Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

টুকলিতে বাধা, শিক্ষককে হেনস্থা

টুকলি করতে বাধা দিয়েছিলেন মাস্টারমশাই। যার জেরে কিছু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী হেনস্থা করে তাঁকে। বৃহস্পতিবার স্কুলে আসার পথে তাড়া করে। গালিগালাজ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে স্কুলে পৌঁছে দেয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৭ ০১:১১
Share: Save:

টুকলি করতে বাধা দিয়েছিলেন মাস্টারমশাই। যার জেরে কিছু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী হেনস্থা করে তাঁকে। বৃহস্পতিবার স্কুলে আসার পথে তাড়া করে। গালিগালাজ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে স্কুলে পৌঁছে দেয়। পুলিশকে ঘটনার কথা জানালেও ছাত্রদের কারও নামে অভিযোগ করেননি ওই শিক্ষক। অল্পবয়সী ছাত্রদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি, জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

শ্যামনগর কাউগাছির স্বামী বিবেকানন্দ হাইস্কুলে ইতিহাস পড়ান অসিতেশ বসু। জগদ্দলের একটি উর্দু মাধ্যম স্কুলের মাধ্যমিকের সিট পড়েছে তাঁর স্কুলে। অসিতেশবাবু বলেন, ‘‘শুরুর দিন থেকেই কিছু ছেলে বই-খাতা খুলে পরীক্ষা দিতে চাইছিল। তাতে আপত্তি করায় এ ভাবে বদলা নিল।’’

কী পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছিল অসিতেশবাবুকে?

এ দিন সকালে শ্যামনগর স্টেশনে নামেন নদিয়ার হরিণঘাটার বাসিন্দা ওই শিক্ষক। সেখানেই জটলা পাকিয়েছিল কিছু পরীক্ষার্থী। অভিযোগ, অসিতেশবাবুকে গালিগালাজ করে তারা। পরীক্ষায় কড়া নজরদারি চালালে প্রাণে মারার হুমকিও দেয়। ওই শিক্ষকের পিছু নেয় ছেলেরা। আতঙ্কিত অসিতেশবাবু একটি দোকানে খানিকক্ষণ আশ্রয় নেন। তারপরে পাশের গ্যারাজ থেকে সাইকেল নিয়ে স্কুলের দিকে এগোন। ছেলেরা ফের তাঁর পিছু ধাওয়া করে। এ বার সাইকেল ফেলে একটি খাবারের দোকানে পর্দার আড়ালে ঢুকে পড়েন ওই শিক্ষক। তিনি জানান, তাঁকে পর্দার আড়ালে লুকোতে দেখে লোকজন ধরে নেয়, তিনি চুরি করে পালাচ্ছেন। উল্টে দোকানের লোকজনও হম্বিতম্বি শুরু করে। নিজের পরিচয় দিয়ে কোনও মতে সেই পরিস্থিতি এড়ান অসিতেশবাবু।

পুলিশে খবর যায়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কালীরেণু রায়চৌধুরীও অসিতেশবাবুর ফোন পেয়ে এক শিক্ষককে পাঠান। পুলিশ এসে অসিতেশবাবুকে মোটরবাইকে চাপিয়ে স্কুলে পৌঁছে দেয়।

আজ, শুক্রবারও পরীক্ষা আছে। ছাত্রদের আচরণে ভয় পেলেও নিজের দায়িত্ব থেকে সরতে নারাজ অসিতেশবাবু। তিনি বলেন, ‘‘যে পরিস্থিতিই আসুক, নিজের বিবেকের কাছে মাথা নিচু করতে পারব না।’’

কালীরেণুবাবু বলেন, ‘‘ছাত্র বলেই তাদের নামে এফআইআর করেননি উনি। আমরা ওঁর স্কুলে আসা-যাওয়ার সময়ে পুলিশের সহায়তা চেয়েছি।’’ ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাদা পোশাকের পুলিশ নজর রাখবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Harrasement
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE