Advertisement
E-Paper

কাঠির আমদানি বন্ধ, সমস্যা ধুপকাঠি শিল্পে

ধূপকাঠি তৈরির অন্যতম উপাদান বাঁশের তৈরি কাঠি।

প্রসেনজিৎ সাহা 

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২০ ০৩:০২
এই কাঠির জোগান কমার ফলেই সমস্যা। নিজস্ব চিত্র

এই কাঠির জোগান কমার ফলেই সমস্যা। নিজস্ব চিত্র

করোনাভাইরাসের জেরে চিন থেকে বাঁশ কাঠির রফতানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর জেরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ধূপকাঠি শিল্প। বন্ধ হওয়ার মুখে বহু কারখানা।

বারুইপুর, ক্যানিং, জয়নগর, ভাঙড়, সোনারপুর-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে শতাধিক ধূপকাঠি তৈরির কারখানা। জেলার ক্ষুদ্র শিল্পগুলির মধ্যে অন্যতম এই শিল্প। এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় মালিক-শ্রমিক মিলিয়ে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ।

ধূপকাঠি তৈরির অন্যতম উপাদান বাঁশের তৈরি কাঠি। ধূপকাঠি ব্যবসায়ীরা জানান, দাম কম এবং গুণমান ভাল হওয়ায় চিন থেকেই মূলত বাঁশকাঠি আমদানি করা হয়। আগে ভিয়েতনাম থেকেও কাঠি আসত। কিন্তু সেই কাঠির গুণমান ভাল নয়। তা ছাড়া, ভিয়েতনাম থেকে বাঁশকাঠি আমদানির উপরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিধিনিষেধও রয়েছে। উত্তর পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে এই বাঁশকাঠি তৈরি হয়। কিন্তু ধূপকাঠি ব্যবসায়ীদের দাবি, উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যগুলির তৈরি বাঁশকাঠির দাম অনেক বেশি। ফলে লাভের অঙ্ক অনেকটাই কমে যায়। সব দিক থেকে বিচার করে চিনের তৈরি কাঠিই ব্যবহার করেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী।

কিন্তু করেনাভাইরাসের প্রকোপের জেরে বাঁশকাঠির রফতানি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে চিন। ফলে সমস্যায় পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, কিছু কিছু আমদানিকারী সংস্থা প্রচুর পরিমাণে চিনা কাঠি মজুত করে রেখেছেন। রফতানি বন্ধের সুযোগ নিয়ে তারা এখন চড়া দাম হাঁকছেন। কেজি প্রতি ১১০ টাকা দামের কাঠি এখন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। ফলে উৎপাদন খরচ অনেকখানি বেড়ে গিয়েছে। ক্ষতি সামাল দিতে অনেকেই ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছেন। ধূপকাঠি কারখানার মালিক সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কাঠির জোগান না থাকায় ব্যবসায় খুবই সমস্যা চলছে। উৎপাদন না হওয়ায় অনেকেই কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছেন।’’

সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে চিঠি লিখেছেন এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা। প্রশাসন সূত্রে খবর, এ রাজ্যেও যাতে কম দামে ভাল মানের বাঁশকাঠি উৎপাদন করা যায় সে দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। কোচবিহারে এক সময়ে প্রচুর বাঁশকাঠি তৈরি হতো। ইতিমধ্যে কোচবিহার জেলা প্রশাসনের তরফে সেই জেলায় বাঁশকাঠি তৈরির কারখানাগুলি পুনরায় খোলার চিন্তাভাবনা চলছে। বারুইপুর আগরবাতি ক্লাস্টারের সম্পাদক আশুতোষ দাস বলেন, “চিন থেকে কাঠি আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ধূপকাঠি শিল্প বড় সমস্যায় পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে আমাদের রাজ্যেই বাঁশকাঠি উৎপাদনের জন্য কোচবিহার জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি জেলাশাসকের দফতরে এ ব্যাপারে একটি বৈঠকে আমরা যোগ দিই। সেখানে বন্ধ হয়ে থাকা দশটি ইউনিটকে খোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’

তবে আপাতত সমস্যার সমাধান কোথায়, এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারছে না কোনও পক্ষই।

Coronavirus China
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy