Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Odhiopfhobia

সাপের আতঙ্কে দিশেহারা অশোকনগরের কয়াডাঙার বাসিন্দারা

সাপের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন শতাধিক পরিবার। পরিস্থিতি এমন যে এলাকা লকডাউনের মতোই শুনশান।

ধরা হচ্ছে সাপ। নিজস্ব চিত্র।

ধরা হচ্ছে সাপ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
অশোকনগর শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৭:২৭
Share: Save:

সাপের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন শতাধিক পরিবার। পরিস্থিতি এমন যে এলাকা লকডাউনের মতোই শুনশান। খেলার মাঠে ছেলেমেয়েরা নেই। স্কুল এমনিতেই বন্ধ। যে কোনও মুহূর্তে বিষাক্ত সাপের দেখা মিলছে এলাকায়। তাই ঘর থেকে বাইরে যাওয়ার সাহস দেখাচ্ছেন না স্থানীয় মানুষজন।

দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে সাপের আতঙ্কে ওষ্ঠাগত উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের নীচু কয়াডাঙা এলাকার শতাধিক পরিবার। সকাল, সন্ধ্যা, রাত— সব সময়ের জন্য এলাকা জুড়ে বিষধর সাপের আনাগোনা। মূলত গোখরো সাপেরই দেখা মিলছে। বিজ্ঞান মঞ্চের লোকেরা এসে সাপ ধরে জঙ্গলে দিয়ে আসছেন।

কয়াডাঙা এলাকার বাগানবাড়ির মধ্যে একটাই ছোট খেলার মাঠ রয়েছে। কিন্তু সাপের ভয়ে সেই খেলার মাঠেও একরাশ শূণ্যতা। নেই ছোটদের চেঁচামেচি। নেই কোনও হইচই। করোনা অতিমারির জন্য একে তো স্কুল বন্ধ, তার উপর সাপের আতঙ্কে খেলার মাঠে না যেতে পাড়ায় এক প্রকার হাঁপিয়ে উঠেছে স্কুল পড়ুয়ারা। অশোকনগরের এই গ্রামে ঘুরলে এখনও মনে হবে এলাকা জুড়ে পূর্ণ লকডাউন চলছে। কারণ একটাই সাপের ভয়! এর মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই গ্রামেরই একটি বাড়ি থেকে পূর্ণবয়ষ্ক একটি গোখরো সাপ উদ্ধার হয়।

ভারতীয় যুক্তিবাদী সমিতির অন্যতম সদস্য সাপ উদ্ধারকারী ব্যক্তি দীপক চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘এলাকায় বেশ কিছু গোখরো সাপ দেখা যাচ্ছে। ওই সাপ বিষধর। যে ভাবে ঘরের মধ্যে ঢুকে আছে তা আতঙ্কের। তবে ওদের গায়ে আঘাত না করলে ওরা ততটা ভয়ঙ্কর হবে না।’’ অশোকনগরের নিচু কয়াডাঙা এলাকার বাসিন্দা আশিস দাস বলেছেন, এক ব্যক্তির বাড়িতে প্রতিবেশী নমিতা বিশ্বাস বিষধর সাপটি দেখতে পান। তখন ওই ব্যক্তির ছেলে কৌশিক দাস ঘরের মধ্যে ছিলেন । কোনক্রমে ঘর থেকে বেরোতে সক্ষম হন। ‘সাপ সমস্যা ও প্রতিকার’ নামে সংস্থার কর্মীরা এসে সাপটিকে উদ্ধার করেল পরে সেটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়। এলাকার বাসিন্দা রূপালী মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘সাপের আতঙ্কে বাড়ির ছোটদের নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। এমনকি ঘরের মধ্যেও সব সময় সাপের আতঙ্ক মনের মধ্যে কাজ করে। যেখানেই যাই মনে হয় এই বুঝি সাপ এল।’’ স্কুল পড়ুয়া প্রতীপ মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ। মাঠে খেলাধুলাও করতে পারছি না। ভীষণ মন খারাপ লাগছে।’’

ষাটোর্ধ্ব রঞ্জন দাস নামে এক ব্যক্তিকে এই পাড়ায় বিষধর সাপ কামড়েছিল, সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসায় হাওয়া তে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। স্থানীয় মানুষের দাবি অবিলম্বে প্রশাসন বনদপ্তরকে সঙ্গে নিয়ে সাপের আতঙ্ক থেকে কয়রাডাঙ্গার বাসিন্দাদের মুক্ত করুক। খেলাধুলার মধ্যে দিয়ে ফিরে পাক শিশুদের হাড়িয়ে যাওয়া শৈশব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ashokenagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE