Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Protest of residents

এক নার্সই সম্বল, ডাক্তার চেয়ে বিক্ষোভ

স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৫০ সাল নাগাদ মগরাহাট ১ ও ২ ব্লক মিলিয়ে প্রথম স্বাস্থ্যকেন্দ্র হিসেবে তৈরি হয়েছিল গোকর্ণি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি।

চিকিৎসক নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ।

চিকিৎসক নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ। ছবি: দিলীপ নস্কর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মগরাহাট শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪ ০৯:০৪
Share: Save:

বছর দুয়েক ধরে কোনও চিকিৎসক নেই। একজন নার্সই চালাচ্ছেন আস্ত একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। মগরাহাট ২ ব্লকের সেই গোকর্ণি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এ বার চিকিৎসক নিয়োগে দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ করলেন বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার সকালে গোকর্ণি যুগদিয়া হাসপাতাল জনস্বাস্থ্য রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে অবস্থান বিক্ষোভ হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে ঘণ্টাখানেক অবস্থান চলার পর বিক্ষোভ ওঠে।

স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৫০ সাল নাগাদ মগরাহাট ১ ও ২ ব্লক মিলিয়ে প্রথম স্বাস্থ্যকেন্দ্র হিসেবে তৈরি হয়েছিল গোকর্ণি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। প্রায় ৯ বিঘা জমির উপর ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছিল শয্যা, চিকিৎসকদের থাকার জন্য একাধিক আবাসনও। সংখ্যালঘু প্রধান গোকর্ণি ও যুগদিয়া দুই পঞ্চায়েত এলাকার বহু বাসিন্দা ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপর নির্ভর করতেন। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, দিন যত এগিয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল দশা দিনে দিনে বেড়েছে।

স্থানীয়দের ক্ষোভ, চিকিৎসক না থাকার পাশাপাশি পানীয় জল ও শৌচাগারের সমস্যা রয়েছে এখানে। চিকিৎসকের আবাসনগুলি এখন পোড়ো ভাঙা বাড়ি। চারদিকে ঠিকঠাক পাঁচিলও নেই। একমাত্র ফার্মাসিস্ট ছিলেন, তিনি মাস ছ’য়েক আগে চলে গিয়েছেন। এখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছেন এক জন নার্স ও অস্থায়ী কয়েকজন কর্মী। এই পরিস্থিতিতে এলাকার বাসিন্দারা স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে গোকর্ণি যুগদিয়া হাসপাতাল জনস্বাস্থ্য রক্ষা কমিটি গড়ে হাসপাতালের হাল ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থায়ী চিকিৎসক নিয়োগ ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হাল ফেরানোর দাবিতে কমিটির পক্ষ থেকে গত মাসে বিডিও (মগরাহাট ২) ও ব্লক মেডিক্যাল অফিসারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তাতেও কোনও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে আজ সকালে শ’খানেক পুরুষ মহিলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন বলে কমিটির সদস্যদের দাবি।

এ দিন আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন কমিটির সম্পাদক কবীর মোল্লা। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে দেড়শো থেকে দু’শো রোগী আসেন। অথচ দীর্ঘ দু’বছর কোনও চিকিৎসক নেই। চিকিৎসক নিয়োগের দাবিতে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি।’’ তাঁর ক্ষোভ, ‘‘নির্বাচনের সময় সব দলের নেতারা এই হাসপাতাল মোড়ে সভা করেন। নেতাদের প্রথম প্রতিশ্রুতি হয় হাসপাতালে ডাক্তার নিয়োগ করে উন্নয়ন করা হবে। নেতারা যত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ততই হাসপাতালের অবনতি হচ্ছে।’’ কমিটির আরও অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জমি ফাঁকা পড়ে থাকায় বেদখল হয়ে যাচ্ছে।

ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যে চিকিৎসকের সঙ্কট সত্যিই রয়েছে তা স্বীকার করা হয়েছে ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলা প্রশাসন সূত্রে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘অনেকে এমডি করতে চলে যাচ্ছেন। তবে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মগরাহাট গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই চিকিৎসক যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Magrahat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE