গরম বাড়তেই পানীয় জলের চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে গোসাবার গ্রামে। দীর্ঘক্ষণ জলের জন্য টাইম কলের সামনে লাইন দিতে হচ্ছে মানুষকে। এখনও পর্যন্ত জলস্বপ্ন প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তাঁরা।
এমনিতেই গোসাবা দ্বীপে পানীয় জলের সমস্যা সেই শুরুর দিন থেকেই। ভূগর্ভে পানীয় জলের স্তর না থাকার কারণে জল পেতে সমস্যা হয় তাঁদের। ফলে এলাকায় কোনও গভীর নলকূপ নেই। এই পরিস্থিতিতে গোসাবার রাঙাবেলিয়া, পাখিরালয়, আরামপুর-সহ আশপাশের এলাকায় খালের জল পরিস্রুত করে পাইপের মাধ্যমে এলাকায় এলাকায় পাঠানো হয়। দিনে তিন বার এই জল দেওয়া হয়। অন্য দিকে, গোসাবার সোনাগাঁ, দুলকি, পাখিরালয় এলাকাতেও পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল পৌঁছে দেওয়া হয়। এই জল আসে বালি দ্বীপ থেকে।
কিন্তু গরম বাড়তে যে পরিমাণ জলের চাহিদা বেড়েছে, সেই পরিমাণ জোগান তাঁরা পাচ্ছেন না বলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ইদানীং জল কম সময় ধরে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁদের।
স্থানীয় বাসিন্দা সুভাষ জানা, নীলিমা মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘আমাদের পানীয় জলের সমস্যা দীর্ঘ দিনের। যে জল দেওয়া হয়, তা দিয়ে গৃহস্থালির কাজকর্ম চালাই। পান করার জন্য বোতলবন্দি জলই ভরসা। এখন তো পাইপ লাইনের জলও অল্প সময়ের জন্য দিচ্ছে। কোনও কোনও সময়ে জল বন্ধও থাকছে। তখন চরম সমস্যা দেখা দিচ্ছে। জানি না, এই সমস্যা কবে মিটবে।’’
এ দিকে, গরম পড়তেই ২০ লিটারের জলের জারের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এলাকার বাসিন্দা সুতপা সর্দার বলেন, ‘‘আগে যে জল ৩০ টাকায় কিনতাম, সেই জল এখন জার প্রতি ১০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
গোসাবার বিডিও বিশ্বরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘গোসাবা ব্লকের অন্যান্য দ্বীপে জলের সমস্যা সে ভাবে না থাকলেও গোসাবা দ্বীপে জলের সমস্যা রয়েছে। তবে সরকারি ভাবে জল দেওয়া হচ্ছে। যাতে এলাকাবাসীর সমস্যা না হয়, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।’’ ক্যানিং মহকুমা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিক প্রণবকুমার সাফুঁই বলেন, ‘‘গোসাবা ও পাঠানখালি দ্বীপে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকায় গভীর নলকূপ খনন করা সম্ভব নয়। তবুও আমরা পাইপ লাইনের মাধ্যমে জলের সমস্যা দূর করার চেষ্টা করছি। জলস্বপ্ন প্রকল্পের কাজও দ্রুতগতিতে চলছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)