিক বলেন, ‘‘ওই সব সমস্যা এবং ওটি চালুর বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে।’’

হাসপাতালে চালু হয়নি ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান। সাফাইকর্মী রয়েছেন মাত্র একজন। অভাব আছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরও। সরকারি ভাবে এখানে শয্যার সংখ্যা ৩০টি। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরও তিরিশটি শয্যার ব্যবস্থা করেছেন। রোগীর চাপ যখন বেশি থাকে তখন একই শয্যায় দু-তিন জনকে একসঙ্গে রাখতে হয়। হাসপাতালে নার্স চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের থাকার জন্য আছে ২২টি কোয়ার্টার। কিন্তু সেগুলি সবই বসবাসের অযোগ্য। দেওয়ালে শ্যাওলা পড়ে গিয়েছে। দরজা জানালা ভেঙে গিয়েছে। দ্রুত তা সংস্কার করা না হলে আর বসবাস করা যাবে না। বৃষ্টি হলে উপর থেকে জল পড়ে। এখানে যে মর্গটি রয়েছে সেখানে কোনও এসি নেই। ফলে দেহ বেশিদিন রাখা যায় না। বিদ্যুৎ না থাকলে একটি পুরনো জেনারেটর দিয়ে পরিষেবা দেওয়া হয় কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। ডাইরিয়া, আগুনে পোড়া রোগীর জন্য আলাদা কোনও ওয়ার্ড নেই। ফলে সব রোগীকে একসঙ্গে রাখতে হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ঘরটি খুবই ছোট। সেখানে একসঙ্গে কয়েক রোগী চলে এলে রোগী দেখতে সমস্যায় পড়েন চিকিৎসকেরা।

এখানকার মানুষকে চিকিৎসার জন্য রাত বিরেতে ছুটতে হয় প্রায় তিরিশ কিলোমিটার দূরে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে। তা ছাড়া ব্লক হাসপাতাল থেকেই রোগীদের বনগাঁ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ওই হাসপাতালে যাওয়া যথেষ্ট ব্যয়সাপেক্ষ। কিন্তু এ ছাড়া মানুষের আর কোনও উপায় নেই।

এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘ওই মহকুমা হাসপাতালে যেতে হলে গাড়ি ভাড়া দিতে হয় কম করে ছ’শো টাকা। যা দিয়ে যাতায়াত করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।’’ এক খেত মজুরের কথায়, ‘‘মহকুমা হাসপাতালে রোগী নিয়ে গেলে সেখানে থেকে চিকিৎসা করাতে হয়। রোজ অত টাকা খরচ করে যাওয়া আসা সম্ভব নয়। সে কারণে কাজকর্ম ছেড়ে থাকতে হয়।’’ বাগদা ব্লকে কোনও নার্সিংহোমও নেই। এলাকার মানুষের দাবি, অন্তত অপারেশন থিয়েটারে সিজার চালু করা হোক।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘অপারেশন থিয়েটারে সিজার বা অন্য অস্ত্রোপোচার শুরু করতে হলে চিকিৎসকের পাশপাশি অ্যানাসথেটিক প্রয়োজন। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর বিষয়টি জানে। চেষ্টা চলছে দ্রুত সিজার চালু করার।’’ অন্য সমস্যাগুলিও সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

Poor infrastructure Rural hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy