E-Paper

ওটিপি ঘিরে জট, সুন্দরবনের গ্রামে গ্যাস বিতরণে সমস্যা

প্রসেনজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৫ ০৯:২২
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

রান্নার গ্যাসের ডেলিভারিতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ওটিপি। কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা মেনে গ্যাস পৌঁছনোর পরে মোবাইলে পাঠানো ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) না মিললে ডেলিভারি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হচ্ছে না। আর সেখানেই জট তৈরি হয়েছে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চলে। গৃহস্থের হাতে মোবাইল নেই, বা থাকলেও ওটিপি বলতে নারাজ—এ মন নানা সমস্যায় বিপাকে পড়ছেন গ্যাস ডেলিভারি সংস্থাগুলি।

প্রশাসনের তরফে কালোবাজারি রুখতে রান্নার গ্যাস ডেলিভারিতে ওটিপি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সিলিন্ডার পৌঁছনোর পরে গ্রাহকের মোবাইলে আসা ওটিপি জানানোর পরেই মিলবে গ্যাস। শহরাঞ্চলে এই নিয়ম কার্যকর হলেও সুন্দরবনের নানা প্রান্তে তা কার্যত অচল। বাসন্তী এলাকার একাধিক গ্যাস ডেলিভারিকারীর অভিযোগ, অধিকাংশ বাড়িতে সিলিন্ডার পৌঁছনোর পর গৃহস্থ ওটিপি জানাতে চান না। কেউ বলেন, ওটিপি তো গোপন সংখ্যা, তা বলা যাবে না। কেউ বা সাফ বলেন, মোবাইল বাড়িতে নেই!

বাসন্তীর রান্নার গ্যাস ডেলিভারির কাজে যুক্ত কার্ত্তিক নাথ, বাদল মণ্ডল ও অনুপ জেলে বলেন, ‘‘সিলিন্ডার পৌঁছে দিলেই টাকা দিচ্ছেন সকলে। কিন্তু ওটিপি চাইলে কথা শুনতে হচ্ছে। কেউ বলেন, ওটিপি অন্য কাউকে দিতে মানা আছে, কেউ বলেন, তাঁরা জানেনই না ওটিপি এসেছে কিনা!’’

এই পরিস্থিতিতে বিপাকে স্থানীয় গ্যাস এজেন্সিগুলিও। বাসন্তীর সপ্তর্ষি গ্যাস এজেন্সির কর্তা শুভেন্দু মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘প্রতিদিনই ওটিপি নিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ওটিপি না পেলে গ্যাস কোম্পানির সিস্টেমে ডেলিভারির তথ্য নথিভুক্ত করা যাচ্ছে না। ফলে কোম্পানির কাছে আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে পড়ছে। এতে পরে অর্ডার অনুযায়ী গ্যাস পেতে সমস্যা হচ্ছে।’’

আরও বড় সমস্যা, এই নতুন প্রক্রিয়া সম্পর্কে গ্রামবাসীদের পর্যাপ্ত তথ্য নেই। সরকারের তরফে কোনও সচেতনতামূলক প্রচারও হয়নি বলে অভিযোগ। পশ্চিমবঙ্গ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল বলেন, ‘‘ওটিপি বললেই আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে গ্রামাঞ্চলে। তাই তার পরিবর্তে ডিএসি বা ডেলিভারি অ্যাকসেস কোড শব্দটি ব্যবহার করার ভাবনা চলছে।’’

ভারত গ্যাস অ্যাসোসিয়েশনের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি সুকমল কুমার সেন বলেন, ‘‘নতুন কোনও ব্যবস্থা চালু করতে গেলে প্রথম দিকে কিছু অসুবিধা হয়ই। গ্রামে মোবাইল না থাকা, গ্রাহকের অনীহা, প্রযুক্তি-অজ্ঞানতা— সব মিলে সমস্যা জটিল হয়েছে। দ্রুত এই জট কাটাতে আলোচনা চলছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Sundarbans

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy