Advertisement
E-Paper

দিলীপের সভায় শান্তনুর গরহাজিরা নিয়ে জল্পনা 

মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নাগরিকত্ব আইনও পাস হয়েছে সাংসদে।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২০ ০৩:০০
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

এক বছরের মধ্যে সমস্ত হিন্দু উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শুক্রবার গোপালনগরে সভা করেন তিনি। মতুয়াদের বড় অংশই উদ্বাস্তু। ফলে দিলীপের ঘোষণায় তাঁরা খুশি। তবে রাজ্য বিজেপি সভাপতির সভায় বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের অনুপস্থিতি এখন স্থানীয় মানুষের জল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তবে কি সাংসদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে দলের নেতৃত্বের, উঠছে সে প্রশ্ন। শান্তনু নিজে অবশ্য দাবি করছেন, দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়েনি।

মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নাগরিকত্ব আইনও পাস হয়েছে সাংসদে। কিন্তু তা এখনও প্রয়োগ না হওয়ায় মতুয়াদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ আছে। বিজেপির বনগাঁর সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের যুগ্ম সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর এ নিয়ে ক্ষোভ গোপনও করছেন না ইদানীং। আইন চালু করা নিয়ে মতুয়াদের চাপ আছে শান্তনুর উপরে।

দিলীপের সভায় শুক্রবার তাঁর অনুপস্থিতি চোখে পড়েছে অনেকেরই। শান্তনু পরে বলেন, ‘‘এ দিনের জনসভা সম্পর্কে আমি জানতাম না।’’ বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘এ দিনের কর্মসূচি সম্পর্কে সাংসদ-বিধায়কদের জানানো হয়েছিল।’’

শুধু দিলীপের সভাই নয়, গত কয়েক মাস ধরে দলের কিছু কর্মসূচিতেও শান্তনুকে দেখা যায়নি। তাঁর ঘনিষ্ঠদের একাংশ জানাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাবেন বলে আশা করেছিলেন শান্তনু। দলের অন্দরে সেই গুঞ্জন উঠেছিল। কিন্তু তেমন কিছু ঘটেনি। তা ছাড়া, দলের রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গেও শান্তনুর দূরত্ব বেড়েছে নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ না হওয়া নিয়ে। স্থানীয় নেতাদের একাংশ তাঁকে ব্রাত্য রেখে দলের কর্মসূচি পালন করছেন ইদানীং।

দিলীপ বৃহস্পতিবার রাতে বনগাঁ শহরে এসে সরকারি বাংলোয় রাতে ছিলেন। প্রাতর্ভ্রমণে বেরোন শুক্রবার। সেখানেও ছিলেন না শান্তনু। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে দিলীপের প্রতিক্রিয়া, ‘‘উনি (শান্তনু) তো মতুয়াদের নেতা, সঙ্ঘাধিপতি। স্বাভাবিক ভাবেই উনি ওঁর কমিউনিটির কাজ করছেন। পার্টির মিটিং যখন হয় সাংসদদের, তখন উনি আসেন। ভোট আসছে, আবার লাগবেন কাজে।’’

তবে মতুয়াদের ক্ষোভের কথা অস্বীকার করছে না দলের একাংশ। সে জন্যই মঞ্চে দাঁড়িয়ে দলের রাজ্য সভাপতিকে এক বছরের মধ্যে মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার অঙ্গীকার করতে হল বলে মনে করছেন তাঁরা। যদিও আগামী ছ’আট মাসের মধ্যে এ রাজ্যে বিধানসভা ভোট মিটে গেলে এই প্রতিশ্রুতির মূল্য ইভিএমে কতটা পৌঁছবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন দলের জেলা নেতৃত্বের কেউ কেউ।

শুক্রবার সভায় মতুয়া ভক্তদের ভিড় দেখা যায়নি। তবে এমনিতে ভিড় হয়েছিল ভালই। বিজেপি নেতৃত্ব দলীয় কর্মী-সমর্থকদের আনতেই বেশি তৎপর ছিলেন। দলীয় সংগঠন মজবুত করতে সম্প্রতি বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসকে দলের বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি করা হয়েছে। মূলত তাঁর নেতৃত্বে শুক্রবারের সভায় লোকজন এসেছিলেন। বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘প্রায় ১২ হাজার মানুষ সভায় এসেছিলেন। বেশির ভাগই দলের কর্মী-সমর্থক।’’

শান্তনু সভায় না থাকলেও সভায় ভিড় দেখে বিজেপি নেতৃত্বও খুশি।

অন্য দিকে, তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর বলেন, ‘‘মতুয়ারা এ দেশের ভোটার। তাঁরা ইতিমধ্যেই এ দেশের নাগরিক।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী উদ্বাস্তুদের পাট্টা বিলির প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। পাট্টা পাওয়া মানেই নাগরিকত্ব পাওয়া।’’

Dilip Ghosh Shantanu Thakur BJP Lok Sabha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy