উদ্ধার হওয়া গরু। নিজস্ব চিত্র।
ছাগল চুরি চক্রের পরে এ বার গাইঘাটায় হদিস মিলল বড়সড় একটি গরু চুরি চক্রের। গণপিটুনিতে জখম হয়েছে সন্দেহভাজন এক গরুচোর। মোট তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটার কাটাখালি গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, শাজাহান আলি নামে এক গরুচোর জনতার মারে জখম হয়েছে। বাকি দুই ধৃতের নাম গিয়াজউদ্দিন মোল্লা ও তাজিরুল মণ্ডল। তাদের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর ও ঠাকুরপুকুর এলাকায়। উদ্ধার হয়েছে হয়েছে একটি চুরি যাওয়া গরু। আটক করা হয়েছে দুষ্কৃতীদের একটি গাড়ি। ওই রাতেই চোরেরা প্রথমে স্থানীয় উত্তর চিকনপাড়ার বাসিন্দা বিমল দেবনাথের বাড়ি থেকে একটি গরু চুরি করেছিল। পরে অন্য জায়গায় ‘অ্যাকশন’ চালাতে গিয়ে ধরা পড়ে।
কী ভাবে চুরির ছক কষেছিল দুষ্কৃতীরা?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার তখন গভীর রাত। গোটা গ্রাম ঘুমিয়ে। একটি ছোট গাড়িতে এসে দুষ্কৃতীরা দু’টি দলে ভাগ হয়ে ঢুকে পড়ে গ্রামে। স্থানীয় ‘সোর্সের’ মাধ্যমে তাদের কাছে খবর ছিল। দুষ্কৃতীরা সোজা পৌঁছে যায় স্থানীয় বাসিন্দা সুশান্ত কপাট এবং কালীপদ মণ্ডলের বাড়িতে। তাদের গোয়াল থেকে গরু চুরি করতে গেলে গরুর ডাকে ঘুম ভাঙে গৃহস্থের। ঘর থেকে উঁকি মেরে এক গৃহকর্তা দেখতে পান, গোয়াল থেকে কারা যেন গরু বের করছে। তিনি মোবাইলে পাড়া প্রতিবেশীদের খবর দেন। দুষ্কৃতীদের বুঝতে না দিয়ে গ্রামবাসীরা গাছের গুঁড়ি, বাঁশ ফেলে রাস্তা আটকে রাখে।
চোরেরা বুঝতে পেরে গরু রেখে গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। গাছের গুড়ি ফেলে রাখায় একটা সময়ে গাড়ি ফেলেও দৌড় দেয়। জনা চারেক দুষ্কৃতী পালিয়ে গেলেও গ্রামবাসীরাও পিছু ধাওয়া করে একজনকে ধরে ফেলে। শুরু হয় গণধোলাই।
খবর পেয়ে গাইঘাটা থানার ওসি অনুপম চক্রবর্তী বাহিনী নিয়ে পৌঁছন। গ্রামবাসীরা ইতিমধ্যে দুষ্কৃতীদের গাড়িতে ভাঙচুর করেছে।পুলিশ জখম দুষ্কৃতীকে উদ্ধার করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে। ক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশও। পরে তল্লাশি চালিয়ে আরও দুই দুষ্কৃতীকে ধরে তারা।
ধৃতদের জেরা করে পুলিশের দাবি, পাঁচজনের গরু চোরদের ওই দলটি হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, নদিয়া ও দুই ২৪ পরগনায় ‘অপারেশন’ চালায়। বৃহস্পতিবার তারা সন্ধ্যার দিকে বিষ্ণুপুর থানার আমতলা থেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিল। গ্রামে যার গোয়াল বা ঘাটালে ঢুকে ‘অ্যাকশন’ চালানো হবে, তা আগে এসে দেখে যায় দুষ্কৃতীরা। কখনও স্থানীয় যুবকদেরও ‘সোর্স’ হিসাবে কাজে লাগানো হয়।
চুরি করা এক একটি গরু তারা ৫০-৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। পুলিশের দাবি, বাড়ির চুরি করা গরু অবশ্য বাংলাদেশে পাচার হয় না। স্থানীয় বাজারে তা বিক্রি করা হয়। অনুপমবাবু বলেন, ‘‘চক্রটি বড় মাপের। বাকি সদস্যদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy