Advertisement
E-Paper

৩ হাজার টাকার চাকরি করতে গিয়েই গেল প্রাণ

পঁচিশ বছর ধরে ভাঙড় বাজারে নৈশপ্রহরীর কাজ করতেন সহিদ। ছোট ভাই মোক্তার আলি মোল্লাও দাদার সঙ্গে একই কাজ করেন।

সামসুল হুদা 

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:৪৬
সহিদ মোল্লা

সহিদ মোল্লা

নৈশপ্রহরীর কাজ করে মাসে হাজার তিনেক টাকা পেতেন সহিদ মোল্লা। আর সেই কাজ করতে গিয়েই প্রাণ হারাতে হল দুষ্কৃতীদের হাতে।

পঁচিশ বছর ধরে ভাঙড় বাজারে নৈশপ্রহরীর কাজ করতেন সহিদ। ছোট ভাই মোক্তার আলি মোল্লাও দাদার সঙ্গে একই কাজ করেন। রবিবার রাতে সহিদ ভাঙড় বাজারের সোনাপট্টিতে পাহারা দিচ্ছিলেন। মোক্তার থানার সামনে বাজারে ছিলেন। ১০-১২ জনের ডাকাত দল সোনাপট্টিতে ঢোকে। তাদের বাধা দিতে গিয়েই মারা গিয়েছেন সহিদ।

পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন সকলে। সহিদের স্ত্রী রিজিয়া বিবি আর পাঁচ মেয়ের চোখে জল। বড় মেয়ে কামরুন নাহার বিবি ও সেজো মেয়ে আনোয়ারা বিবি বিবাহিতা। বাকি তিন মেয়ের মধ্যে মনোয়ারা খাতুন বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী। টাকার অভাবে সম্প্রতি পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছেন। ফরিদা খাতুন নামে সেজো মেয়ে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। ছোট মেয়ে ফরিদা পড়ছে নবম শ্রেণিতে।

অভাবের সংসারে নৈশপ্রহরীর কাজ ছাড়াও দিনের বেলা মাঝে মধ্যে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতেন সহিদ। মেয়েরাও বাবাকে সহযোগিতা করতে কখনও কখনও জরির কাজ করত। ইটের দেওয়ালের এক চিলতে বাড়িটুকুই সম্বল। জমি-জায়গা নেই।

পরিবার সূত্রে জানা গেল, মাঝে অসুস্থতার কারণে নৈশপ্রহরীর কাজ ছেড়ে দেন সহিদ। কয়েক মাস আগে হার্নিয়া অপারেশন হয়। অসুস্থতার জন্য সংসার আরও সমস্যায় পড়ে। বাধ্য হয়ে সামান্য টাকার জন্য নৈশপ্রহরীর কাজে যোগ দেন সহিদ।

সোমবার সকালে বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, রিজিয়া বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন। মেয়েরা কোনও রকমে মাকে সামলানোর চেষ্টা করছেন। রিজিয়া বলেন, ‘‘আমি অনেকবার বলেছিলাম, তোমার শরীর খারাপ। রাত জেগে কাজ করার দরকার নেই। আমাকে বলতেন, কাজ না করলে সংসার যে আর চলে না!’’

ভাঙড় ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ কাইজার আহমেদ বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমাদের তরফ থেকে এবং ব্যবসায়ী সমিতির তরফ থেকে সব রকম ভাবে পরিবারটির পাশে থেকে সহযোগিতা করব। কী ভাবে ওঁদের আর্থিক সাহায্য করা যায়, তা দেখা হচ্ছে।’’

Dacoity Murder Bhangar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy