E-Paper

টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে সঞ্চয় করছে খুদে পড়ুয়ারা

স্কুল সূত্রের খবর, প্রত্যন্ত এলাকার এই স্কুলটিতে এখানে প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৯১ জন পড়ুয়া রয়েছে। প্রধান শিক্ষক সহ শিক্ষক-শিক্ষিকা ৬ জন।

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:১৩
নিজেদের জমানো টাকা হাতে ছোটরা।

নিজেদের জমানো টাকা হাতে ছোটরা। নিজস্ব চিত্র।

স্কুলের আলমারিরে সার দেওয়া নানা মাপের কৌটো। সেগুলি ভরেছে ১, ২, বা ৫ টাকার কয়েনে। কৌটোর গায়ে লাগানো কাগজে লেখা রয়েছে সুমনা, দীপশিখা রেবেকা, আফসানাদের নাম ও ঠিকানা। সকলেই রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের বকুলতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ার। স্কুল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ছোট ছোট পড়ুয়ারাই টিফিনের খরচ বাঁচিয়ে নিজেদের জন্য গড়ে তুলেছে সঞ্চয়। নানা প্রয়োজনে এখান থেকে টাকাও তুলেও নিতে পারে তারা।

স্কুল সূত্রের খবর, প্রত্যন্ত এলাকার এই স্কুলটিতে এখানে প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৯১ জন পড়ুয়া রয়েছে। প্রধান শিক্ষক সহ শিক্ষক-শিক্ষিকা ৬ জন। অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী গরিব দিনমজুর পরিবারের। আর্থিক সঙ্কট তাদের নিত্যসঙ্গী। স্কুলে শিক্ষামূলক ভ্রমণের আয়োজন করা হলেও বেশিরভাগ পড়ুয়া যোগ দিতে পারত না। সে কথা মাথায় রেখেই শুরু হয় সঞ্চয়ের উদ্যোগ।

এর সুফল মিলেছে স্কুলে। স্কুল কর্তৃপক্ষে জানান, আগে প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে বড় স্কুলে গেলে বইখাতা মিলিয়ে প্রায় ৫০০ টাকা প্রয়োজন হত। অনেক পরিবারেই একবারে এই টাকা দেওয়া সম্ভব হত না। তখন নিজেদের সঞ্চয়ের টাকা কাজে লাগাত পড়ুয়ারা।

বর্তমানে পড়ুয়ারা সরকার থেকে বই, খাতা, পোশাক সবই পায়। এখন মূলত শিক্ষামূলক ভ্রমণের খরচ জোগাড় ও পড়ুয়াদের মধ্যে সঞ্চয়ের মানসিকতা গড়ে তুলতে ফের এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক।

তিনি আর জানান, প্রায় আট মাস ধরে নিজেদের কৌটোয় টাকা জমাচ্ছে খুদে পড়ুয়ারা। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সুমনা পাইক ইতিমধ্যে ২৫০ টাকা জমিয়ে ফেলেছে। সে বলে, ‘‘বাবা দিনমজুরের কাজ করেন। সব সময়ে হাতে কাজ থাকে না। নিজের বেড়াতে যাওয়ার জন্য ওই টাকা জমালেও বাবা-মায়ের কোনও প্রয়োজন হলে আমি এখান থেকে সাহায্য করব।’’ আরও অনেকেই ইতিমধ্যে ১০০-২০০ টাকা জমিয়ে ফেলেছে। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘যারা একটু বেশি টাকা জমাতে পেরেছে, তাদের আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে। কারণ তারা বুঝেছে, পেনসিল-রবার বা মেলায় টুকটাক শখের জিনিস কিনতে তাদের আর কারও কাছে হাত পাততে হবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Primary School

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy